পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

ফাইনালে টাইগ্রেসদের স্বপ্নভঙ্গ

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে গতকাল ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৩১ রানে পরাজিত হয় লতা মন্ডলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ‘এ’ দল। হংকংয়ের মিশন রোড গ্রাউন্ডে ১২৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ বল বাকি থাকতেই ৯৬ রানে গুটিয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ইনিংস। সেমিফাইনালে হারের শঙ্কা কাটিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত রানার্সআপ হয়েই টুর্নামেন্ট শেষ করে। ফাইনালে ভারতের হয়ে ৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে এবং ২ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন কনিকা আহুজা। আর বল হাতে পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে আলো ছড়িয়ে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন শ্রেয়াঙ্কা পাতিল।
নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভালো করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের দল সাজানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটারদের দিয়ে। গতকাল ফাইনালে খেলা একাদশে ওপেনার সাথি রানি বাদে সবাই বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন। তবে টুর্নামেন্টের কোনো ম্যাচেই তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর উদাহরণ দেখা যায়নি। নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের সদ্য শেষ হওয়া প্রথম আসরে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে মুর্শিদা খাতুন একটি অর্ধশত রানই করতে পেরেছেন কেবল, টপ অর্ডারের বাকিদের মধ্যে কেউই ভালো কোনো ইনিংস উপহার দিতে পারেননি। অন্যদিকে ভারত নিজেদের দল সাজিয়েছে সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো করা ক্রিকেটারদের দিয়ে। তাছাড়া তাদের দলে ছিল বর্তমানে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা ক্রিকেটাররাও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে তারা বাংলাদেশ থেকে অনেক পিছিয়ে। তারপরও দাপট দেখিয়ে নারী ইমার্জিং এশিয়া কাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।
১২৮ রানের তাড়ায় ব্যাটিংয়ের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ নারী ‘এ’ দল। তবে সেই ধাক্কা সামলে জীবন জুনিয়র টাইগ্রেস ওপেনার সাথি। জীবন পেয়ে তিনি উইকেটে শক্ত অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা চালানোর সময় মান্নাত কাশিয়াপের করা দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার দিলারা আক্তার। তার ব্যাট থেকে ৭ বলে মাত্র ৫ রান যোগ হয়। এরপর কাশিয়াপের করা চতুর্থ ওভারে আউট হন প্রথম দিকে জীবন পাওয়া ওপেনার সাথি। তিনি প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ১১ বলে ২ চারে ১৩ রানের ইনিংস খেলে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরতে পারতেন অধিনায়ক লতা মন্ডল এবং সোবহানা মোশতারি। তবে লতা টুর্নামেন্টের প্রতিটি ম্যাচের মতো ফাইনালেও সমর্থকদের হতাশ করেন। শ্রেয়াঙ্কা পাতিলের বলে ৪ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান তিনি। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র ফিফটি করা মুর্শিদাও আউট হন ৭ বলে ১ রান করে। এর মধ্য দিয়ে চাপে পড়তে শুরু করে বাংলাদেশ। তবে আশার আলো হয়ে তখন মাঠে ছিলেন স্বর্ণা আক্তার এবং নাহিদা আক্তার। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর দলের ত্রাতা হয়েছিলেন নাহিদা। তার হাল ধরা ইনিংসের কারণেই বাংলাদেশ ফাইনালে পা রাখতে পেরেছিল। তিনি গতকালও দলের হাল ধরার চেষ্টাটা ভালো করেই করেন। তবে অপরপ্রান্তে থাকা স্বর্ণা ৯ রানে বিদায় নেয়ার পর সুলতানা খাতুন আউট হন ৪ রানে, মারুফা আক্তার বিদায় নেন ৩ রান করে এবং সবশেষে সানজিদা আক্তার মেঘলা সাজঘরে ফিরে যান ২ রান করে। শেষ পর্যন্ত নাহিদা ১৭ রানে অপরাজিত থাকলেও বাংলাদেশ ৯৬ রানে অলআউট হয়। ফলাফল দাঁড়ায় ৩১ রানে জয়ী হয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন। তাদের হয়ে ব্যাট হাতে ২৩ বলে অপরাজিত ৩০ রান ও বোলিংয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন কনিকা আহুজা। এছাড়া ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন শ্রেয়াঙ্কা পাতিল।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণের মাধ্যমে আটকে রাখেন মারুফা আক্তার, সানজিদা আক্তার মেঘলা এবং নাহিদারা। পাওয়ার প্লেতে তারা ১ উইকেট হারিয়ে ২৮ রানের দলীয় সংগ্রহ গড়তে পেরেছিল। পাওয়ার প্লেতে আউট হন ভারত ‘এ’ দলের নেত্বত্বে থাকা ওপেনার শ্বেতা সেহরাওয়াত। তিনি ২০ বলে ১৩ রান করে নাহিদা আক্তারের শিকার হন। এরপর উমা ছেত্রি সাজঘরে ফিরে যান ২০ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ২টি চার এবং ১টি ছক্কায়। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের রানকে ভালো একটা পর্যায়ে নিয়ে যান ভ্রিন্দা দিনেশ এবং গঙ্গাদি ত্রিশা। সুলতানা খাতুনের করা ১৩তম ওভারের প্রথম বলে রাবেয়া খানের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন ১১ বলে ৪ রান করা তৃষা। এরপর ভ্রিন্দার সঙ্গ দেন কনিকা আহুজা। তাদের মধ্যে ভ্রিন্দা ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রানের ইনিংস খেলে আউট হন।
আর কনিকা করেন ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান। দুই ব্যাটারের স্ট্রাইক রেটই ছিল ১২৪ এর বেশি। তাদের বিদায়ের পর সুমাইয়া তিওয়ারি ৩ রান করেন, শ্রেয়াঙ্কা পাতিল ডাক মারেন, কাশভি গৌতম করেন ২ রান এবং তিতাশ খেলেন ৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। সবার রানের ওপর ভর করে ভারত ১২৭ রান করে নিজেদের ইনিংস শেষ করে।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪ ওভারে স্রেফ ১৩ রানে ২ উইকেট নেন নাহিদা। লেগ স্পিনার রাবেয়া খান ১৪ রানে ধরেন ১ শিকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়