শাহজালালে ১২ কোটি টাকার কোকেনসহ ভারতীয় গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

খুলনায় খালেকের হ্যাটট্রিক, বরিশালে খোকন : খুলনায় শান্তিপূর্ণ ভোট, উপস্থিতি কম > তালুকদার আবদুল খালেক ১,৫৪,৮২৫ ভোট, আবদুল আউয়াল ৬০,০৫৪ ভোট

পরের সংবাদ

মার্কিন নয়া উপনিবেশবাদের শেষ কোথায়

প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১২, ২০২৩ , ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও সার্বভৌমত্ব। শব্দগুলো ব্যক্তি, জাতি তথা দেশের জন্য নানামাত্রায়, নানা আঙ্গিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। এসব অধিকার প্রাপ্তি পরম গৌরবের, যার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় আত্মমর্যাদাবোধ। আর আত্মমর্যাদাই একজন ব্যক্তি, একটি জাতি তথা একটি দেশের স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠা করে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। তবে স্বাধীন দেশের নাগরিক এবং স্বতন্ত্র জাতিসত্তা হিসেবে আমাদের স্বাধিকারবোধ ও সার্বভৌমত্ববোধ কতটুকু সুদৃঢ় হলো সে বিষয়টি মূল্যায়নের সময় এসেছে। পাশাপাশি আমরা কতটুকু আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হয়ে উঠলাম সেটিও এখন নিরীক্ষণের বড় প্রয়োজন। কারণ স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পেরিয়ে আমাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রসমূহের মতামত, সিদ্ধান্ত, হস্তক্ষেপ আমরা কোন সীমারেখা পর্যন্ত গ্রহণ করব। আমাদের এ বিষয়ে স্পষ্ট হতে হবে, দেশের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার দায় কি শুধুই সরকার বা রাজনৈতিক দলসমূহের? নাকি জনগণেরও কিছু কর্তব্য আছে? প্রশ্নগুলো উঠছে এই কারণে, স্বাধীনতা-পূর্বকাল থেকে সাম্প্রতিককালে মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশ কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার কতিপয় মিত্র দেশ এবং তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংঘসমূহের ঋণাত্মক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়? বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন কতটুকু অনুসরণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? কেননা, বাংলাদেশ বিষয়ক মার্কিন গোপন দলিলগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনকে তারা তাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতার ফল হিসেবে বিবেচনা করে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পররাষ্ট্রনীতির মিথষ্ক্রিয়া এমন, যুক্তরাষ্ট্র সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে সব সময় নাজুক পরিস্থিতিতে ফেলার চেষ্টা করে। তবে বাংলাদেশ চরম রক্ষণাত্মক কৌশলে এবং ধৈর্যের সঙ্গে অপঘাতগুলো মোকাবিলা করে।
বাংলাদেশ জন্মের সূচনালগ্ন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও কার্যকলাপ নিরীক্ষণ করা হলে বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। ইতিহাস সাক্ষী, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড এম নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি এ কিসিঞ্জার সরাসরি প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করেন। তবে দেশটির জনসাধারণ, পত্রপত্রিকা, এফবিআই, সিআইএ, এনসিসির কতিপয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা, সিনেট ও কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যবৃন্দ বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেসব মতামতকে তার একরৈখিক দৃষ্টিভঙ্গিতে উপেক্ষা করেন। সম্প্রতি মেরিল্যান্ড ন্যাশনাল আর্কাইভের গোপন ভল্ট থেকে ফাঁস হওয়া নথিপত্রে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিক্সন প্রশাসনের Sheer Stubborn Diplomacy-এর নানা তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। সেসব তথ্যসূত্রে জানা যায়, হেনরি এ কিসিঞ্জার বাংলাদেশের অভ্যুদয় রুখতে প্লান-এ, বি, সি-এর রূপায়ণ করেন। তার প্লান-এ ছিল। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মি. জর্জ বুশ সিনিয়রের মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পরম বন্ধু ভারতকে জাতিসংঘে বিব্রত করা; মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ হিসেবে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করা। কিসিঞ্জারের প্লান-বি ছিল। যদি পাকিস্তানের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে যায়, তাহলে নিরাপত্তা পরিষদের সভা আহ্বান করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটি যুদ্ধ বিরতির আন্তর্জাতিক ঘোষণা প্রদান করানো, যাতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। তবে প্লান-এ ও বি যদি ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে মি কিসিঞ্জারের প্লান-সি ছিল। বাংলাদেশের উপকূলে সপ্তম নৌবহর মোতায়েন এবং পাকিস্তানি আগ্রাসনকে সর্বাত্মক রূপ দেয়া। এক্ষেত্রে তার কূটকৌশল ছিল ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পাদিত প্রতিরক্ষা চুক্তিকে অজুহাত হিসেবে সামনে টেনে আনা।
