‘রাজাকারদের জনসংখ্যা বেড়েছে’

আগের সংবাদ

চাপ কমলেও সতর্ক থাকবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

একটি সেলফি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জি-২০ সম্মেলনের এক ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তার কন্যা পুতুলের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যাচ্ছে। এ ছবিটি বর্তমানে নেট দুনিয়ায় বিলিয়ন বিলিয়ন লাইক এবং কমেন্ট পড়া ছবি। ছবিটি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অনেকেই নানানভাবে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। মূলত অন্য সময় হলে এ ছবি সর্বোচ্চ পত্রিকার পাতায় শিরোনাম হতো, এর চেয়ে বেশি কিছু হতো না। কিন্তু বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের একেবারে শেষের দিকে যেখানে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করে ফেলেছে। এ নিয়ে দেশের একটি দল এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, আর ড. ইউনূস মতো নোবেল বিজয়ী মানুষকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে ঠিক সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এ স্বপ্রণোদিত সেলফি অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছে।
অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে বেশ জনপ্রিয় এবং তার মেধা ও বুদ্ধিমত্তা এত প্রখর যে বিশ্বের জাঁদরেল নেতারা পর্যন্ত তার সামনে এলে তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে যান। মূলত জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করলেও সে বিষয়ে মিডিয়ায় তেমন তোলপাড় সৃষ্টি না হলেও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তোলা সেলফি নিয়ে। মূলত এতদিন বাংলাদেশের কিছু দল বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সিনেটরকে দিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্য দেয়াচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে তারা কেউ বাংলাদেশের একটি দলের চাহিদা মোতাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেননি। তারা শুধু বাংলাদেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন, এতে তাদের মন ভরেনি। তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসুক। কিন্তু জি-২০ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন সেলফি দেখে তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা সবাই এখন মনে করছেন বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন সম্ভবত তেমন কিছু বলবেন না। বিশ্লেষকদের মধ্যে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন, এই সেলফির পর বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন প্রশাসনের অবস্থান সম্পর্কে অনেকটাই পরিষ্কার ধারণা হওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেক আগেই বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। মূলত বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগে দেশে এবং ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি জঙ্গি উত্থানের যে আশঙ্কা ছিল তা এখন আর নেই। সেদিক থেকে ভারত নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে, আর তাই তারা বারবার বর্তমান সরকারকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
মূলত বাংলাদেশের চতুর্দিকে ভারত বেষ্টিত হওয়ায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব সর্বাগ্রে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে এবং জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সে সম্পর্ক আরো জোরদার করতে প্রতিটি সরকারপ্রধানই ভারত সফর করেছেন।
তেমন একটা মিশন নিয়েই বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন। এ সফরে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন বাণিজ্যিক চুক্তি ছাড়া দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও তারা মিলিত হয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফলপ্রসূ আলোচনার পর বিশ্ব যখন তাকিয়ে ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দিকে। ঠিক তখন জো বাইডেন নিজেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফিবন্দি হয়ে সবাইকে বার্তা দিলেন।

রতন কুমার তুরী : লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়