প্রস্তুতি ম্যাচ : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের হার

আগের সংবাদ

রাজনীতিতে সমঝোতার উদ্যোগ! : বৈরিতার পারদ নিম্নমুখী, আ.লীগের ৫ সদস্যের কমিটি, প্রতিনিধি দল গঠন করছে বিএনপি

পরের সংবাদ

সেঞ্চুরিয়ানদের গল্প

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শুরু হয়েছে ভারত বিশ্বকাপ উন্মাদনা। চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরগুলোর মধ্যে অন্যতম। ক্রিকেটের অভিজাত এ আসরে নিজের ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে শতক তুলে নেয়া প্রতিটা ব্যাটারের জন্যই বিশেষ কিছু। এখন পর্যন্ত এক দিনের আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপের আসরে এমন মাইলফলক ছোঁয়ার ঘটনা ঘটেছে ১৯৬টি। বিশ্বকাপের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭৫ সালে। সে থেকে এখন পর্যন্ত ১২টি আসরে সেঞ্চুরি হয়েছে ১৯৬টি। এখন পর্যন্ত ১৫টি দলের ১১৭ জন ব্যাটার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি : বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরি আসে প্রথম আসরের প্রথম ইনিংসেই। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ১৪৭ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেন ইংলিশ ওপেনার ডেনিস আমিস। ১৩৭ রানের ইনিংসটি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ সেরা হওয়ার গৌরব এনে দেয় ইংলিশ এ ওপেনারকে। প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই আরেক ব্যাটার শতক হাঁকান। তিনি হলেন নিউজিল্যান্ডের গেøন টার্নার। পূর্ব আফ্রিকার বিপক্ষে এ দিন ১৭১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি : ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ শতক হাঁকানোর রেকর্ড দুই ভারতীয় ব্যাটারের। রোহিত শর্মা ও শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বকাপের আসরে ৬টি করে সেঞ্চুরি করেছেন। সেঞ্চুরিগুলো হাঁকাতে শচীনের প্রয়োজন হয় ৬টি বিশ্বকাপ ও ৪৫টি ম্যাচ। বিশ্বকাপে তার সর্বোচ্চ ইনিংস স্কোর ১৫২। অন্যদিকে রোহিত শর্মা ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে মাত্র ১৭টি ইনিংস খেলেই শচীনের রেকর্ডে ভাগ বসান। রোহিতের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ স্কোর পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৯ বিশ্বকাপে ১৪০ রান। এবারের আসরে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার সুযোগ থাকছে লিটল মাস্টারকে ছাড়িয়ে এককভাবে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিধারীর রেকর্ডে মালিক হওয়ার।
দলগতভাবে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি : বিশ্বকাপে দলগতভাবে শতক হাঁকানোর রেকর্ডটি ভারতের দখলে। দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিশ্বকাপে ৩২টি সেঞ্চুরি রয়েছে। এরপরের অবস্থান অস্ট্রেলিয়ার। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের করা সেঞ্চুরির সংখ্যা ৩১টি। আবার বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মোট ১৫ জন ব্যাটার সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
ফাইনালে সেঞ্চুরির রেকর্ড : বিশ্বকাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করার মতো দারুণ ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না। অবশ্য এমন কীর্তি খুব বেশি ক্রিকেটার গড়তে পারেননি। বিশ্বকাপের আগের ১২ আসরে মাত্র ছয়জন ক্রিকেটার ফাইনালের মঞ্চে সেঞ্চুরি হাঁকানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়োড অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৫ বলে ১০২ রান করেন। ১৯৭৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেঞ্চুরি হাঁকান ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার ভিভ রিচার্ডস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে ১৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে এই তালিকায় নাম লেখান শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা (১০৭)। তার শতকের ওপর ভর করে প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং ২০০৩ বিশ্বকাপে করেন ১৪০ রান। পরের বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অজি ব্যাটার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট করেন ১৪৯ রান। আর ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে ফাইনালে ৮৮ বলে করেন অপরাজিত ১০৩ রান।
