ডিবিতে অভিনেত্রী তিশার অভিযোগ : লুবাবার অভিযোগকারী আটক

আগের সংবাদ

সমঝোতা হলে পুনঃতফসিল : সুযোগ আছে সংবিধানে > আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের > সিদ্ধান্ত নিতে হবে ১০ দিনের মধ্যেই

পরের সংবাদ

হরতাল-অবরোধের নামে পরিবহন ধ্বংস নয়

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের গত ২৪ দিনে ১৯৭টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মিনিবাস-ট্রাকসহ মোট ৩৭০টি পরিবহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে ৩৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে গতকাল প্রকাশিত ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত আগুনের ঘটনার তথ্য এটি। যানবাহনে অগ্নিসংযোগের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়। বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, পিকআপ দুষ্কৃতকারীদের মূল টার্গেটে পরিণত রয়েছে। বিষয়টি দেশের জন্য শঙ্কার। সারাদেশে পরিবহন খাতে মোট শ্রমিকের সংখ্যা এ মুহূর্তে প্রায় ৩০ লাখ। গাড়ি বন্ধ থাকা মানে তাদের আয়ের পথ বন্ধ। এতগুলো পরিবার কীভাবে বেঁচে থাকবে, তা ভাবনার বিষয়। হরতাল ও অবরোধে সহিংতা ও নাশকতায় পরিবহন খাতে দৈনিক প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পরিবহন মালিকরা। তারা বলছেন, কর্মসূচিগুলোতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতি এবং রাস্তায় গাড়ি নামাতে না পারায় তারা এমনকি ব্যাংক ঋণের কিস্তিও শোধ করতে পারছেন না। পরিস্থিতি এ রকম চলতে থাকলে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।শুধু পরিবহন খাত নয়, টানা অবরোধ ও হরতালের প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগুনে মানুষের সঙ্গে পুড়ছে অর্থনীতিও। টানা অবরোধ ও হরতালে পরিবহন, কৃষি, পোশাক ও উৎপাদন শিল্পসহ অন্য খাতগুলোর ক্ষতি দিন দিন বাড়ছে। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিল্পের উৎপাদন। অবরোধের নামে মানুষ হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপি-জামায়াত হিংস্র মনোবৃত্তির পুনঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে কি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের কৌশল বা উপাদান হতে পারে? সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। মানুষকে চলাফেরা করতে হচ্ছে প্রাণ হাতে নিয়ে। স্বাধীনতাবিরোধীদের মাঠে নিয়ে আবারো হত্যার খেলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা শুরু করেছে। সাধারণ জনগণ এমন কর্মকাণ্ড কখনো সমর্থন করে না। মানুষ এ শঙ্কা থেকে মুক্তি চায়। বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে যাবে না। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সামনে অগ্রসর হতে চায়। সন্ত্রাস দ্বারা মানুষের সমর্থন জয় করা যায় না। বরং মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়া হয়। অতীতে বিএনপি তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পরিণতি থেকে কোনো শিক্ষাই নেয়নি? ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি জোটের ভয়াবহ সন্ত্রাসের রাজত্ব কেউ ভোলেনি। তখন শত শত যানবাহন পুড়িয়ে দেয়া হয়। পেট্রল বোমার আঘাতে দগ্ধ মানুষের আহাজারিতে হাসপাতালগুলোর বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। পবিত্র উপাসনালয় মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জায়ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি লাখ লাখ গাছও। ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জোট আগুন-সন্ত্রাসের খেলায় মেতে উঠেছে। নাশকতা-নৃশংসতা কোনো রাজনৈতিক আচরণ নয়, নিজেদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করতে হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পন্থায়। ভুলে যাওয়া চলবে না- সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে কোনো রাজনৈতিক দল নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি ঘোষণা ও পালন করতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকারকে লক্ষ রাখতে হবে মানুষের জীবনমান যেন শঙ্কামুক্ত থাকে তার ব্যবস্থা নেয়া।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়