পোশাক শ্রমিকদের মজুরি সাড়ে ১৭ হাজার টাকা করার প্রস্তাব : সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ

আগের সংবাদ

পদ্মার বুকে স্বপ্নের পারাপার : প্রমত্তা পদ্মা পাড়ি দিল ট্রেন > উদ্বোধন করে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা গেলেন প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

রাজধানীর যানজটের শেষ কোথায়?

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীতে কোনোভাবেই যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভারসহ নগরজীবনে সড়কে নানা পরিবর্তন এলেও যানজট যেন কমছে না। গতকাল সোমবার ও আগের দিন রবিবার সপ্তাহের অন্যদিনের তুলনায় যানজট তীব্রভাবে দেখা দেয়। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়কে বের হওয়া নগরবাসী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় অফিসগামীদের। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রাজধানীতে টানা দুদিনের বৃষ্টিতে পানি জমে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়াতে গাড়ির গতি কম থাকা ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির (ভিভিআইপি) চলাচলের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এমন কারণ কতটুকু প্রাসঙ্গিক। যানজট নিরসনে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা দরকার। নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে আগে। ঢাকায় অনেক মেগাপ্রজেক্ট করা হলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সেগুলো কোনো কাজে আসছে না। সমস্যা সমাধানে গণপরিবহন বাড়ানোরও গুরুত্ব দেখা যাচ্ছে, রাজধানীতে ফুটপাতসহ মূল সড়কও সংকুচিত হয়ে গেছে। আধা ঘণ্টার রাস্তা যেতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। অনেক রুটেই যাত্রীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে ৩-৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। যানজট নিরসনের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ১৫ দফা নির্দেশনার পরও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ঢাকায় যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বিশেষ করে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, বিপণিবিতান প্রভৃতি জায়গায় যাতায়াত করা এক দুঃসহ যন্ত্রণা। যানজটের কারণে কেবল রাজধানীতে প্রতিদিন বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আয় নষ্ট হচ্ছে। সব মিলিয়ে যানজটের কারণে দিনে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীতে চলাচলকারী যানবাহন প্রতিদিন যানজটের কারণে প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা আটকে থাকে। তাতে শ্রমঘণ্টা অপচয়জনিত জাতীয় উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হচ্ছে। এখনই এর থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করতে হবে। না হয় এ শহর দিন দিন মানুষের বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হবে। ট্রাফিক পুলিশ, নগরবিদ, গবেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমন্বয়হীনতার কারণে রাজধানীর যানজট নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না। এক সংস্থা রাস্তা খুঁড়ছে, আরেক সংস্থা গ্যাস লাইন ঠিক করছে। সমন্বয় করে কাজ করলে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। ঢাকার রাস্তায় ব্যক্তিমালিকানাধীন গণপরিবহন, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস মোটরসাইকেল এসব যানবাহন প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকায় মোট সড়কের প্রায় ৫০ শতাংশজুড়েই চলাচল করে ব্যক্তিগত গাড়ি, অথচ এগুলো বহন করে মাত্র ১২ শতাংশ যাত্রী। কিন্তু ৫০ শতাংশ বড় বাসে প্রায় ৮৮ শতাংশ যাত্রী পরিবহন সম্ভব। এ বিষয়ে জোরালো কথা তোলা দরকার। নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর নেই। এটি বাস্তবায়ন হলে সড়কে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরবে। সর্বোপরি ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন জরুরি। রাজধানীতে লাখ লাখ রিকশা চলছে। অবাধে রিকশা ছেড়ে দিয়ে আধুনিক নগরী চিন্তা করা যায় না। অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল করে রাস্তা সংকীর্ণ করা থেকে জনগণকে বিরত রাখতে হবে। নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়