ডিবিতে অভিনেত্রী তিশার অভিযোগ : লুবাবার অভিযোগকারী আটক

আগের সংবাদ

সমঝোতা হলে পুনঃতফসিল : সুযোগ আছে সংবিধানে > আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের > সিদ্ধান্ত নিতে হবে ১০ দিনের মধ্যেই

পরের সংবাদ

গণতন্ত্রের কুফল হরতাল ও অবরোধ!

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তুলনামূলক রাজনীতি তত্ত্বে গণতন্ত্রকে সবার উপরে রাখা হলেও এটি কি কুফল মুক্ত? গণতন্ত্রের বিপরীতে অন্য কোনো শক্তিশালী সরকার ব্যবস্থা এখনো তৈরি হয়নি বলে গণতন্ত্রকে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সরকার ব্যবস্থা হিসেবে চর্চা করা হয়। অন্যদিকে একনায়কতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ইত্যাদির কুফল থাকলেও সুফলও কিন্তু রয়েছে। ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দু জনগণকে বোঝানো হয়। জনগণই নির্ধারণ করে গণতান্ত্রিক সরকার। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে হয় সরকারকে। নির্বাচনটা বিভিন্ন দেশে সাধারণত ৪-৫ বছর পর পর হতে দেখা যায়। নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয় নানান বিষয়। নির্বাচনের খরচ অনেকটা ব্যয়বহুল, যা উন্নয়নশীল দেশের জন্য শুভকর নয়। নির্বাচনের প্রভাব পড়তে পারে দেশের অর্থনীতিতে। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন মিছিল, মিটিং, হরতাল ও অবরোধ ইত্যাদির কারণে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ড হয়ে থাকে। এর ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতিসহ জনজীবন বিষণ্ন হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘিœত হয়। নির্বাচন সময়কালীন আরো অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে দেশের জনগণ, হরতাল ও অবরোধের কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক সময় পরীক্ষাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা সম্ভব হয় না। এতে শিক্ষার ওপরও প্রভাব ফেলে এই সময়টা।
বিশ্বের বিভিন্ন সরকারব্যবস্থায় গণতন্ত্র জনপ্রিয় হলেও এর সম্পূর্ণ সুপ্রয়োগ কি রয়েছে? গণতান্ত্রিক চর্চায় যে দেশগুলোর ইতিহাস লম্বা, তারা হয়তো এর সুপ্রয়োগে অনেকটা এগিয়ে এসেছে। যেমন- যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তুলনামূলক নতুন, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এ বিষয়টা কাটিয়ে ওঠা কঠিন। যেমন- হরতাল-অবরোধে দেশের সাপ্লাই চেইন পুরোপুরি ভেঙে যায়, অবরোধের কারণে পরিবহন বিঘিœত হওয়ায় বাজারের চাহিদা কমে যায়। ফলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। অন্যদিকে প্রতিটি পণ্যের, কৃষিপণ্যের দাম দেড়গুণ-দ্বিগুণ বাড়তে থাকে। পণ্যের ভোগ কমাতে হয়। এদিকে অবরোধের কারণে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো ভীষণভাবে বিঘিœত হয়। অথচ এ ধরনের শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। ট্রাক-বাস শ্রমিকদের রোজগার শুধু বেতনে নয়, তারা ট্রিপে ট্রিপে আলাদা টাকা পান। সেসব বন্ধ হয়ে যায়। ড্রাইভাররা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি বের করতে সাহস করেন না। ট্রাক, বাস, লঞ্চ, টেম্পো ইত্যাদি ব্যবসায় বিশাল মন্দা নেমে আসে। এর সঙ্গে জড়িত আরেকটি শিল্প ধুঁকে ধুঁকে মরে। আর সেটি হচ্ছে পর্যটনশিল্প। পর্যটকদের তেমন উপস্থিতি থাকে না। ফলে হোটেল ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবং অবরোধ-হরতাল, সামাজিক অনিশ্চয়তার বড় শিকার হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়। সারাদেশে অসংখ্য ছোট ও মাঝারি দোকান। সাপ্লাই চেইনে এরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ খুচরা বিক্রি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাজনৈতিক সমস্যা তথা হরতাল ও অবরোধ দীর্ঘায়িত হলে অর্থনৈতিক মন্দায় দেশ নিমজ্জিত হয়। একটি অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জন্য বিষয়গুলো সত্যিই জটিল। যেই গণতান্ত্রিক শাসন জনগণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠার কথা, সেখানেই যদি জনগণকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে এটা কুফল বলা যেতেই পারে। গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থায় এর সুফলগুলো পালন করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব গণতন্ত্রকামীদের উচিত, সঠিকভাবে গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, এ ক্ষেত্রে এর কুফলগুলো এড়িয়ে চলা। তাহলেই একটি দেশ গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার শাসনের মাধ্যমে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।

মোহাম্মদ আবদুর রহমান : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়