ইউরোপীয় কাউন্সিল : জাতিসংঘ ‘অথর্ব ও খোঁড়া’ হয়ে গেছে

আগের সংবাদ

পাল্টাপাল্টি আল্টিমেটাম! : বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম আ.লীগের, ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে খালেদার মুক্তি চায় বিএনপি

পরের সংবাদ

সংখ্যালঘু কমিশন এবার বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন সময় দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, অবৈধভাবে ভূমি দখল ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার লাগাম টানতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করাসহ বেশ কিছু দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন দেশের সংখ্যালঘু নেতারা। সচেতন মহল দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করলেও কমিশন গঠনে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করাসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেছে। নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যেই জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার। সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার পর কমিশন যেভাবে সুপারিশ করবে সেই আলোকেই সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় বিভিন্ন আইন প্রণয়ন যুক্তিযুক্ত হবে বলে মত দিয়েছেন তিনি। প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন আশা করছি। গত নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মহাসমাবেশ থেকে সব রাজনৈতিক দলের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে ছিল- জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি এবং পার্বত্য ভূমি কমিশনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা ভূমি কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন প্রভৃতি। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিটি ছাড়া অন্য দাবিগুলোকে নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে আওয়ামী লীগ, যা ছিল সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত। যৌক্তিক এসব দাবির সমর্থনে ইশতেহারে প্রতিশ্রæত জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ কয়েকটি দাবি পূরণের অঙ্গীকার এতদিনেও বাস্তবায়ন না হওয়া হতাশা ও দুঃখজনক। কমিশন গঠন না হওয়া ও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীদের জামিনে ছাড় পাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর একের পর এক নির্যাতন ও নিপীড়ন চলছে, যা বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন ও অসাম্প্রদায়িক দেশে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সাধারণ মানুষের যন্ত্রণার পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা মনে করি, আইন ও কমিশন বাস্তবায়ন হলে সংখ্যালঘুরা অভিযোগ করা, তদন্ত দাবি করা এবং তথ্য দেয়ার একটি নির্ভরযোগ্য স্থান পাবে। এতে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অনেকাংশেই কমে আসবে। আমরা সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখতে চাই। জাতিগতভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, নাগরিক অধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে রাষ্ট্রকেই ভূমিকা পালন করতে হবে। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের পবিত্র শারদীয় দুর্গোৎসব। আগের বছরগুলোতে দুর্গাপূজার সময় দেশে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আমরা এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আর চাই না। পূজা যেন শঙ্কাহীন হয় সে বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনকে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় যে কমিশন গঠনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল অবিলম্বে তার বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি। সংখ্যালঘু সুরক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময় স্মারকলিপি আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। প্রতিশ্রæতি পূরণে সরকারের আন্তরিকতা দেখতে চাই। আগামী নির্বাচনের আগেই আমরা এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়