সার্ভারের রক্ষণাবেক্ষণ : আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত ইসির এনআইডি সেবা বন্ধ

আগের সংবাদ

দাম চড়া, সরবরাহেও টান : কয়েকটি পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হয়নি, আরো ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি

পরের সংবাদ

শিক্ষকরা বদলির সুযোগ থেকে বঞ্চিত কেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় হাজার হাজার শিক্ষক তীব্র মনোকষ্ট ও অর্থ সংকটে ভুগছেন। সারাদেশে এমপিওভুক্ত বিভিন্ন ধরনের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) ৫ লাখের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক আছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন-ভাতার সবচেয়ে বড় অংশ (মান্থলি পে-অর্ডার) সরকার থেকে পেয়ে থাকেন। পূর্বে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হতো। বর্তমানে সরকার ‘এনটিআরসিএ’র (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) মাধ্যমে জাতীয় মেধা তালিকার ভিত্তিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ করে থাকে। ২০১৬ সালের পর এখন পর্যন্ত তিনটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রায় ১ লাখের মতো শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। নিজ জেলা-উপজেলায় এসব শিক্ষকের নিয়োগ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবেদনের গোলকধাঁধায় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষক নিজ উপজেলা-জেলার বাইরে দেশের দূর-দূরান্তে নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়া চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা খুব সামান্যই। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির এই সময়ে একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক পরিবার নিয়ে নিজ উপজেলা-জেলার বাইরে গিয়ে কীভাবে সামান্য বেতনে (শুরুতে স্কুল পর্যায়ে প্রায় ১৩ হাজার, কলেজ পর্যায়ে প্রায় ২২ হাজার) সংসার চালাবেন- এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কখনো ভেবেছে কি? নিজ এলাকা রেখে অন্য এলাকায় গিয়ে চাকরি করতে গিয়ে থাকা-খাওয়া বাবদ শিক্ষকের মাত্রাতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। বেতনের পুরোটা খরচ করার পরও শিক্ষককে ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে! শত শত কিলোমিটার দূরে চাকরি হওয়ায় সামান্য বেতনের এমপিওভুক্ত হাজার হাজার শিক্ষক বেদনাভরা মন নিয়ে নিজের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। বলতে গেলে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষকের পরিবার এখনো দুটি- একটি তার নিজের চাকরিস্থল, অন্যটি গ্রামের অসুস্থ বাবা-মায়ের পরিবার! মূল্যস্ফীতির এই সময়ে দুটি পরিবারের খরচ চালানো মোটেও স্বস্তির বিষয় নয়। বদলি জটিলতা দূর হলে শিক্ষকরা পাঠদান সংশ্লিষ্ট কাজে আরো বেশি সময় ও মনোযোগ দিতে পারবেন বলে মনে করি।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেহেতু সরকার শিক্ষক নিয়োগ দেয় সেহেতু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে শূন্য পদে বদলির ব্যবস্থা করা কঠিন কোনো ব্যাপার নয়। বদলির সুযোগ একজন চাকরিজীবীর অধিকার। এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষক, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষকদের বিশাল একটা অংশ মুখিয়ে আছেন বদলির জন্য। বদলির মতো ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার শিক্ষকদের অবশ্যই আছে। অন্যান্য সব চাকরিতে বদলির সুযোগ থাকলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বঞ্চিত হবেন কেন? এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি। ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’-এর ১২.২ ধারায়ও বদলির নীতিমালা প্রণয়নের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। বদলি ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বারবার আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগই দেখা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাই পারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে বদলির ব্যবস্থা চালু করতে। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সাধন সরকার : শিক্ষক ও পরিবেশকর্মী, মুন্সীগঞ্জ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়