বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহী মিয়ানমার

আগের সংবাদ

খেলাপি কমবে কোন পথে! পুনঃতফসিলকৃত ঋণ ফের খেলাপি হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর ভূমিকা চান অর্থনীতিবিদরা

পরের সংবাদ

আর কত পুড়বেন জীবাশ্ম জ্বালানি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সারা বিশ্ব যেমন ঝুঁকিতে আছে, তেমনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যায় বাংলাদেশও রয়েছে ব্যাপক ঝুঁকিতে। বরং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ এলাকা অতিরিক্ত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশে আবহাওয়ারও বেশ তারতম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। বেশি বেশি ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস, খরা, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বন্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, জীববৈচিত্র্যের হুমকিসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ।
আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি- কতটা ভয়ংকর হতে পারে আমাদের ভবিষ্যৎ। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা কেমন পৃথিবী রেখে যাচ্ছি? আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, আজ থেকে ২০-৩০ বছর পর আমাদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! পৃথিবী তখন কেমন হবে? প্রতিনিয়তই আবহাওয়া পূর্বের রেকর্ড ভাঙছে, গড়ছে নতুন রেকর্ড। ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পৃথিবী হয়ে উঠছে উত্তপ্ত। হিমালয়সহ অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলছে নিয়মিত, যার দরুন সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। যার ফলে বাস্তুচ্যুত লোকজনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার দেখা যায়, অনেক অঞ্চল মরুকরণের দিকে এগোচ্ছে, সুপেয় পানির জন্য হাহাকার।
পৃথিবীর এমন রূঢ় আচরণের অন্যতম কারণ জীবাশ্ম জ¦ালানির অবাধ ব্যবহার। জ¦ালানি তেলের ব্যবহার। আমরা প্রতিনিয়ত অবাধে খনিজ তেল ব্যবহার করছি। এটা একটি নবায়নযোগ্য বস্তু। প্রতিদিনই তেলের পরিমাণ কমছে। কিন্তু আমরা এটার ওপর এত নির্ভরশীল হয়েছি, এ থেকে নতুন কিছু চিন্তা করাও দুঃসাধ্য ব্যাপার। তেল পুড়িয়ে আমরা বায়ুমণ্ডলে ছাড়ছি পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকারক এমন নানা উপাদান, যা আমাদের ভবিষ্যতে টিকে থাকার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। ইউরেনিয়াম ব্যবহারে তৈরি পরমাণু চুল্লি, যা জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে ফেলছে, পৃথিবীকে করছে উত্তপ্ত। উন্নত দেশগুলো নিজেদের সুবিধার জন্য এমন ঝুঁকিপূর্ণ নানা কাজ করছে, যা অদূর ভবিষ্যতে আমাদের হয়ে উঠতে পারে আরো ভয়ংকর। উন্নত দেশগুলোর মূল চালিকাশক্তিই জীবাশ্ম জ¦ালানি। তারা নির্বিচারে এর ব্যবহারে মত্ত।
আমাদের সরকার ও কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে জীবাশ্ম জ¦ালানির অবাধ ব্যবহারে ভবিষ্যৎ কতটা ভয়ংকর হতে পারে। বাংলাদেশের ওপর প্রভাবটা কেমন হবে, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে কতটা প্রভাব পড়বে, দেশের উত্তরাঞ্চলে কতটা খরা হতে পারে নাকি মরুভূমিতে পরিণত হবে, রাজধানী ঢাকা কতটা ঝুঁকির সম্মুখীন হবে, তা এখনই উপলব্ধি করতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করে দেশবাসীকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা থেকে যতদূর সম্ভব বাঁচানো যায়। আমাদের এখন থেকেই করণীয় ভাবতে হবে, না হয় ভবিষ্যতে ভাবলে তা তেমন কোনো কাজে আসবে না। জনসাধারণ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এখন থেকেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। জনগণকে জীবাশ্ম জ¦ালানি ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। যেসব দেশ নিজেদের উন্নয়নের জন্য জীবাশ্ম জ¦ালানি পুড়ছে তাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সর্বাগ্রে জীবাশ্ম জ¦ালানির ব্যবহার কমাতে হবে। আমরা যদি সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারি, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নেতিবাচক প্রভাব থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনেকটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে পারব, যা জীববৈচিত্র্যের জন্য ইতিবাচক হবে।

খন্দকার বদিউজ্জামান বুলবুল : শিক্ষার্থী, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।
khbulbul2002@gmail

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়