আগামীকাল স্যাম্বো-কুরাশ প্রতিযোগিতার পর্দা উঠছে

আগের সংবাদ

মাহবুব : হার না মানা সম্প্রদায়ের মানুষ

পরের সংবাদ

বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাজারে ঢুকলেই গরিব এবং মধ্যবিত্ত মানুষের মাথা ঘুরছে। কেনার জন্য যেটাতে হাত দিচ্ছে সেটারই দাম চড়া। দেশে শীতের আমেজ শুরু হলেও সব সবজির দাম ৭০-৮০ টাকা। কিছু সবজির দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। গরিবের সবজি আলুর দিকে তাকানোই যাচ্ছে না। ২০-২৫ টাকা দামের আলু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দামে। এক সপ্তাহ আগে ৭০ টাকা কেজিতে কেনা পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে ১০০-১২০ টাকা হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছে না। তাছাড়া ডিম, মুরগি, মাছের দাম বাজার বেশ চড়া।
রাজনৈতিক ডামাডোলে বাজারের এমন মূল্যবৃদ্ধি কিনা অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। বর্তমান সরকারের সময় পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, নদীর তলদেশে টানেল, দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ এবং দেশের প্রতিটি উপজেলায় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে গেলেও সময়ে সময়ে দেশের বাজারসমূহে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে তারা কেন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিষয়টি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। বাজারে বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সরকারের অজান্তে তাদেরই দলের কোনো নেতাকর্মী জড়িয়ে আছে কিনা তা সরকারকে খুব জরুরিভাবে খুঁজে দেখতে হবে। অনেকেরই ধারণা এ মূল্যবৃদ্ধি সঙ্গে একাধিক সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে, যাদের মধ্যে সরকারি দলের নেতারা রয়েছে। আর এ কারণেই এ মূল্যবৃদ্ধি সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারি দলের লোকরা জড়িত বলে সাধারণ মানুষ ভাবছে। এমন যদি হয়ে থাকে তাহলে সরকারকে এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের নেতাকর্মীরা যদি বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তাদের বহিষ্কার করে আইনের আওতায় আনা উচিত। কারণ দল করা মানে, দল নিয়ে ব্যবসা করা নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি অতীত ঐতিহ্য আছে। এ দল বাংলাদেশ সৃষ্টির আগ থেকেই জনগণের জন্য কাজ করছে এবং বাংলাদেশ সৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে দলটির সরাসরি সম্পর্ক। ফলে এ দলে কিছু মুনাফালোভী এবং অন্যায় পথে বড় লোক হওয়া মানুষ না থাকলে দলটির কোনো ক্ষতি হবে না। এদের বাইরেও বাজারে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির আরো একটি কারণ হলো আমাদের দেশের বেশি ভাগ ব্যবসায়ী সৎ নয়। তারা বাজারের তাদের পণ্য সবসময় বেশি দামে বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা যে কোনো মূল্যে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে রাতারাতি ধনী হতে চায়। ফলে তারা কখনো সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে না। আর তাদের সঙ্গে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা জড়িত থাকে তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। তারাই সবসময় বাজারের দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। সামনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে দেশে অনেক কিছুই ঘটবে; কিন্তু এর মধ্যে বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। কারণ এমন লাগামহীন পণ্যের দাম মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই খাপ খাচ্ছে না। আমরা মনে করি সরকার এ দেশের যা উন্নয়ন করেছে আগামী ৫০ বছরেও এমন উন্নয়ন আর কেউ করতে পারবে না। এখন সময় এসেছে দেশের বাজার ব্যবস্থার ওপর কঠোর নজর দেয়ার।
কোন কারণে বাজারের পণ্যসমূহের দাম বারবার এমন অস্থিতিশীল হচ্ছে। এর পেছনে কারা কাজ করছে- এসব কিছু দ্রুত তদন্ত করে বের করতে হবে। বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সরকারি দলের কোনো লোকজন জড়িত থাকলে তাদেরও কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেয়া যাবে না। আর বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে সবসময় দেখা যায় অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি চক্র জড়িত থাকে। এরা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এসব অসাধু ব্যবসায়ী যাদের কারণে সময়ে সময়ে বাজার অস্থির হয়ে ওঠে এদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মোটকথা বাজারে স্বস্তি ফেরাতে সরকারকে আন্তরিকতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে বাজার তদারকির করতে হবে। অযৌক্তিক এবং বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রিকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করব সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে কথা চিন্তা করে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

রতন কুমার তুরী : লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়