কাগজ প্রতিবেদক : আসন্ন ঈদযাত্রায় ভয়াবহ যানজট, অস্বাভাবিক যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য কমানোর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমাতে আগামী ২৭ জুন ১ দিন সরকারি ছুটি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল রবিবার সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি এ দাবি জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকেও ঈদুল আজহার ছুটি ১ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। এই কমিটিও ২৭ জুন থেকে ঈদের ছুটি শুরুর পক্ষে মত দেয়। তবে এই ছুটির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্বাহী আদেশ আসেনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আগামী ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি। এর সঙ্গে ২৭ জুন একদিন ছুটি বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। একদিন ছুটি বাড়ালে গত ঈদের মতো এবারো ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। এবারের ঈদে ঢাকা থেকে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যাবে। এছাড়া এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাবে আরো প্রায় ৪ কোটি মানুষ। বেতন-বোনাস পাওয়ার পর আগামী ২৬ জুন থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ মানুষ রাজধানী ছাড়বে। আমাদের গণপরিবহনে সড়ক পথে ৮ থেকে ১০ লাখ, নৌপথে ৮ থেকে ১০ লাখ এবং রেলপথে দেড় লাখ যাত্রী যাতায়াতের সক্ষমতা আছে। ঈদযাত্রায় বিড়ম্বনা এড়াতে ২২ জুন থেকেই লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করবে। কিন্তু ২৭ জুন অফিস খোলা থাকায় বাধ্যতামূলক কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকেই কর্মস্থলে আটকে পড়বেন। এ কারণে সরকারিভাবে ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলে ঈদযাত্রায় একসঙ্গে যাত্রীর চাপ অনেকটাই কমতে পারে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশ পথগুলো যানজটমুক্ত রাখতে হবে। তা না হলে ২৭ জুন থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যাবে। ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ ও সব জাতীয় মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। সড়কের দুর্ঘটনা কমাতে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, নৌপথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন না করা এবং সব নৌযানে বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রার সুযোগ দিলে ৮ থেকে ১০ লাখ মোটরসাইকেল চালক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারেন। এতে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হলেও দুর্ঘটনা-প্রাণহানি বেড়ে যেতে পারে। আমরা মোটরসাইকেল বন্ধ করার কথা বলছি না। তবে এতে ঝুঁকি থাকলেও ঝুঁকি নিরসনে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, রেলের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রির উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, যারা অনলাইনের সঙ্গে অভ্যস্ত নয়, তাদের টিকেট পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এ ব্যাপারেও ব্যবস্থা থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি তৌহিদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. আমজাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।