২০১৫ বিশ্বকাপে ৩৮টি সেঞ্চুরি!
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ২০১৫ বিশ্বকাপে হয়েছে মোট ৩৮টি সেঞ্চুরি। যা এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত যে কোনো আসরের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি। এ আসরে শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারাই হাঁকিয়েছিলেন টানা চারটি সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১টি সেঞ্চুরি হয়েছে ২০১৯ সালে। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্বকাপে ৬টি সেঞ্চুরি হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে হয়েছিল মাত্র ২টি। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে হওয়া সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল ৮টি। ১৯৮৭ সালে হয়েছিল ১১টি সেঞ্চুরি। ১৯৯২ বিশ্বকাপ দেখেছিল ৮টি সেঞ্চুরি। আর ১৯৯৬ বিশ্বকাপে হয়েছিল ১৬টি সেঞ্চুরি। ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে হওয়া বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল ১১টি। ২০০৩ ও ২০০৭ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২১ ও ২০টি। ২০১১ বিশ্বকাপে হয়েছিল ২৪টি।
দ্রুততম সেঞ্চুরি : বিশ্বকাপে সর্বকালের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি দখলে রেখেছেন আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। ১১৩ রানের ইনিংসে তিনি ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে অজি ব্যাটার গেøন মেক্সওয়েল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১ বলে শতক পূরণ করেন। একই আসরে ৩৬০ ডিগ্রি প্রোটিয়া ব্যাটার এবি ডিভিলিয়ার্স ৫২ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকান।
সবচেয়ে কম বয়সি সেঞ্চুরিয়ান : মাত্র ২০ বছর ১৯৬ দিন বয়সে আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং ২০১১ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েন।
সবচেয়ে বেশি বয়সি সেঞ্চুরিয়ান : অবশ্য সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি দখলে রেখেছেন শ্রীলঙ্কার তিলকারতেœ দিলশান। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৪ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ড গড়েন তিনি। তখন তার বয়স ছিল ৩৮ বছর ১৪৮ দিন।
বিশ্বকাপে দ্বিশতক : বিশ্বকাপে দ্বিশতক আছে দুটি। ২০১৫ বিশ্বকাপে উইন্ডিজ দানবীয় ব্যাটার ক্রিস গেইল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬টি ছক্কা ও ১০টি চারে ১৪৭ বলে ২১৫ রানের ইনিংস খেলেন। এটি বিশ্বকাপের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। একই আসরে এবার উন্ডিজের বিপক্ষে ১৬৩ বলে ২৩৭ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলেন কিউই ব্যাটার মার্টিন গাপটিল। ২৪টি চার ও ১১টি ছক্কার ইনিংসটি এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর।

– হাসান ইমাম

ওয়ানডে বিশ্বকাপের রোল অব অনার

সাল চ্যা¤িপয়ন রানার্স আপ ফলাফল আয়োজক
১৯৭৫ ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭ রানে জয়ী ইংল্যান্ড
১৯৭৯ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইংল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯২ রানে জয়ী ইংল্যান্ড
১৯৮৩ ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারত ৪৩ রানে জয়ী ইংল্যান্ড
১৯৮৭ অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া ৭ রানে জয়ী ভারত ও পাকিস্তান
১৯৯২ পাকিস্তান ইংল্যান্ড পাকিস্তান ২২ রানে জয়ী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড
১৯৯৬ শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়া শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা
১৯৯৯ অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয় ইংল্যান্ড
২০০৩ অস্ট্রেলিয়া ভারত অস্ট্রেলিয়া ১২৫ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও
কেনিয়া
২০০৭ অস্ট্রেলিয়া শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়া ৫৩ রানে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ
২০১১ ভারত শ্রীলঙ্কা ভারত ৬ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা
২০১৫ অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড
২০১৯ ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ড বাউন্ডারি কাউন্টে জয়ী ইংল্যান্ড

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়