নাটোর : ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

রাজপথে ফের শক্তির মহড়া : বিএনপির ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পর দিনই টানা কর্মসূচি দিল আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়েও র‌্যাঙ্কিংয়ে দুইয়ে ভারত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : এশিয়া কাপের ইতিহাসে এমন ফাইনাল আর দেখেনি ক্রিকেটপ্রেমীরা। ৬ ওভার শেষ হওয়ার আগেই মাত্র ১২ রানে ৬টি উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়েছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ৫০ রান পর্যন্তই ইনিংস টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল তারা। যার বিপরীতে মাত্র ৬ ওভার ১ বলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। দুর্দান্ত এই জয়ের পরও আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করতে পারেনি রোহিত শর্মার দল। তাদের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তানই রয়ে গেছে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।
ভারত দল এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিনই গত রবিবার ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের হালনাগাদ করে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। তখন দেখা যায়, ভারত ও পাকিস্তান দুই দলেরই রেটিং পয়েন্ট সমান ১১৫ করে। তবে পাকিস্তান সেই ১১৫ রেটিং পয়েন্ট করেছে ভারতের চেয়ে কম ম্যাচ খেলে। একই সঙ্গে ভগ্নাংশের ব্যবধানেও এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান দল। যার কারণে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে বাবর আজমের দলই রয়ে গেছে, আর ভারত অবস্থান করছে দুইয়ে।
পুরো এশিয়া কাপে ভারত একটি মাত্র ম্যাচেই হেরেছিল। সেটি ছিল, সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে। টাইগাররা সেদিন মাঠে নেমেছিল সব সমীকরণে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে। নিয়মরক্ষার ম্যাচে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা জয় পেয়েছিল ৬ রানের ব্যবধানে। যদি সেই ম্যাচটি ভারত না হারত, তাহলে এশিয়া কাপের শিরোপা জয়ের দিনই র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকত ভারত। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপে ভরাডুবির পরও র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে বাবর আজমের দল। অস্ট্রেলিয়া নেমে গেছে তিন নম্বরে। তাদের রেটিং পয়েন্ট ১১৩। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ, ইংল্যান্ড পঞ্চম ও নিউজিল্যান্ড ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান তালিকার ৭ নম্বরে। এশিয়া কাপের ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কা রয়েছে অষ্টম স্থানে, আর আফগানদের অবস্থান নবমে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ রয়েছে তালিকার ১০ম স্থানে।
অষ্টমবার এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে বেশ মোটা অঙ্কের প্রাইজমানি পেয়েছে চ্যাম্পিয়ন ভারত। একইদিনে প্রাইজমানি পেয়েছে রানার্সআপ শ্রীলঙ্কাসহ বাকি দলগুলোও।
এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা দুই দলের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকারও বেশি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন ভারত পেয়েছে ২ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ১৯ লাখ টাকার উপরে। আর রানার্সআপ শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ১ কোটি টাকারও বেশি প্রাইজমানি।
এশিয়া কাপের মোট ৬ দলের মধ্যে তলানিতে থাকা দলটি বাদে বাকি ৫ দলের জন্য প্রাইজমানি বরাদ্দ ছিল। সুপার ফোরে তৃতীয় স্থানে থেকে এশিয়া কাপ শেষ করেছে বাংলাদেশ। যার কারণে ৬২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার পেয়েছে টাইগাররা, যা ৬৮ লাখ টাকার বেশি। চতুর্থ স্থানে থাকা পাকিস্তান পেয়েছে ৩৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। আর পঞ্চমে থেকে আসর শেষ করা আফগানিস্তান পেয়েছে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ লাখ টাকার উপরে।
তাছাড়া প্রতি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়রা ৫ হাজার মার্কিন ডলার করে পেয়েছেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় সাড়ে ৫ লাখ টকার বেশি।
পুরস্কার বরাদ্দ ছিল কলম্বোর মাঠকর্মীদের জন্যেও। বর্ষার মাঝে মাঠকে খেলার উপযোগী করতে নিরন্তর পরিশ্রম করেছেন তারা। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের পুরস্কার ছিল তাদের জন্য।
এশিয়া কাপ এবার আয়োজিত হয়েছে দুটি দেশে। পাকিস্তানের সঙ্গে এবার সহআয়োজক দেশ হিসেবে ছিল শ্রীলঙ্কা। ৪টি বাদে প্রতিটি ম্যাচই হয়েছে লঙ্কানদের মাটিতে। আর বর্ষার কারণে লঙ্কায় এশিয়া কাপ ছিল বৃষ্টি সমস্যায় জর্জরিত। ফাইনাল ম্যাচেও হানা দিয়েছিল বৃষ্টি, যার কারণে ম্যাচ শুরু হতে ৪০ মিনিট দেরি হয়েছিল। বৃষ্টির আক্রমণে ম্যাচ পরিচালনা কষ্টকর। বারবার মাঠ ঢাকা ও উন্মুক্ত করার কাজটা ভালোভাবেই করেছেন মাঠকর্মীরা। তাই এশিয়ার ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এবং অন্যতম আয়োজক শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড মাঠকর্মীদের আর্থিক পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ লাখ টাকা দেয়া হবে মাঠকর্মীদের।
শ্রীলঙ্কা পর্বের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে ও কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। এর মধ্যে গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলো হয়েছিল ক্যান্ডিতে, আর ফাইনালসহ সুপার ফোরের ম্যাচগুলো ছিল কলম্বোতে। ক্যান্ডিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গিয়েছিল। সেখানেও মাঠকর্মীরা চেষ্টা করেছিলেন। কলম্বোতে প্রায় প্রতি ম্যাচেই বৃষ্টি হয়েছে। ম্যাচের মাঝে বৃষ্টির সময় দেখা গিয়েছে কীভাবে পুরো মাঠ ঢেকে দিয়েছেন মাঠকর্মীরা। এসিসি প্রধান জয় শাহ বলেন, ‘তাদের কথা খুব একটা বলা হয় না। কিন্তু তারাই এখানে আসল নায়ক। তাই এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিল এবং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ড ঠিক করেছে যে, কলম্বো এবং ক্যান্ডির পিচ প্রস্তুতকারক এবং মাঠকর্মীদের ৫০ হাজার ডলার দেয়া হবে।’
ফাইনাল ম্যাচে ৬ লঙ্কান ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ। তার দুর্দান্ত বোলিংয়েই মাত্র ৫০ রানে আটকে গিয়েছিল স্বাগতিকরা। ম্যাচ সেরা হয়ে নিজের আর্থিক পুরস্কার মাঠকর্মীদের হাতে তুলে দেন এই ভারতীয় পেসার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়