প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : আর মাত্র আট দিন পরই পর্দা উঠবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের। আসন্ন এই বিশ্বকাপ হবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের পঞ্চম বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট। মিডলঅর্ডার ব্যাটারও এর আগে চার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলেছেন। এবারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেলে তিনিও পঞ্চমবারের মতো ওয়ানডে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মর্যাদার আসরে অংশগ্রহণ করবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২৯টি বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারও সাকিব, তামিম ও মুশফিক। সফলতার পরিসংখ্যানে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। তারপরই আছে মুশফিক এবং দুজনের নিচে আছেন তামিম।
অলরাউন্ডার হিসেবে ২০০৭ বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ দলের হয়ে অনবদ্য অবদান রেখেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে তিনি ২৯ ম্যাচে ১১৪৬ রান করেছেন, যেখানে গড় ৪৫ দশমিক ৮৪। এটি বিশ্বকাপের মঞ্চে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের করা সর্বোচ্চ রান। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিবের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ১২৪ রানের। সেই ইনিংসে অপরাজিতও ছিলেন টাইগার অধিনায়ক। বিশ্বকাপে ২৯টি ম্যাচ খেলে তিনি ২টি সেঞ্চুরি করেছেন। বল হাতে সাকিব বিশ্বকাপের মঞ্চে শিকার করেছেন ৩৪টি উইকেট, যেখানে তার গড় রান খরচ ৩৫ দশমিক ৯৪। এর মধ্যে তিনি একবার ফাইফার তোলেছেন। বিশ্ব মঞ্চে সাকিব আল হাসানের সবচেয়ে ভালো বোলিং ফিগার ২৯ রান খরচে ৫ উইকেট শিকার। বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলার সময় বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ৮টি ক্যাচ ধরেছেন।
সমান ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ খেলা দ্বিতীয় সফল ক্রিকেটার বলা যায় মুশফিকুর রহিমকে। তিনি দলে উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে ভূমিকা রাখেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল উইকেটরক্ষক ব্যাটারও বলা যায় তাকে।
হোক সেটা বিশ্বকাপে, হোক সেটা দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিদেশীয় সিরিজে, হোক সেটা অন্য কোনো টুর্নামেন্টে। বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে মুশফিক মোট ৮৭৭ রান করেছেন, যেখানে তার গড় ৩৮ দশমিক ১৩। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে মুশফিকের করা একমাত্র সেঞ্চুরিটি ছিল ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস। উইকেটরক্ষক হিসেবে মুশফিকুর রহিম বিশ্বকাপের ম্যাচে ৭টি স্ট্যাম্পিং করেছেন এবং ক্যাচ ধরেছেন ২১টি।
বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ২৯টি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে কম সফল তামিম। মোট রান ও গড়ের দিক থেকে সাকিব-মুশফিকের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে আছেন তিনি। রক্ষণাত্মক মানসিকতায় খেলা এই ক্রিকেটার বিশ্বকাপে খেলা ২৯ ম্যাচে মোট ৭১৮ রান করেছেন, যেখানে তামিমের গড় রান ২৪ দশমিক ৭৫। ক্যারিয়ারে ৪টি বিশ্বকাপ খেললেও তামিম এই পর্যন্ত একটি সেঞ্চুরিও করতে পারেননি। বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে তার খেলা সর্বোচ্চ ইনিংসটি ৯৫ রানের। বাংলাদেশ দলের এই ওপেনার ব্যাটার হিসেবেই ভূমিকা রাখেন। তাই বিশ্বকাপে বল হাতে তামিম ইকবালের কোনো অর্জন নেই। তবে ২৯ ম্যাচে তিনি ১২টি ক্যাচ ধরেছেন। এখানে তিনি সাকিব আল হাসানের থেকে কিছুটা এগিয়ে আছেন।
২০০৭ সাল থেকে যারা বাংলাদেশের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ খেলছেন তাদের মধ্যে এখনো অবসরে না যাওয়া আরেকজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্রামের নামে দীর্ঘ সময় তাকে দলের বাইরে রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। টাইগার সমর্থকদের তীব্র সমালোচনার তোপে এবং বিশ্বকাপের আগে বাজিয়ে দেখতে চলমান নিউজিল্যান্ড সিরিজে তাকে দলে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও দলের হালটা শক্ত হাতে ধরার চেষ্টাই করেছেন রিয়াদ। তিনি ৪৯ রানে আউট হওয়ার পর বাংলাদেশ বেশিক্ষণ মাঠে টিকে থাকতে পারেনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যে এখনো বাংলাদেশের হয়ে ভালোভাবে লড়াই করতে সক্ষম, সেটাই প্রমাণ করে গত শনিবারের ম্যাচ। তিনি বিশ্বকাপে এই পর্যন্ত ১৭টি ম্যাচের ১৫টি ইনিংসে ব্যাটিং করেছেন। গড় হিসেবে ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকবেন রিয়াদই। তিনি ১৫ ইনিংসে মোট ৬১৬ রান করেছেন, যেখানে গড় রান ৫১ দশমিক ৩৩। সর্বোচ্চ রানের দিক থেকেও তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন। বিশ্বকাপে তিনি সর্বোচ্চ ১২৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে রিয়াদের সেঞ্চুরি ও ফিফটি ২টি করে। বল হাতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিশ্বকাপে মোট ৪৬ ওভার বল করেছেন। এর মধ্যে তিনি একটি মেডেন ওভার দিয়ে ৪টি উইকেট শিকার করেছেন। তার সবচেয়ে ভালো বোলিং ফিগার ৩০ রান খরচে ১ উইকেট।
এই চার ক্রিকেটারের মধ্যে সাকিব আল হাসান বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১১ বিশ্বকাপে তার অধিনায়কত্বেই খেলেছে টাইগাররা। আসন্ন বিশ্বকাপে ফের বাংলাদেশের অধিনায়কের ভূমিকায় থাকবেন সাকিব। তখন এই অলরাউন্ডারের অভিজ্ঞতায় ঘাটতি থাকলেও বিশ্বের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এখন সাকিব। তাছাড়া এবার তিনি ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপও খেলবেন। সব মিলিয়ে সাকিবের নেতৃত্বে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরে বাংলাদেশের ভালো করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।