নোয়াখালী ও বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে চিরশায়িত হলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খান। গতকাল শনিবার বিকালে তৃতীয় জানাজা শেষে সাহেব বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যদায় মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুনের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সিরাজুল আলম খানের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মায়ের শাড়ি দিয়ে তৈরি কাফনে জড়িয়ে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। দাফনের আগে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরের দিকে মরদেহ আনা হয় তার পৈতৃক ভিটায়। সেখানে এলাকার সব শ্রেণিপেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় প্রিয় নেতার শোকে অনেককেই কাঁদতে দেখা যায়। সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নোয়াখালী ৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, ভাইস চেয়ারম্যান তানিয়া রব, কবি ফরহাদ মজহার, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, নোয়াখালী জেলা জাসদের আহ্বায়ক আমির হোসেন বিএসসি, যুগ্ম আহ্বায়ক নুর রহমান চেয়ারম্যান, ইকবাল হোসেন, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে নোয়াখালী সি-জোন কমান্ডার মোহাম্মদ উল্যাহ প্রমুখ।
গত শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফসাপোর্টে সিরাজুল আলম খানের মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘দাদাভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬১ সালে তিনি ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৩ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে তার উদ্যোগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হয়।