৯৭ সহকারী জজ নিয়োগ

আগের সংবাদ

সমঝোতার সম্ভাবনা কী শেষ! বিশ্লেষকদের মতে, সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি > উদ্যোগ নিতে হবে দেশের ভেতর

পরের সংবাদ

সহিংসতার আশঙ্কা কয়েকটি দলের : সমঝোতার আশা ছাড়েনি জাতীয় পার্টি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এর পক্ষে-বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি, জাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, সিপিবিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। এর পরপরই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঢাকাসহ সারাদেশে আনন্দ মিছিল করে। আর বিএনপি তফসিল প্রত্যাখান করে ভোট না হতে দেয়ার ঘোষণা দেয়।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তফসিল নিয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণা হলেও সমঝোতার আশা ছাড়িনি। আমরা আশা করেছিলাম, সব দলকে নিয়ে মিলেমিশে আলোচনার মাধ্যমে একটি পথ বের করা হবে। আমরা অনুরোধও করেছিলাম, এটি হলে ভালো হতো। তবে তফসিল ঘোষণা হলেও এখনো সময় আছে। তিনি আরো বলেন, সরকারি দল আওয়ামী লীগ আলোচনার উদ্যোগ নিতে পারে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আছে। তারা চাইলে সমঝোতার জন্য তফসিল পেছাতে পারে। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংকটের পটভূমিতে সমঝোতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলোচনা-সমঝোতার বিষয়ে এখনো আশা ছাড়িনি।
সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। গতকাল রাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, তফসিল ঘোষণা করায় সংবিধান সমুন্নত থাকল, সংবিধানের প্রাধান্য সংরক্ষিত হলো, নির্বাচন বিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী ও সন্ত্রাসবাদী শক্তি পরাজিত হলো। যারা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। অন্যদিকে তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে মিছিলও করেছে জাসদ। রাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জাসদের নেতাকর্মী একটি মিছিল বের করে গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, তোপখানা, পল্টন, বায়তুল মোকাররম এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে জনগণকে জ¦লন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশে গণতন্ত্র নেই। কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশ চালাচ্ছে। বর্তমান সিলেকশন কমিশন (নির্বাচন কমিশন) বাংলাদেশে উত্তর কোরিয়া, চীন, রাশিয়ার মতো একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আর ন্যূনতম মনুষ্যত্ব থাকল না।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন কমিশন যে তফসিল ঘোষণা করেছে, তা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি করেছে। সরকার এই ইসিকে দিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে চেয়েছে। আন্দোলনকে সহিংস আখ্যা দিয়ে দমন করতে চেয়েছে। সরকার একতরফা নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতার বৈতরণি পার হতে চায়। জনগণ এবার তা মেনে নেবে না। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আগেও হয়নি, এবারো হবে না, এটি প্রমাণিত। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী নির্বাচনকালীন সরকারের এজেন্ডা রেখে সংলাপের কথা বলেছি। আওয়ামী লীগ এই সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে দেবে না। ষড়যন্ত্র করে, মিথ্যা প্রচার চালিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। এই তফসিল দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। গতকাল সংগঠনের চেয়ারম্যান ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী ও মহাসচিব জয়নুল আবেদীন জুবাইর এক বিবৃতিতে স্বাগত জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ নির্বাচনমুখী দল হিসেবে তফসিলকে স্বাগত জানায়। সঠিক সময়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণা করলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর বিরোধ-বিভাজন নিয়ে জনমনে শঙ্কা বিরাজ করছে। কমিশনের ওপর জনগণের আস্থার সংকট এখনো কাটেনি। যে কোনো মূল্যে তা ফিরিয়ে আনা আবশ্যক। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রমুখী করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এজন্য সবার আগে নির্বাচন কমিশনকে অধিক দায়িত্বশীলতায় এগিয়ে আসতে হবে।
ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়ে খেলাফত মজলিস জানায়, দেশবাসী মনে করে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই দেশবাসীর দাবি ছিল দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সরকার গণদাবিকে উপেক্ষা করে বিগত দুটি নির্বাচনের মতো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আর সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগেই ব্যর্থ হয়েছে। উপনির্বাচনের কারচুপি ঠেকাতে পারেনি ইসি। এ দায় নিয়েই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ করা উচিত ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়