ফেসবুকে প্রেম করে ধর্ষণের মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

দাম নির্ধারণের তোয়াক্কা নেই : সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না তিন পণ্য. ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানা

পরের সংবাদ

ক্রিকেটের জোয়ার ভাটা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

যে দেশের জাতীয় খেলা হাডুডু। সে দেশের গ্রামে-গঞ্জে-মাঠে বসত হাডুডু খেলার আসর। ফুটবলের কদরটাও ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। আর পুরস্কার থাকত গরু-ছাগল এবং টিভি-রেডিও ইত্যাদি। অবশ্য সেখানে ক্রিকেটের কোনো ছিটেফোঁটাও ছিল না। এমনকি ১৯৯৭ সালে ক্রিকেটাররা আইসিসির আগে মাঠের অভাবে রাজপথে নেমেছিলেন মাঠের দাবিতে।
আর বাকি ইতিহাসটা রচিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে। সেদিন বৃষ্টিবিঘিœত ফাইনাল ম্যাচে কেনিয়ার বিরুদ্ধে শেষ বলে ১ রান এসেছিল হাসিবুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। আর এই মধুর বাণীগুলো বেতারের মাধ্যমে ভেসে এসেছিল চৌধুরী মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ শরাফত এবং শামীম আশরাফ চৌধুরীর কণ্ঠে। মাঠে-ঘাটে, চায়ের দোকানে, স্টেশনে আর চলতি পথে বেতারের বাণীতে সারাদেশ জয়ের আনন্দে গর্জে উঠেছিল। হয়েছিল রং ছিটাছিটি এবং জয়ের মিছিল। পুরো বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে সেই দিনটি। বিশ্বকাপে সুযোগটা অবশ্য তার আগের ম্যাচেই স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে পায় বাংলাদেশ। আর সেদিন তো হয়েছিল একেবারে আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন। ক্রিকেট হয়ে উঠল মানুষের প্রিয় খেলা। ক্রিকেটাররা হয়ে ওঠে নয়নের মধ্যমণি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে জোয়ার বইতে শুরু করল।
ক্রিকেটকে সবাই আপন করে নিল। এমনকি ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপের আসরে পাকিস্তানকে পরাজিত করে সেই জোয়ারটাকে আরো বেগবান করল। সঙ্গে ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাসও পেল বাংলাদেশ। কিন্তু সমস্যাটা হলো এরপরই। সেভাবে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বাংলাদেশকে। একের পর এক পরাজয়ে হতাশার ছায়া পড়ল দলের মাঝে। হতাশাগ্রস্ত পুরো জাতি। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপটাও কেটে গেল এভাবেই। এরপর বাংলাদেশ আবার জয়ের ধারায় ফিরতে থাকল এবং ২০০৭ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করল। আর সবচেয়ে ভালো করল ২০১৫ সালে। সেবার কিন্তু বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। আর তাই তো এ দেশের ক্রিকেটে একটি রব উঠল পঞ্চপাণ্ডবের দল। বিশেষ করে ওয়ানডেতে হয়ে উঠল শক্তিশালী। যে দলের নেতৃত্বে ছিলেন মাশরাফি আর সঙ্গে ছিল বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব, দেশ সেরা ওপেনার তামিম, মিষ্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিক এবং সাইলেন্ট কিলার মাহমুদউল্লাহ।
আগামী অক্টোবরেই আরো একটি বিশ্বকাপের আসর। যেটি বসছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। স্বপ্ন দেখছে দেশের মানুষ নতুন কিছুর আশায়। আর যে স্বপ্নটা দেখতে শিখিয়েছে দেশের যুবারা ২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে। কথা তো একটাই, বড়রা পারলে ছোটরা কেন নয়? আসলেও স্বপ্ন তো দেখতেই পারে মানুষ। দেশের মানুষেরই বা দোষটা কোথায়? মাশরাফি নেই কিন্তু অন্যরা তো আছে। বাকি পাণ্ডবদের সঙ্গে আছেন লিটন, শান্ত ও হৃদয়। কিন্তু ইনজুরি আর ধারাবাহিকতার অভাবে স্বস্তিতে নেই এই মুহূর্তে দেশের মানুষ। যার মূল কারণ সদ্য এশিয়া কাপের পারফর্ম্যান্স। ক্রিকেটাররাও যে হতাশায় ভুগছেন সেটা কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে। আর মূলকারণ কিন্তু টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা। অনেকেই সুযোগ পেয়ে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারছেন না। তবে বোলিংয়ে নতুনভাবে জেগে উঠেছে বাংলাদেশের পেসার তাসকিন, মোস্তাফিজ, শরীফ, হাসান, এবাদতরা। যার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বোলিংয়ের খরাটা কেটেছে। তবে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে বোলারদেরও কিছুটা সহযোগিতার চেষ্টা করতে হবে। কারণ তিনজন বোলার দলে খেললে তাদেরও কিছু রান করা দরকার। আর তা না হলে দল সফল হওয়া দুরূহ ব্যাপার। যেমন- আফগানিস্তানের বোলাররাই কত সুন্দর ব্যাট করছে! আর তাই তো বোলারদেরও একটু ব্যাটিংটা অনুশীলন করা জরুরি। তাহলে অবশ্যই সম্ভব। আর আমাদের দেশের দর্শকদেরও ধৈর্য ধরে ক্রিকেটারদের সাহস দিতে হবে। নেতিবাচক মন্তব্য থেকে দূরে থাকতে হবে। পরাজয় খেলার একটি অংশ। এটা মেনে নিতেই হবে। পাশাপাশি খেলোয়াড়দেরও মাঠের বাইরের কথায় হতাশ হওয়া উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, দর্শকরাও তাদের ভালোবাসেন, দেশকে ভালোবাসেন। তাই তারা তাদের শাসন করতে চান। এটা মনে করেই সব ব্যর্থতার গøানি মুছে, নতুনভাবে আবারো জয়ের জোয়ার বইয়ে দিতে হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ২০২৩ সালেও।

মো. আব্দুর রহমান : বালিয়াডাঙ্গা কালীগঞ্জ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়