আসন্ন নির্বাচনে ইসির বরাদ্দ ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা : সরঞ্জাম কেনাকাটায় ৮০ শতাংশ অগ্রগতি

আগের সংবাদ

রক্তাক্ত গাজায় ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ : হামাসের রকেট হামলায় নিহত ৪০ ইসরায়েলি, পাল্টা হামলায় নিহত ১৯৮ ফিলিস্তিনি

পরের সংবাদ

উন্নয়নের রোল মডেল শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২৩ , ১১:২৩ অপরাহ্ণ

দক্ষিণ এশিয়ায় যে কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী তাদের মহান কাজের জন্য চির অমরতা লাভ করেছেন তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম। তিনি আজকে বিশ্বের বিস্ময় হয়ে উঠেছেন নিজ কর্মগুণে। শেখ হাসিনা তার নিজস্ব জ্ঞান ও চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বল্পোন্নত দেশকে খুব কম সময়ে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে এসেছেন। তিনি দেশের উন্নয়নের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সর্বশেষ তার হাত ধরে বহু প্রতীক্ষার পর একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অবশেষে যাত্রা শুরু করেছে। আত্মপ্রকাশ হলো নিউক্লিয়ার ক্লাবের ৩৩তম গর্বিত সদস্য হিসেবে। গত বৃহস্পতিবার পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জড়িত রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করেছে। ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ঐতিহাসিক এই কমিশনিংয়ের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। এই প্রকল্প দেশের উন্নয়নের মাইলফলক। শান্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ বাংলাদেশ এ শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজের ওপর নির্ভর করে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করছে সরকার। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনই এ মুহূর্তে প্রকৃষ্ট পথ।
তিনি জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সন্তান তিনি। শেখ হাসিনা ছিলেন তাদের ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড়। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজের ছাত্রসংসদের সহসভাপতি পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন এবং একে একে উক্ত কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন সদস্য ছিলেন। এছাড়া রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই শুরু হয় তার সব গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু বিপথগামী সামরিক অফিসারের কারণে নিহত হন তার পিতা তৎকালীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্য। ভাগ্যক্রমে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা তখন জার্মানিতে অবস্থান করেছিলেন। তাই তারা বেঁচে যান। পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় নেন ভারতে। সেখানে ৬ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। ৬ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে যান। ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার তাকে আটক করে ১৫ দিন অন্তরীণ রাখে। এছাড়া ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি এবং নভেম্বর মাসে তাকে দুবার গৃহবন্দি করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২ মার্চ তাকে আটক করে প্রায় ৩ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দি ছিলেন এবং ওই বছর সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি ৩টি সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব তখন দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন। ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করে এক মাস অন্তরীণ রাখা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি আবার গ্রেপ্তার ও গৃহবন্দি হন। ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অন্তরীণ করা হয়। তিনি নব্বইয়ের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের অন্যতম নেতা। ১৯৯১ সালের সংসদীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। তিনি রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য তৎকালীন রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত করেন। শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় তার বক্তব্য শেষ করার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোড়া হয়। দলের নেতাকর্মীরা নিজেদের দিয়ে ঐতিহাসিক মানব প্রাচীর তৈরি করেন তার জীবন রক্ষার জন্য। লোমহর্ষক ঘটনায় তিনি রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ তার দলের ২২ নেতাকর্মী নিহত হন এবং পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হন। তিনি নিজেও কানে আঘাত পান। তিনি ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৬ জুলাই কারাবন্দি হন। মুক্তি পান ১১ জুন ২০০৮ সালে এবং ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতা লাভ করে। ২০০৯-১৩ মেয়াদে তিনি হন দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী, ২০১৪-১৮ মেয়াদে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করলে তিনি চতুর্থবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ চালাচ্ছেন। মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সব সময় আপসহীন ছিলেন। তিনি তার সরকারের আমলে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন সরকার এই বিচার না হওয়ার জন্য ইনডেমনিটি নামক এক কালো আইন করেছিল। সেই কুখ্যাত আইন তার সরকার বাতিল করে এবং সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু করে। বিচারের রায়ও কার্যকর করে (শুধু পলাতক আসামি ব্যতীত)। তার সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সামুদ্রিক জলসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি, ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, সারাদেশে প্রায় ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে অন্তর্ভুক্তিকরণ, ঢাকায় মেট্রোরেল চলাচল শুরু করা, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ এবং প্রত্যেক উপজেলাতে একটি করে সরকারি মসজিদ নির্মাণ প্রজেক্ট, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রকে সুসংহত রূপ দান করা। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি সমস্যা ছিল রোহিঙ্গা সমস্যা। সেখানেও তিনি মানবতার দুয়ার খুলে রেখেছেন, এটা এক অনন্য অবদান। সমাজ ও দেশের জন্য তার জনকল্যাণমূলক কাজ তাকে একজন আলোকিত মানুষ করে তুলেছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বিশ্বের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন সম্মানসূচক ডিগ্রি এবং পুরস্কার প্রদান করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘হুপে-বোয়ানি’ (ঐড়ঁঢ়যড়ঁবঃ-ইড়রমহু) শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। ২০০৯ সালে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্ট শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য ভূমিকা পালনের জন্য তাকে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ ছাড়া তিনি ব্রিটেনের গ্লোবাল ডাইভার্সিটি পুরস্কার এবং দুবার সাউথ সাউথ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে ‘শান্তির বৃক্ষ’ এবং ২০১৫ সালে উইমেন ইন পার্লামেন্ট গ্লোবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে রিজিওনাল লিডারশিপ পুরস্কার এবং গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে অবদানের জন্য আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৫ সালে তাকে সম্মাননা সনদ প্রদান করে। জাতিসংঘ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ-২০১৫’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এ ছাড়া টেকসই ডিজিটাল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঞবষবপড়সসঁহরপধঃরড়হ টহরড়হ (ওঞট) শেখ হাসিনাকে ওঈঞং রহ ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ অধিৎফ-২০১৫ প্রদান করে। নারী শিক্ষা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ২৭ এপ্রিল ২০১৮ এষড়নধষ ড়িসবহ’ং ষবধফবৎংযরঢ় ধধিৎফ-এ ভূষিত হন। ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান উইমেন ২০১৯ সালে তাকে খরভবঃরসব ঈড়হঃৎরনঁঃরড়হ ভড়ৎ ড়িসবহ বসঢ়ড়বিৎসবহঃ ধধিৎফ প্রদান করে। এসিডিএসএন কর্তৃক তিনি ২০২১ সালে ‘এসডিজি অগ্রগতি’ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০২১ সালের নভেম্বরে ঈড়ঢ়-২৬ সম্মেলনের সময় বিবিসি শেখ হাসিনাকে ‘ঞযব াড়রপব ড়ভ ঃযব াঁষহবৎধনষব’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক চ্যানেল ৪ নিউজ প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ঞযব সড়ঃযবৎ ড়ভ যঁসধহরঃু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। আবার তিনি একজন ভালো লেখকও বটে। ব্যক্তিগতভাবে শেখ হাসিনা প্রযুক্তি, সংগীত, বই পড়া এবং রান্নার কাজেও বেশ আগ্রহী। তিনি কৃষক ও প্রকৃতিপ্রেমিক মানুষ।
পরিশেষে বলতে চাই, শেখ হাসিনা বিশ্বের অনুন্নত দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে এখন রোল মডেল। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় তিনি একজন সূর্যসন্তান। তিনি এখন সারা বিশ্বের কাছে প্রেরণার উৎস।

ড. আজিজুল আম্বিয়া : কলাম লেখক ও গবেষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়