ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৮ জনের, নতুন রোগী ১৭০৮

আগের সংবাদ

নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত : ক্ষণগণনা শুরু > রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ ৫ নভেম্বর > তফসিল ১৪ নভেম্বর, ভোট ৭ জানুয়ারি

পরের সংবাদ

তৈরি পোশাকশিল্প : ন্যূনতম মজুরি দ্রুত কার্যকর হোক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। অথচ শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম মজুরি পান এ দেশের শ্রমিকরা। এটা এক ধরনের নৈরাজ্য। বেতন-ভাতার দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বারবার রাস্তায় নামতে দেখা যায়। ন্যূনতম মজুরির দাবিতে অষ্টম দিনের মতো গতকালও আন্দোলন করেছে পোশাক শ্রমিকরা। উত্তেজিত শ্রমিকরা মহাসড়কে একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয়। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে দুজন শ্রমিক মারা গেছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর মিরপুরে একই দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। আমরা মনে করি, শ্রমিকদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সুরাহা করা উচিত। জানা গেছে, বর্তমানে এন্ট্রি লেভেলে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা। এর সঙ্গে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি রয়েছে ৫ শতাংশ হারে। ২০১৮ সালে নিম্নতম মজুরি বোর্ড এ মজুরি ঘোষণা করে। প্রতি পাঁচ বছর পর মজুরি পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তী মেয়াদে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য সাড়ে ছয় মাস ধরে কাজ করছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। ২২ অক্টোবর বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করে প্রস্তাব দেন। তার বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক; অর্থাৎ ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের মতে, এ মুহূর্তে এত বেশি মজুরি দেয়ার মতো সামর্থ্য নেই তাদের। অন্যদিকে শ্রমিক নেতাদের মতে, বর্তমান বাজারে এত কম মজুরি নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। তার পরদিন থেকেই মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। আট দিন ধরে চলা এই আন্দোলন ইতোমধ্যে সহিংস আকার ধারণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিজিএমইএ সভাপতি জানান, চলতি মাসে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম নতুন মজুরি চূড়ান্ত করা হবে। যা আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। কিন্তু এখন অহেতুক আন্দোলনের নামে কারখানায় হামলা বা ভাঙচুর করা হচ্ছে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করার জন্য বহিরাগতরা উসকানি দিচ্ছে বলে তিনি জানান। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিকূলতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাকশিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। সময়ের প্রয়োজনে অত্যন্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল ভোক্তা চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের বহুমুখীকরণ বা বৈচিত্র্যসাধন, কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হলে পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। তবে শ্রমিকদের হক বঞ্চিত করে নয়। আশা করছি, ন্যূনতম মজুরির যে প্রস্তাব উঠে আসছে তা দ্রুত কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়