সন্তান জন্ম দিলেন ভারসাম্যহীন ভবঘুরে নারী

আগের সংবাদ

নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন

পরের সংবাদ

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বনাম বাংলাদেশ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনীতি ও ভূ-কৌশলগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বেশ গুরুত্ব বহন করে। মুক্তিযুদ্ধপূর্বকাল থেকে বর্তমান সময় অবধি বাংলাদেশকে ঘিরে বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশ, জোট ও সংস্থাগুলোর নিরবচ্ছিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলো সে কথারই সাক্ষ্য দেয়। মুক্তিযুদ্ধকালে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের শত্রæ-মিত্রদের তৎপরতা বিশ্লেষণ করলে এ কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, একাত্তরের সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শুধু একটি নতুন দেশ বা মানচিত্রের সৃষ্টি হয়নি, বরং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বিশ্বব্যবস্থায় নতুন ও বহুমাত্রিক সমীকরণেরও সূচনা হয়েছিল। তাই তো আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে গত বায়ান্ন বছরে বাংলাদেশকে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যেমন- প্রতিটি মুহূর্তে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থায় বিদেশি শক্তিগুলোর অনুপ্রবেশ প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও দায় রয়েছে। কারণ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর একটি পলিটিক্যাল ও আইডিওলজিক্যাল কমিটমেন্ট ও ম্যান্ডেট থাকা প্রয়োজন; যা সবার মধ্যে দেখা যায় না। অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ এবং অনুগত কতিপয় সংস্থার অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে এবং বিনা আমন্ত্রণে বিদেশি প্রতিনিধিরা পিঁপড়ার সারির মতো একের পর এক বাংলাদেশ সফর করছে। তাদের এমন কর্মকাণ্ড যেমন নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়, ঠিক তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতি প্রভাব বুঝতে ভাবনার খোরাক জোগায়।
মার্কিন নৌ কর্মকর্তা ও ইতিহাসবিদ আলফ্রেড থায়ার মেয়ান তার ঝবধ চড়বিৎ ঞযবড়ৎু-তে বলেছিলেন, ঞযড়ংব যিড় পড়হঃৎড়ষষবফ ঃযব ংবধ ড়িঁষফ পড়হঃৎড়ষ ঃযব ড়িৎষফ। যুক্তরাষ্ট্র এই তত্ত্বকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। তাই তো আধিপত্য ও নজরদারি বজায় রাখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রেরই অসংখ্য নৌ-স্থাপনা রয়েছে। গণমাধ্যম সূত্র বলছে, নিকট অতীতে মিয়ানমার ও ভারতের কাছ থেকে সমুদ্রসীমা বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর নিরঙ্কুশ ও সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে পেরেছে; যার মধ্য দিয়ে অর্থনীতির এক সীমাহীন সম্ভাবনাময় দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের মোট ১২টি বন্দরের মধ্যে ৩টি গভীর সমুদ্রবন্দর (চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা) বাংলাদেশের মালিকানাধীন যা পশ্চিমা শক্তি এবং তাদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের বাণিজ্য ও ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনই তাৎপর্যপূর্ণ চীন ও ভারতের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য; এবং এ ক্ষেত্রে সবার স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। তাই ভৌগোলিক অবস্থান ও সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত কূটনৈতিক বিজয় বাংলাদেশকে ভূ-রাজনীতির সমীকরণে আন্তর্জাতিকভাবে আরো বেশি সমীহযোগ্য করে তুলেছে। তাছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপকে কেন্দ্র করে চীন, মিয়ানমার ও ভারতের ভূ-নিরাপত্তা এবং এসবের মধ্যে মার্কিন কূটনীতি ও ভূ-রাজনীতি বাংলাদেশকে ভূ-কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ অগ্রাধিকার দিয়েছে। দ্বীপটিতে নেভাল-বেজ স্থাপন করে চীন, মিয়ানমার ও ভারতের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের দুরভিসন্ধি আমাদের নজরে এসেছে। যারই নঁঃঃবৎভষু বভভবপঃ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তৎপরতা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে বাসসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক মেরিটাইম ডোমেইন অ্যাওয়ারনেস ইনিশিয়েটিভের (আইপিএমডিএ) অধীনে সমুদ্র এলাকায় একটি অভিন্ন পরিচালনা কার্যক্রম উন্নয়নে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোতে রাডার প্রযুক্তি সরবরাহের পরিকল্পনা করেছে। বিষয়টি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের সরষরঃধৎু যবমবসড়হু প্রতিষ্ঠার অংশও বটে।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রকে নিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে এত মাতামাতির অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের ফরঢ়ষড়সধঃরপ ংঃঁহঃ। গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক দৃঢ়তার বিশেষ স্বাক্ষর রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ- পদ্মা সেতু নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাংকের নগ্ন রাজনীতি পরাভূত হয়েছে বাংলাদেশের অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও আত্মমর্যাদার কাছে। যা মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বড় ধরনের পররাষ্ট্রনৈতিক পরাজয়। সাম্প্রতিককালে, কোভিড ভ্যাকসিন পলিটিক্সেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দেনদরবারে সফল হয়েছে। বিশ্বশান্তির রূপরেখা উপস্থাপন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব মোকাবিলা তথা রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছে; যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসা ও স্বীকৃতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যেমন প্রভাবমুক্ত কণ্ঠে কথা বলছে ঠিক তেমনি বলছে ফিলিস্তিনের মানুষের জীবনাধিকার নিয়ে। অতিসম্প্রতি জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগ এবং নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব ব্রিকসের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই বহুমুখী বিশ্বে ব্রিকসকে একটি বাতিঘর হিসেবে প্রয়োজন। আমরা আশা করি- আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়ার সময় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া তথাকথিত পছন্দ ও বিভাজনকে ‘না’ বলা উচিত। তিনি সব ধরনের হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে বিশ্ব নেতাদের আহ্বান জানান। একটি উন্নয়নশীল দেশের এমন কূটনৈতিক দৃঢ়তা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বলিষ্ঠ পদচারণা কিছু দেশের গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে তারা নানা উপায়ে বাংলাদেশকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে। তারা গণতন্ত্রের নামে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদভিত্তিক অপশক্তিকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য যুগপৎ হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন রূপকল্প বিশ্ব-পর্যায়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। বধৎঃয.ড়ৎম-এর ভাষ্যমতে, ইধহমষধফবংয’ং বপড়হড়সরপ সরৎধপষব, ড়রিহম ঃড় ধ পড়সনরহধঃরড়হ ড়ভ পরারষ ংবপঃড়ৎ রহহড়াধঃরড়হ, পড়সসঁহরঃু পড়যবংরড়হ ধহফ ভড়ৎধিৎফ-ঃযরহশরহম ঢ়ঁনষরপ ঢ়ড়ষরপু। পাশাপাশি, মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলসহ আন্তর্জাতিক সব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সক্ষমতা দেখিয়েছে। আজ পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে বিশাল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করা গেছে; এটি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন ও মোট জাতীয় আয়কে ঊর্ধ্বমুখী সূচকে ত্বরান্বিত করেছে। আজ বাংলাদেশ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশে নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে রাশিয়া, চীন, জাপানের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেলসহ নানা প্রকল্পে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় রাশিয়া এবং চীনের এমন ক্রমবর্ধিষ্ণু অংশগ্রহণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের গেøাবাল এজেন্ডা হচ্ছে রাশিয়া ও চীনের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক সম্প্রসারণ রোধ করা। সে জায়গায় মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও কৌশল সফলতার মুখ তো দেখতে পারছেই না; উপরন্তু বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়া-চীনের সখ্য দিন দিন গভীর হতে দেখছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিকসের দ্রুতবর্ধমান উত্থান তারই একটি প্রোজ্জ্বল উদাহরণ। সদ্য সমাপ্ত ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের মাঝে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে কথা বলেছেন সেটাও যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে হয়। তিনি বলেছেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে বেইজিং। বাংলাদেশ যাতে অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে, সেজন্য দেশটিতে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন।
বর্তমান শতকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় প্রত্যেকটি দেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতির ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে এ অঞ্চলে বড় কোনো বিরোধ বা সম্মুখ সংকট নেই। পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের জিরো টলারেন্স নীতি আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে জোরদার ও টেকসই স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য ও সিদ্ধান্ত এদেশে মৌলবাদী শক্তির পুনর্জাগরণে অনুঘটকের কাজ করছে; যা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশটির বৈশ্বিক ঘোষণা ও অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে বাংলাদেশকে কোনো চাপের মুখে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রণেভঙ্গ দিলে চলবে না। কারণ ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল মধ্যরাতে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা বা সিইউএফএল জেটিঘাটে আটক ১০ ট্রাক অস্ত্রের বিষয়টি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং পরিকল্পিতভাবে সেসব অস্ত্র আনা হয়েছিল ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতের জন্য। পাশাপাশি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার একটি ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে যেতে হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের জলসীমা ও ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভবিষ্যতে যাতে কোনো সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম সংঘটিত হতে না পারে সে বিষয়ে আমাদেরই সচেষ্ট থাকতে হবে।
‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ বঙ্গবন্ধুর এই বৈদেশিক নীতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্ত করেছেন একটি প্রতিজ্ঞা ‘কারো কাছে মাথা নত করে নয়।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান; তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে, ১৯৭৪ সালে বৈশ্বিক খাদ্য সংকটে, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে এবং তৎপরবর্তী সময়ে দেশটির প্রতিকূল ভূমিকা আমরা ভুলে যাইনি। সে ক্ষত ভুলবার নয়; ফিনিক্স পাখির মতো আমরা আবারো জেগেছি নতুন শক্তিতে, নতুন শপথে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাঙালি ও বাংলাদেশ আত্মমর্যাদার প্রশ্নে কখনো আপস করে না, সার্বভৌমত্বের প্রসঙ্গে কখনো সমঝোতা করে না। আর বর্তমানের বাংলাদেশ যে ইস্পাত কঠিন মনোবলের ওপরে প্রতিষ্ঠিত, সে বাংলাদেশের সৌজন্যতাকে দুর্বলতা ভাবলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রনৈতিকভাবে আবারো ভুল করবে, যা প্রত্যাশিত নয়।

শেখ ফয়সল আমীন : কর্মকর্তা, বাংলা একাডেমি।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়