কিন্তু সব আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক প্রতিকূলতা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সামরিক আগ্রাসন প্রতিরোধ ও প্রতিঘাত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ বীরাঙ্গনার আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা অর্জিত হয়। তবে স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ করেই বাংলাদেশকে শুরু করতে হলো নতুন বহুমাত্রিক লড়াই। তার মধ্যে একটি হচ্ছে জাতিসংঘের স্বীকৃতি প্রাপ্তি; সেখানেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কৌশলগত বিরোধিতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে, ‘১৯৭৪ সালের বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষের কারণ আর যাই হোক, সেটা খাদ্য কমে যাওয়ার কারণে ঘটেনি। তবে ওই সময়ে বাংলাদেশকে খাদ্য না দিতে মার্কিন প্রশাসনের রাজনীতিটাও অস্বীকার করা যাবে না’ (Poverty and Famines. Oxford, Clarendon Press)। পরবর্তী সময়ে আমেরিকার পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় আঘাত আসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সরাসরি চক্রান্ত ও মদতের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুর মতো এমন একজন বিশ্বনেতাকে হত্যা করতে তারা তাদের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা কৌশল কাজে লাগায়; খুনিদের সাহস জোগায়, আশ্রয় দেয়।
তবে বাংলাদেশ ১৯৯৬ সাল থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। ধীরে ধীরে নিজের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সমুন্নত করতে থাকে। ভারত, মায়ানমার ও চীনের ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় রাখলে বাংলাদেশের অবস্থান ভূ-রাজনীতি, ভূ-কৌশল ও ভূ-নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশ সেটা বোঝাতেও সক্ষম হয়েছে। ১৪ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বমানবতার সবচেয়ে প্রোজ্জ্বল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। সমুদ্রসীমা বিজয়, ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন এবং লেটার অব মোডালিটিস স্বাক্ষরের মাধ্যমে স্থলসীমা বিজয়, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, নিজস্ব অর্থায়নে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, এমডিজি ও এসডিজি সফলভাবে অর্জন, কোভিড মোকাবিলা নীতি ও কৌশল বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় সমাসীন করেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও আঞ্চলিক মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় বহু ধাপ এগিয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন দর্শন ও তত্ত্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশ, ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১, স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ডেল্টা প্লান আন্তর্জাতিক সুনাম ও স্বীকৃতি বয়ে এনেছে। চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ, সাউথ-সাউথ ভিশনারি পুরস্কার, শান্তি বৃক্ষ পদক, জাতিসংঘ পুরস্কারসহ বহু আন্তর্জাতিক সম্মাননা যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের গৌরবমুকুটে।
গত দেড় দশকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিকভাবে সুসংহত হওয়ার চেষ্টারত। তবে প্রধান সংকট হচ্ছে, এ দেশে এখনো মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতাকারী, সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসবাদী শক্তি রাজনীতি করছে। রাজনৈতিক দলের মোড়কে এবং গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারাও ক্ষমতায় বসতে চায়; যেমনটি অতীতে বসেছে। যুক্তরাষ্ট্র তার গণতন্ত্রের ফর্মুলায় এসব দলেরও অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। আর সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র নানারকম কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে আসছে। অগণতান্ত্রিকভাবে স্যাংশন দিচ্ছে, আলোচনাবহির্ভূতভাবে ভিসানীতি আরোপ করছে।
