প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসর হবে টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। এবারের এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগেই যেন নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করে রেখেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। কেননা এবার তিনি মাঠে নামবেন, আসন্ন আসরে বিশ্বকাপ খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘বিশ্বকাপে’ সবচেয়ে বেশি রান করা ক্রিকেটার হিসেবে। বল হাতে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে এবার টুর্নামেন্টটি খেলবেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক।
২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার টুর্নামেন্টে খেলছেন সাকিব। বিশ্বকাপের সেই আসর থেকে ২০১৯ আসর পর্যন্ত তিনি ২৯ ম্যাচের ২৯টি ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন। এর মধ্যে তার মোট রান ১১৪৬, যেখানে গড় ৪৫ দশমিক ৮৪ এবং স্ট্রাইক রেট ৮২ দশমিক ২৬। বিশ্বকাপে সাকিবের ২টি সেঞ্চুরি রয়েছে, তাছাড়া ফিফটি রয়েছে ১০টি। তার খেলা ২৯ ইনিংসের মধ্যে একটি ০ রানের ইনিংসও আছে। বিশ্বকাপে সাকিবের হাঁকানো বাউন্ডারির সংখ্যা ১০৭ ও ছক্কার সংখ্যা ৮।
অন্যদিকে বল হাতে এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করা ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক। ২০১৫ ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে তিনি ১৮টি ম্যাচের ১৮টি ইনিংসে বল করেছেন। এর মধ্যেই তিনি মোট ৪৯টি উইকেট শিকার করেন। তার সবচেয়ে ভালো বলিং ফিগার ২৮ রান খরচে ৬ উইকেট শিকার।
২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ছয়টি ম্যাচ খেলে জয় পায় তিনটিতে। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৩৩০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৮৪ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৭৫ রান করেন সাকিব। বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৫০ রান খরচে তুলে নেন এইডেন মার্কামের উইকেট। ২১ রানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ৩২২ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেয় উইন্ডিজরা। সাকিব বল হাতে ৫৪ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট। ব্যাট করতে নেমে সাকিবের মাত্র ৯৯ বলে ১২৪ রানের ইনিংসের পাশাপাশি লিটনের অপরাজিত ৯৪ রানের সুবাদে ৯.৩ ওভার ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয় পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৬২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে ৫১ রান করার পর বল হাতে ২৯ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ৫ উইকেট, দল জিতে সহজেই। বাংলাদেশের জয় পাওয়া তিন ম্যাচেই ম্যাচসেরার পুরস্কার পান সাকিব। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে হারার ম্যাচে ৬৪, ইংল্যান্ডের কাছে ১০৩ রানে বিধ্বস্ত হওয়ার ম্যাচে ১১৯ বলে ১২১ ও অজিদের কাছে ৪৮ রানে হারার ম্যাচে ৪১ বলে ৪১ রান করেন সাকিব। সাকিব গত বিশ্বকাপে ছিলেন স্বপ্নের মতো ফর্মে। কিন্তু সাকিবকে সঙ্গ দিতে পারেননি তেমন কেউই। ফলে গ্রুপপর্বেই বিদায় নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এবারের দল নিয়ে আশাবাদী সাকিব। দারুণ ছন্দে রয়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত, তাওহিদ হৃদয়ের মতো তরুণদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ মুশফিকরাও। দলের বোলিং আক্রমণও আগের তুলনায় বেশ পরিণত। সম্প্রতি শেষ হওয়া এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দল ভারতকে সুপার ফোরে হারানোর পর সম্প্রচার মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘আমরা খুব ভালো একটা দল পেয়েছি। দলের অনেকে ইনজুরিতে আছে, কেউ কেউ যাওয়া আসার মধ্যে আছে। যেটা আসরে আমাদের সহায়তা করেনি। আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বকাপে দল হিসেবে আমরা ভয়ংকর হবো।’
সাকিব প্রথম জাতীয় দলে সুযোগ পান ২০০৬ সালের জিম্বাবুয়ে সফরে। ওই সিরিজেই হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। সে বছরই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। পরের বছরই ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে সাদা পোশাকে অভিষেক হয়। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির ইনজুরির কারণে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিব। তার নেতৃত্বেই ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ। সাকিবের নেতৃত্বে দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সিরিজে জয় পায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।