সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

আগের সংবাদ

উন্নয়ন ও প্রত্যাশায় ফারাক অনেক : ক্লিন সিটি খ্যাত রাজশাহীর মানুষ অনেক সেবা পান না

পরের সংবাদ

শিল্পবিপ্লব যেন মানবতাকে আঘাত না করে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের হাতিয়ারগুলো যাতে মানবতাকে আঘাত বা অবজ্ঞা করতে ব্যবহার না হয় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার জেনেভায় বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম কার্যালয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের নতুন অর্থনীতি ও সমাজ’ শীর্ষক আলাপচারিতায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্র্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে এ আলাপচারিতার আয়োজন করে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম। অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের হাতিয়ারগুলো মানবতাকে আঘাত করতে বা অবজ্ঞা

করার জন্য ব্যবহার না হয়। এক্ষেত্রে সাইবার আক্রমণ, গুজব ও অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখার ওপর জোর দিতে হবে। আমাদের সম্মিলিতভাবে সাইবার আক্রমণ, গুজব ও অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষাকবচ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এটাও নিশ্চিত করতে হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের সমাজে আর বিভাজন সৃষ্টি করবে না। এই উদ্দেশে আমাদের বৈশ্বিকভাবে কার্যকর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের তরুণদের চতুর্থ শিল্প বিল্পব এবং ভবিষ্যতের কাজের জন্য প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা শুধু চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ট্রেন্ডকে অনুসরণ করবে না, তারা নেতৃত্ব দেবে। যখন দেখি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা রোবোটিক্সেও তাদের উদ্ভাবনী কাজ করছে তখন আমি গর্ব অনুভব করেন। সরকারের পক্ষ থেকে সারাদেশে আমরা যে উদ্ভাবন মেলা করছি সেখানেও তাদের ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি স্বাধীন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের অংশীদারত্বকে স্বাগত জানাবে। আমরা ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য সঠিক আইনি, নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির জন্য কাজ করছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট, ন্যানোটেকনোলজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা আলাদা জাতীয় কৌশল তৈরি করছি। বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ সারির প্রযুক্তি, ন্যানোটেকনোলজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট স্থাপন করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট শাসন ব্যবস্থার জন্য ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নেতাদের তৈরি করতে আমাদের সরকার স্মার্ট লিডারশিপ একাডেমি শুরু করেছে। একটি গেøাবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট তৈরিতে জাতিসংঘের কাজে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করি এই গেøাবাল কমপ্যাক্টে ডিজিটাল ও সম্মুখসারির প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ও উৎপাদনশীল ব্যবহারে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের জন্য একটি সুস্পষ্ট নির্দেশিকা থাকবে।
শিক্ষা বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মিশ্র শিক্ষার অপার সম্ভাবনার বিষয়ে সরকারের চোখ খুলে দিয়েছে। আমরা মহামারির সময়ে দেশব্যাপী ডিজিটাল ব্যবস্থার সম্পূর্ণ সুবিধা নিতে পারি। আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনলাইনে স্থানান্তর করেছি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কমবেশি নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
টেলিভিশনে ক্লাস পরিবেশনের পাশাপাশি অনলাইনে পাঠ্যবই আপলোড করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার সৃজনশীলতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে দেশের স্কুলগুলোর শিক্ষা কারিকুলাম পুনর্বিন্যাস করেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের গতানুগতিক ধারায় তথ্য সংরক্ষণের পরিবর্তে তাদের নিজস্ব চিন্তা ও কাজকে উৎসাহিত করছি। আশা করছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে সামাজিক ও বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা দিয়ে লালন-পালন করে বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করা হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ‘ডেল্টা গর্ভনিং কাউন্সিল’ এর তত্ত্বাবধানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছি। রাজধানী ঢাকার চারপাশে ৫ নদী পুনরায় সচল করাসহ কিছু উচ্চ কার্যকর মেগা-প্রজেক্ট নিয়ে আমরা বর্তমানে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব উচ্চাবিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের বড় ধরনের আন্তর্জাতিক অর্থায়ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামকে (ডব্লিউইএফ) বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়