মো. আব্দুল আজিজ মণ্ডল, ধামইরহাট (নওগাঁ) থেকে : নওগাঁয় আমের ভরা মৌসুমেও চাহিদা কম থাকায় প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন আমচাষিরা। আমচাষি ধামইরহাটের মোফাজ্জল হোসেন, আবু কালাম, বুলু বাবু, ফানছুর জানান, আম কেনার মানুষ নেই। চাহিদা ও ভালো দাম না থাকায় বাগান মালিকরা আম পাড়ছেন না। ফলে রোদ-গরমে ফল পড়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছর হিমসাগর ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এবার লক্ষণভোগ ৮-১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ল্যাংড়া প্রতি মণ ৮০০-১,১০০ টাকায়, গুটি আম প্রতি মণ ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাপাহার উপজেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৩০ হাজার টন। খরায় ঝরে ৩০ শতাংশ নষ্ট হলেও ১,৫০০-১,৭০০ কোটি টাকায় আম বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, পোরশা উপজেলার নোচনাহার, সরাইগাছী বাজারে গোপালভোগ, নাকফজলি, ল্যাংড়া, হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, ক্যাটিনা, খিসরাপাতি, গৌড়মতি গত ২২ মে থেকে বাজারে নেমেছে। জেলার ১১ উপজেলায় আম চাষ হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১২.৫ টন আম সংগ্রহ সম্ভব, মোট লক্ষ্যমাত্রা ৩০ লাখ ৭৮ হাজার টন। এতে ২ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, ১৭ জুনের পর থেকে আম্রপালি, বারিসহ অন্যান্য আম নামতে শুরু করেছে। আমচাষি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আমের দাম নেই, প্রখর রোদ, দাবদাহ, ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই গরমে হাঁসফাঁস করছেন।
সাপাহার উপজেলার খঞ্জনপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আইজুল হক ও পতœীতলা উপজেলার নির্মুল ইউনিয়নের হাটশাউল গ্রামের বাগান মালিক উজ্জল জানান, এবার আমের দাম কম হওয়ায় খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। সাপাহারে আমের পরিমাপ ৪৫ কেজিতে ১ মণ। এছাড়া ব্যবসায়ীদের বাড়তি দিতে হয় ৫ কেজি। নিয়ামত উপজেলায় ৫২ কেজিতে ১ মণ, বাড়তি দিতে হয় ১২ কেজি। ধামইরহাটে ৪৮ কেজিতে ১ মণ, বাড়তি দিতে হয় ৮ কেজি। লাকফজলি প্রতিমণ ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনিতে দাম কম, আবার ৫ কেজি, ১২ কেজি বাড়তি দিতে হয়।
ধামইরহাটের লতিফুর নামে একজন বড় ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, রাস্তার আমগাছগুলোর টেন্ডার নিয়ে গাছের আম নামাতে ৮ হাজার টাকার লেবার খরচ হয়েছে। আম বিক্রি করেছেন ৩ হাজার টাকায়, তার লোকসান হয়েছে ৫ হাজার টাকা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।