সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

আগের সংবাদ

উন্নয়ন ও প্রত্যাশায় ফারাক অনেক : ক্লিন সিটি খ্যাত রাজশাহীর মানুষ অনেক সেবা পান না

পরের সংবাদ

ইবাদত ঝড়ে লণ্ডভণ্ড আফগানরা

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সবুজ উইকেটে পেসারদের সুবিধা পাওয়াটাই স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিকতা রক্ষা করে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান একমাত্র টেস্টে ৪ উইকেট তুলে নিলেন বাংলাদেশি পেসার ইবাদত হোসেন। তার সঙ্গে শরিফুল ইসলামের ২টি, তাইজুল ইসলামের ২টি এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ২ উইকেট শিকারে দেড়শ রানের আগেই গুটিয়ে যায় আফগানদের প্রথম ইনিংস। তাই স্বাগতিক বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসের খেলা শেষে ২৩৬ রানের লিড পায়। আফগানদের ফলোঅনে ফেলার সুযোগ থাকলেও তা করেনি টাইগাররা। ২৩৬ রানের লিড হাতে রেখে তারা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান। দিনশেষে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান উভয়েই সমান ৬৪টি বল খেলে ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন!
সবুজ উইকেটের মিরপুর টেস্টে প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রানের দলীয় সংগ্রহ গড়ে। প্রথম দিনটা ভালো কাটালেও দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালোভাবে করতে পারেনি টাইগার ব্যাটাররা।
প্রথম দিনের সংগ্রহের সঙ্গে মাত্র ২০ রান যোগ করে তারা প্রথম ইনিংস শেষ করে। দ্বিতীয় দিনে ব্যাটারদের ব্যর্থতার পর শুরু হয় বোলারদের সফলতা। শরিফুল ইসলামের প্রথম ব্রেকথ্রুর পর ইবাদত হোসেন উইকেট তোলেন সপ্তম ওভারে। তার ওভারের পঞ্চম বলে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরমুখী হন আফগান ওপেনার আব্দুল মালিক। তিনি মাঠ ছাড়ার আগে ২টি বাউন্ডারির সমন্বয়ে ২১ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলেন।
১১তম ওভারে ইবাদতের দ্বিতীয় শিকার ১৮ বলে ২ চারে ৯ রান করা রহমত। তিনিও বিদায় নেন তাসকিনের হাতে ধরা পড়ে। এরপর উইকেট তুলতে ইবাদত হোসেনকে অপেক্ষা করতে হয় ২৬তম ওভার পর্যন্ত।
সেই ওভারে তার বলে শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন আফগানিস্তান দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রানের ইনিংস খেলা উইকেটরক্ষক ব্যাটার আফসার জাজাই। তিনি ৪০ বলে মারমুখী মেজাজে এই ইনিংস খেলার পথে ৬টি বাউন্ডারি হাঁকান। গতকাল ইবাদত হোসেনের চতুর্থ ও শেষ শিকার আমির হামজা। তিনি ১৫ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলার পথে একটি বাউন্ডারি হাঁকান। ইবাদত হোসেন গতকাল বল হাতে আক্রমণ করেন ১০ ওভার, যেখানে একটি ওভারে কোনো রান খরচ করেননি এই পেসার। বাকি ৯ ওভারে তিনি ৪৭ রান দেন। তার তাণ্ডবে আফগানিস্তানের প্রথম ইনিংস মাত্র ১৪৬ রানে আটকে যাওয়াতে জয়ের পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের হয়ে ইবাদত হোসেনের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে এই পেসার ১ উইকেট তোলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচে ইবাদত ভারতের বিপক্ষে ৩ উইকেট শিকার করেন। ২০১৯ সালে এটিই তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ অর্জন। এরপর দীর্ঘদিন বল হাতে ছন্দহীন সময় কাটান ইবাদত হোসেন। লাল বলের ম্যাচে সাধারণত বেশি সুবিধা পান স্পিনাররা।
তবে উইকেট যদি সবুজ ঘাসের হয়, তাহলে রান খরচ করে হলেও উইকেট শিকারের সুযোগ পান ফাস্ট বোলাররা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইবাদত চেনা ছন্দে ফিরে আসেন ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
সেই বছরের প্রথম টেস্টে ইবাদত ৭ উইকেট তুলে দলে থাকা নিশ্চিত করেন। পরের ম্যাচে তার বলে সাজঘরে ফেরে নিউজিল্যান্ডের ২ ব্যাটার। এরপর একই বছরের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেট তোলেন ইবাদত। চলতি বছরে বল হাতে দারুণ সময় পার করছে বাংলাদেশি পেসাররা। সেই ধারাবাহিকতায় লাল বল হাতে চলতি বছরের সর্বশেষ টেস্টে ৫ আইরিশ ব্যাটারকে সাজঘরমুখী করেন ইবাদত।
আইরিশদের প্রথম ইনিংসে তার দুর্দান্ত পেসে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন ওপেনার জেমস ম্যাককালাম। তিনি সাজঘরে ফেরার আগে ৩৪ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে বাউন্ডারি ছিল একটি।
এরপর ৬০তম ওভারে তিনি তোলেন ৫৫ বল খেলে সেট হওয়া ব্যাটার অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে। এই আইরিশ ব্যাটার আউট হন ১টি চার ও ১ ছয়ে ১৯ রান করে। আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ইবাদত ৩ ব্যাটারকে বিদায় করেন। তার মধ্যে আছেন ১৬২ বলে ১০৮ রানের বিশাল ইনিংস খেলা লরকান টাকার, ১৫৬ বলে ৭২ রান করা অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন এবং ৫৫ বলে ১৪ রান করা গ্রাহাম হিউম।
তাদের মধ্যে অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন সাজঘরে ফিরে যান বোল্ড হয়ে, আর বাকি দুজন বিদায় নেন ক্যাচ তুলে দিয়ে।
এরপর গতকাল তিনি আফগানদের বিপক্ষে শিকার করেন ৪ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে ইবাদত হোসেনের ফাইফার সংখ্যা ১। আজ আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে ইবাদত ফের জ্বলে উঠবে টাইগার সমর্থকদের এ প্রত্যাশা। সফরকারীদের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে টাইগারদের জয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়