প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন

আগের সংবাদ

ব্যাখ্যা চায় ক্ষুব্ধ গণমাধ্যম : গণমাধ্যমের বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকির প্রতিক্রিয়া

পরের সংবাদ

পাকিস্তানকে হারিয়ে আট বছর পর পদক জিতল জ্যোতিরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এশিয়ান গেমসের নারী ক্রিকেট ইভেন্টে গতকাল পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে বাংলাদেশ। আগেই ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হেরে রৌপ্য পদক হাতছাড়া করে টাইগ্রেসরা। এরপর পাকিস্তানকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের দিকেই নজর ছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি নারীদের হারিয়ে আট বছর পর এশিয়ান গেমসের কোনো পদক জিতল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
২০১৮ জাকার্তা এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ কোনো পদক পায়নি। গত গেমসে অবশ্য ক্রিকেট ছিল না। ২০১০ ও ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল রৌপ্য পেয়েছিল। দুই টুর্নামেন্টেই পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে স্বর্ণ হারিয়েছিল। এবার সেই পাকিস্তানকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জিতল বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের নারীদের ৬৪ রানে আটকে দিয়ে ব্রোঞ্জ জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান। হাংজুর উইকেটে এই রান তোলাও রীতিমত কষ্টকর। রান তাড়া করতে বাংলাদেশকে ১৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হয়েছে। ৬৫ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ স্বাভাবিক সূচনাই করেছে। শামীমা সুলতানা ও সাথী রাণী ওপেনিং জুটিতে ২৭ রান করায় ভালো ভিত পায় বাংলাদেশ। ৩৪ রানের মধ্যে তিন উইকেট পড়লে বাংলাদেশ একটু চাপে পড়ে। পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা ধারাবাহিক রান করে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান।
পাকিস্তান স্পিনার নাশা সান্ধুর তিন উইকেট বাংলাদেশকে খানিকটা চাপে রাখে। পাকিস্তান বাজে ফিল্ডিং ও ক্যাচ ড্রপ না করলে বাংলাদেশকে জয় পেতে আরো বেগ পেতে হতো। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা অবশ্য চাপে ভেঙে পড়েনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট হাতে নামে পাকিস্তানি ওপেনার শাওয়াল জুলফিকার ও সিদ্রা আমিন। প্রথম ওভারেই শাওয়ালকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান মারুফা আক্তার। এরপর দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে নাহিদা আক্তারের শিকারে পরিণত হন আরেক ওপেনার সিদ্রা। দুই ওভারে ৬ রানের সংগ্রহে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। এর মধ্যে থিতু হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনে নামা সাদাফ শামাস। চারে নামা মুনিবা আলিও রানের খাতা না খুলে আউট হলে মনোবল ধরে রাখতে পারেননি সাদাফ। তিনিও ফিরে যান ১৩ রানের ইনিংস খেলে। ৮ ওভার ২ বল শেষে মাত্র ১৮ রানের সংগ্রহে চার ব্যাটারকে হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি নারীরা। এরপর রক্ষণাত্মক খেলায় দলের হাল ধরেন নাতালিয়া পারভিন ও অধিনায়ক নিদা দার। তারা যথাক্রমে ১১ ও ১৪ রানে আউট হওয়ার পর আলিয়া রিয়াজ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭ রানে আউট হন। বাকিদের মধ্যে উম্মে হানি ১ রানে ও দিয়ানা বাইগ শূন্য রানে আউট হওয়ার পর নির্ধারিত ২০ ওভার পর্যন্ত ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন নাশরা সান্ধু এবং সাদিয়া ইকবাল অপরাজিত ছিলেন ১ রানে।
বাঘিনীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন স্বর্ণা আক্তার। বাকিদের মধ্যে ২টি উইকেট তোলেন সানজিদা আক্তার মেঘলা এবং ১টি করে উইকেট তোলেন মারুফা, নাহিদা ও রাবেয়া খান।
ম্যাচ শেষে পদক জয়ের উল্লাসের ব্যস্ততার মাঝে নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান গণমাধ্যমকে। স্বর্ণ পদকের আশা নিয়ে এশিয়ান গেমস খেলতে গেলেও তাদের বাঘিনীদের মিশন শেষ হয়েছে ব্রোঞ্জে। তারপরও তৃপ্তি প্রকাশ করেছেন জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দল টুর্নামেন্ট খেলতে আসে সর্বোচ্চ অর্জনের জন্য। আমাদেরও তাই লক্ষ্য ছিল। কিছু না পাওয়ার চেয়ে, কিছু নিয়ে যাওয়া অবশ্যই ভালো।’
এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করা হয় ২০১০ সালে। এরপর থেকে টানা দুই আসরেই নারী ক্রিকেট দলের হাত ধরে রৌপ্য জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের পর এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট ছিল না। নয় বছর পর ফের ক্রিকেট ফিরলেও রৌপ্য পদক ধরে রাখতে পারেনি নারী দল। এ প্রসঙ্গে জ্যোতি বলেন, ‘রুপার পর স্বর্ণ পদক প্রত্যাশাটাই স্বাভাবিক। আমাদের ব্যাক অফ দ্য মাইন্ড কাজ করছে অন্তত খালি হতে ফিরে যাচ্ছি না।’
ব্রোঞ্জ পদক লড়াইয়ে গতকালের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই ছিল বাংলাদেশের। টসে জিতে ফিল্ডিং নেয়াটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। এটা স্বীকার করে অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা স্পিন নির্ভর। বোলাররা ভালো করেছে।’
গতকাল ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ব্যাটিং নিয়ে আফসোসের বিষয়টি অবশ্য আড়াল করে রাখলেন, ‘আফসোস না, যেটা চলে গেছে এটা ভাবলে আরো মনোবল হারাতে হয়।’
এশিয়ান গেমস নারী ক্রিকেট ইভেন্টের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অবশ্য ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি জ্যোতি। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাজঘরের পথ ধরেছেন মাত্র ২ রানের ইনিংস খেলেই। তার আউটের পর পাকিস্তানি স্পিনার সান্ধু অনেকটা চাপে রাখছিলেন বাংলাদেশকে। তারপরও দলের ওপর আস্থা ছিল জানিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘আমি আউট হলেও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমরা ম্যাচ জিতব। বরাবরই আস্থা রেখেছি দলের ওপর এবং ম্যাচ বের করতে পেরেছে তারা।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়