প্রকৃতপক্ষে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করাটাই ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভুল কূটনৈতিক দর্শন ও সিদ্ধান্ত। গণতন্ত্রের নামে মানবতার শত্রæদের প্রতিপালন ও তাদের বিচার প্রক্রিয়া রোধের চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রকে দিন দিন অগ্রহণযোগ্য করে তুলছে। রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা হওয়া প্রয়োজন; অথচ যুক্তরাষ্ট্র তার তুলনায় বহুগুণ দুর্বল দেশসমূহের বিষয়ে উদার-গণতান্ত্রিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে কি? গত পঞ্চাশ-ষাট দশকের তথ্যউপাত্ত বলছে, এসব দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে সিদ্ধান্ত বা মতামত চাপিয়ে দেয় বা গ্রহণ করে। এটা তো গেল তাদের Double Standard of Morality; পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে Propaganda Dependency যুক্তরাষ্ট্রের একটি আনস্মার্ট অ্যাপ্রোচ। তারা অসমর্থিত সূত্র, অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা দলের কথাকেও আমলে নেয় যদি সেটি তাদের নীতি ও কৌশলের সঙ্গে মিলে যায়। দেশটির বিষয়ে আরেকটি পর্যবেক্ষণ হচ্ছে- তারা Backdoor Game-এর চর্চায় খুব সিদ্ধহস্ত করে। তারা সব সময় একটি স্থিতিশীল দেশে তাদের অনুগত তৃতীয় শক্তি বা পক্ষকে পেছনের দরজা দিয়ে শাসন ক্ষমতায় বসাতে চেষ্টা করে বা বসিয়ে থাকে; যাতে দেশটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে না পারে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ড. মুহম্মদ ইউনুসকে দেশের পুতুল সরকারপ্রধান বানানোর জন্য তাদের প্রচেষ্টা আমাদের কাছে একটি উন্মোচিত বিষয়। আমরা দেখেছি ড. ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে ব্যর্থ হয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে বহাল রাখতেও যুক্তরাষ্ট্র কম কাঠখড় পোড়ায়নি। এক্ষেত্রেও তারা বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন ও অনমনীয় পররাষ্ট্রনীতির কাছে পরাভূত হয়। শেষমেশ যুক্তরাষ্ট্র ড. মুহম্মদ ইউনুসের কাক্সিক্ষত এমডি পদ না দেয়ার প্রতিশোধ হিসেবে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ফান্ডিং বন্ধ করে দেয়। এটিই যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো অস্ত্র, তারা মনে করে। I will prefer to be first on the wrong track if I am last on the right track. যেমনটি করেছিল ১৯৭৪ সালে খাদ্যশস্যবাহী জাহাজ আটকে দিয়ে, যেমনটি করেছিল ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়ে।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে। আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন কূটনীতি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় এবং কারো কাছে মাথা নত করে নয়; এটিই এখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সৌন্দর্য। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য ঘোষিত ভিসানীতি আমাদের জাতিগত আত্মমর্যাদায় আঘাত করে। কারণ বিশ্বব্যবস্থার স্থিতিশীলতায় আমাদের অংশীদারিত্ব আছে, ভূমিকা আছে। উল্লেখ্য, যে রোহিঙ্গাদের পৃথিবীর কোনো দেশ আশ্রয় দিচ্ছে না, শুধু মায়াকান্না করছে এবং মানবাধিকারের কথা বলছে; সেই তাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে; অতিমারি করোনার মধ্যেও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেছে; তাদের পুনর্বাসন করেছে। আজ জাতিসংঘের নেতৃত্বে শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান ও ত্যাগ সর্বোচ্চ। সুতরাং আমরা শ্রম, মেধা, ত্যাগ ও যোগ্যতা দিয়ে গৌরব ও সম্মান অর্জন করেছি। জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের স্বাধীনতা, স্বাধিকার, সার্বভৌমত্ব তথা গৌরব ও সম্মান নিয়ে কেউ টানাটানি করার অধিকার রাখে না। কথায় আছে- স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। এটি স্বাধিকার, সার্বভৌমত্ব, গৌরব ও সম্মানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আর এসব রক্ষা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে; বাঙালি জাতীয়তাবাদের শক্তিতে শানিত হতে হবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে এই বিশ্বায়নের যুগে প্রতিটি মানুষ Global Citizen. সুতরাং কেউ কারো বলা ও চলার গতি রোধ করতে পারে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে মূলত জাতীয়তাবাদী জাগরণের ফলে উপনিবেশবাদের অবসান ঘটতে থাকলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রশক্তিরা নতুন সমীকরণে উপনিবেশিকতাবাদের চর্চা শুরু করে। সেটি আজ তীব্র ও কট্টর রূপ লাভ করেছে যাকে নয়া উপনিবেশবাদ বলা যায়; যার কাছে একটি স্বাধীন দেশের সংবিধান, আইন সবই গৌণ। প্রশ্ন জাগে, এই নয়া উপনিবেশবাদী মার্কিন আগ্রাসনের সীমারেখা কী, শেষ কোথায়? তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা তথা সুসংহত গণতন্ত্র কি মার্কিন প্রশাসন আদৌ পছন্দ করে? নাকি গণতান্ত্রিক অস্থিরতাই তাদের বড় প্রিয়? প্রশ্ন রেখে গেলাম।

শেখ ফয়সল আমীন : কর্মকর্তা, বাংলা একাডেমি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়