২০১৩ সালের নাশকতা : ২ মামলায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মীর দণ্ড

আগের সংবাদ

কত আসন ছাড়বে আ.লীগ : সর্বোচ্চ ৮০টি আসনে ছাড় > ৩০ আসন পাবে ১৪ দল > চূড়ান্ত সমঝোতা শেষমুহূর্তে

পরের সংবাদ

শীত এলেও ডেঙ্গু গেল না : সমন্বিত কার্যক্রমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শীত বাড়লে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার দাপট কমবে। এমন ধারণা ছিল চিকিৎসকদের। কিন্তু তার উল্টোচিত্র দেখছি। প্রতিদিন দেড় থেকে ২ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ডেঙ্গুতে নিয়মিত মৃত্যুও হচ্ছে। চলতি বছর এডিস মশাবাহিত এই রোগে মারা গেলেন ১ হাজার ৫৬২ জন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ লাখ ৬ হাজার ৪২ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯৪ জন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমে এলেও গত বছরের তুলনায় তা এখনো বেশি। এই পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়ছে। এ বছর ঢাকা শহরের চেয়ে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, এমন এর আগে কখনো হয়নি। বৃষ্টির মৌসুমে অর্থাৎ জুন থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। আর তা সেপ্টেম্বরের দিকে কমে আসে। অন্য বছরগুলোতে আমরা এমনটাই দেখে আসছি। তবে এ বছর নভেম্বর মাস শেষ হতে চলেছে। এরপরও ডেঙ্গুর দাপট কমছে না। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানীতে। সুস্থ হওয়ার তুলনায় আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতি মুহূর্তেই চাপ বাড়ছে হাসপাতালে। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। এখনো ডেঙ্গুজ্বরের কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গু মশা ছড়িয়ে পড়েছে। সেজন্য শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও মানুষকে সচেতন করতে হবে এবং মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্যমতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। তবে এবার ভয়াবহ হতে পারে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গু প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় সব এলাকাতেই এবার এডিস মশার উপস্থিতি অনেক বেশি। এমনকি ২০১৯ সালের তুলনায় তা দ্বিগুণ। ২০১৯ সালে দুই সিটির ২১টি ওয়ার্ডকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হলেও এবার সেটি ৫৫টি ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকা দুটি সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মাঠে আছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি আমাদেরও সচেতন হওয়া জরুরি- ডেঙ্গুর উৎস এডিস মশার প্রজননক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করা। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে বাড়ির আঙিনা, ছাদ বা বারান্দায় পানি জমে না থাকে। এ বিষয়ে নাগরিক ও সিটি করপোরেশন উভয়েরই দায়িত্ব আছে। নাগরিকদের মনে রাখতে হবে, একজনের অবহেলা অনেকের ক্ষতি, এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আবার আক্রান্ত হলেও যথাসময়ে তাকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাফিলতির কোনো অবকাশ নেই। একদিনে বা এক বছরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। দীর্ঘ চেষ্টায় আমরা হয়তো ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। এজন্য দেশব্যাপী সমন্বিত কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়