সংসদ নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতি নেই বিএনপির : রেলপথমন্ত্রী

আগের সংবাদ

জোট নাকি মহাজোট? একক ও জোটগত ভোটের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের > জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত স্পষ্ট নয়

পরের সংবাদ

তৈরি পোশাক খাতে সংকটের ধ্বনি : রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হরতাল, অবরোধ, জ¦ালাও-পোড়াও নৈরাজ্যে দেশের সম্ভাবনাময় পোশাক খাত নতুন করে হুমকিতে পড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ এবং গাজীপুরে গত কয়েক দিন ধরে শ্রমিকদের আন্দোলন, ভাঙচুর, সড়ক অবরোধে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক দিনের হরতাল, অবরোধে দেশের অর্থনীতিতে সামগ্রিক ক্ষতি প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। এর সিংহভাগই বহন করতে হচ্ছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পকে। এই পরিস্থিতি ব্যবসার বাধা আরো বাড়িয়ে দেবে এবং অর্থনীতিকে আরো পিছিয়ে দেবে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। জানা গেছে, অনাকাক্সিক্ষত হরতাল-অবরোধের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির বিষয়ে ঢাকা চেম্বার ২০১৩ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল, প্রতিদিন হরতালের কারণে ক্ষতি হয় প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালে সিপিডি তাদের গবেষণায় দেখিয়েছিল, এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। আমাদের অর্থনীতির আকার আগের তুলনায় অনেক বড় হয়েছে। সে কারণে এটা বলা যায়, চলমান হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক বড় হবে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৈরি পোশাক খাত। করোনার প্রাদুর্ভাবে স্থগিত ও বাতিল হওয়া ক্রয়াদেশও ফিরে আসছে। ফলে বাড়ছে রপ্তানি। এখন নতুন করে সংকটে পড়তে পারে এ খাত। বিনিয়োগ প্রবাহ বজায় রাখার জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ২০তম অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য দ্রুত শিল্পায়নের দিকে যেতে হবে। বাংলাদেশ যে বিনিয়োগ ও ব্যবসার জন্য একটি আদর্শ স্থানে পরিণত হয়েছে, তা আমরা অনেক সূচকের উন্নতির দিকে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে ভৌগোলিকভাবে কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার কারণে বাংলাদেশও বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অন্যতম আদর্শ গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সময়ের প্রয়োজনে অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল ভোক্তা চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের বহুমুখীকরণ বা বৈচিত্র্যসাধন, কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হলে পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। সেই প্রস্তুতি এখন থেকে নিতে হবে। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিকূলতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাকশিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন। প্রয়োজন রাজনীতিক সহাবস্থান এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকা জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়