দুদকের মামলা : সাবেক বিমানবালা শোভার ৩ বছর কারাদণ্ড

আগের সংবাদ

ঐতিহাসিক সম্পর্কে পরমাণু শক্তির বন্ধন : বিশ্বের ৩৩তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে ইউরেনিয়ামের চালান গ্রহণ করল বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

ইন্টার্ন নার্সদের ভাতা প্রদান আবশ্যকীয়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৫, ২০২৩ , ১:০১ পূর্বাহ্ণ

নার্সিং যেন আমাদের সমাজের জন্য একটি অসম্মানজনক পেশা। আমি বুঝতে পারি না এ সমাজ কী করে বাঁচবে। একটা মেয়ে দেশের খাতিরে নার্সের কাজ করছে, তার সম্মান হবে না আর ভালো কাপড়-চোপড় পরে যারা ঘুরে বেড়াবে তার সম্মান হবে অনেক উচ্চে, চেয়ারখানা তাকেই দেয়া হবে। এরও একটা মান থাকতে হবে। আমি ডাক্তার সাহেবদের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলাম যে, আপনারা আমাকে একটা প্ল্যান দেন, যাতে আইএ পাস এবং গ্র্যাজুয়েট মেয়েরা এখানে আসতে পারে।’ বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়াসে নার্সিং পেশায় অনেক ধরনের উন্নতি লক্ষণীয়। এখন নার্সরা বাংলাদেশেই পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করতে পারে। তবে এর মাঝেও যেন নার্সরা ডুবে যাচ্ছে শত অবহেলায়। ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ও ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারির শিক্ষার্থীরা পড়া শেষ করে ২০১৮ সালের নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের ইন্টার্নশিপ করছেন বিনা পারিশ্রমিকে। বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা এক বুক স্বপ্ন নিয়ে নার্সিং পড়তে আসেন। মানুষের সেবা করার পাশাপাশি নিজের পরিবারের পাশে থেকে আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার দায়িত্ব তাদের ঘাড়েও আছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল এমন অনেক পরিবারের সন্তানও রয়েছে যাদের পড়ালেখার খরচ চালাতেই হিমশিম খায় পরিবারগুলো। তবুও এক বুক স্বপ্ন নিয়ে মানবসেবার মহৎ পেশায় উৎসর্গ করেন আদরের সন্তানটিকে। প্রতিযোগিতা ঘেরা সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে পড়ার সুযোগ পান সংখ্যালঘু শিক্ষার্থী। সংখ্যাগরিষ্ঠদের পড়তে হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। যেখানে পড়ার খরচই কমপক্ষে ২-৩ লাখ টাকা। বাসস্থান আর খাবার খরচ সব মিলে একজন শিক্ষার্থীর ৫-৬ লাখ টাকা খরচও পড়ে, যা একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রেও কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। পড়া শেষে যখন একজন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ করেন তখন তাদের কাজ করতে হয় একজন চাকরিজীবী নার্সের মতোই। পড়ালেখা চলাকালে ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে বিভিন্ন জায়গায় ডিউটি করে বেশির ভাগ কাজ তারা শিখে ফেলে। ২০১৮ সালের আগে ইন্টার্নশিপের সময়কাল ৪৫ দিন থাকলেও ২০১৮ সাল থেকে করা হয়েছে ৬ মাসের। ৬ মাসের এই দীর্ঘ সময় একজন ইন্টার্ন নার্স বহু কষ্টে যাপন করেন। ইন্টার্ন নার্সদের সরাসরি রোগী দেয়া না হলেও দায়িত্বরত নার্সদের বেশির ভাগ দায়িত্ব পালন তারাই করেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় একজন নার্স তার কাজ শেষে বিশ্রামের সুযোগ পেলেও পায় না একজন ইন্টার্ন নার্স। কারণ একজনের কাজ শেষ হলেও আবার অন্য নার্সদের কাজ সমাপ্ত করতে একজন ইন্টার্ন নার্সকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুবিধা দেখানো হলেও একরকম কুলুর বলদের মতো খাটুনি হয়ে যায় তাদের। কারণ এত কষ্ট করার পরও বিনিময় পান না কোনো ভাতা। এতকিছুর পরও মাস শেষে কিছু টাকা ভাতা পেলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারতেন তারা। কিন্তু ভাতা তো পাচ্ছেনই না বরং অনেক প্রতিষ্ঠানে টাকা দিয়ে ইন্টার্নি করার অভিযোগও রয়েছে। উন্নতমানের নার্সিং সেবার প্রত্যাশায় ইন্টার্ন নার্সদের সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক সচ্ছলতা প্রদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই অনতিবিলম্বে এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি অতীব জরুরি।

হালিমা বিবি : ইন্টার্ন নার্স, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কল্যাণপুর।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়