সার্ভারের রক্ষণাবেক্ষণ : আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত ইসির এনআইডি সেবা বন্ধ

আগের সংবাদ

দাম চড়া, সরবরাহেও টান : কয়েকটি পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হয়নি, আরো ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি

পরের সংবাদ

ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুর : দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীলতা নয়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে থাকে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা বাজারের সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা রাতের আঁধারে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাম্বুলখানা বাজার সার্বজনীন মন্দিরে দুর্গা প্রতিমাসহ বিভিন্ন প্রতিমা তৈরির মাটির কাজ চলছিল। সোমবার রাতে প্রতিমা তৈরির কারিগররা এবং মন্দির কমিটির নেতারা সেখান থেকে বাড়ি চলে যান। সকালে মন্দিরে এসে দেখতে পান মন্দিরের গণেশ মূর্তির মাথার অংশ, ল²ীর দুই হাত ও দেবী দুর্গার বাম হাত ভাঙা রয়েছে। পরে মন্দির কমিটির নেতারা বিষয়টি প্রশাসনকে জানান। এর আগে ২০২১ সালে রাতের আঁধারে এই মন্দিরের কালী প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও পূজার সময় হামলা-ভাঙচুরের মতো ঘটনা নতুন নয়। সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরের মতো এসব ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আশ্বাস দেয়া হলেও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় ন্যক্কারজনক এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাও প্রায়ই ঘটছে। ঘটনাগুলো দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে না পারা উদ্বেগজনক। ২০২১ সালে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময় যেভাবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। হামলার শিকার ভুক্তভোগীরা পুনরায় হামলার ভয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে মামলা করতে ভয় পান। হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে উন্নতি ঘটেছে; সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবকেই ধ্বংস করতে চায় মৌলবাদী জনগোষ্ঠী। আসলে মুসলিমদের সঙ্গে হিন্দু ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে ফায়দা লুটছে কেউ কেউ। সত্যি সত্যি ধর্মের অবমাননা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না অথবা হলেও প্রকৃত অপরাধীর পরিবর্তে টার্গেট হয়ে পড়ছে সামগ্রিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ প্রবণতা বিপজ্জনক। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পকে প্রতিহত না করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শৈথিল্য এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতার দায় রয়েছে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে অবিলম্বে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর দুর্গাপূজার সময় দেশে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আসন্ন পূজায় এবার প্রতিটি পূজামণ্ডপ ও আশপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সতর্কতার বিকল্প নেই। পূজা যেন শঙ্কাহীন হয় সে বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনকে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়