গ্রিন ভয়েস : প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের দাবিতে সাইকেল র‌্যালি

আগের সংবাদ

বাজেটে কেউ খুশি নয় : সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বেড়েছে, পূরণ হয়নি ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগ দাবি

পরের সংবাদ

র‌্যাবের আশঙ্কা : শারক্বীয়া এবার সমতলে ছড়িয়ে পড়ছে

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে পাহাড়ে অবস্থান দুরূহ হয়ে পড়েছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের। তাই তারা সংগঠনের আমির আনিসুর রহমান মাহমুদের নির্দেশে সমতলের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টায় রয়েছেন। মূলত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ছোট-ছোট দলে ভাগ হয়ে আবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ ৭২ জনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংগঠনের আমির দেশেই কোথাও অবস্থান করছেন। তাকে শনাক্ত করা গেলেই গ্রেপ্তার করা হবে।
শারক্বীয়ার শূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিবসহ ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
কমান্ডার মঈন বলেন, এ জঙ্গি সংগঠনের নেতৃস্থানীয়সহ অনেক সদস্যকে আমারা এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, সংগঠনের অন্যতম শূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন ওরফে রাকিবসহ সংগঠনের কয়েকজন সদস্য গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরের দিকে যাচ্ছে। গত সোমবার রাতে র‌্যাব-১ ও ৭ এর আভিযানিক দল গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে রাকিবসহ আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যরা হলো- জাকারিয়া হোসাইন ও মো. আহাদুল ইসলাম মজুমদার ওরফে সিফাত ওরফে মামিদ। তবে অভিযান চলাকালে কিছু সদস্য পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও নগদ ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লিফলেট উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তার রাকিব বিভিন্ন সময় পার্বত্য অঞ্চলে প্রশিক্ষণ শিবিরে যাতায়াত করেছে বলে জানা যায়। পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে সংগঠনের আমিরের নির্দেশনায় সে সমতলের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে যায়। এ সময় সে আত্মগোপনে থাকা অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে ও পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। রাকিব এর আগে আনসার আল ইসলামের সদস্য থাকায় ওই সংগঠনের বিভিন্ন জনের সঙ্গেও যোগাযোগ ও সমন্বয় রাখত। পাহাড় থেকে পালিয়ে আসার সময় তার কাছে সংগঠনের প্রায় ২০ লাখ টাকা জমা ছিল। এর থেকে সংগঠনের বিভিন্ন কাজে এরই মধ্যে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করেছে বলে জানা গেছে।
জঙ্গি সংগঠনে কত সদস্য আছে- এমন প্রশ্নে র‌্যাব মুখপাত্র মঈন বলেন, প্রাথমিকভাবে ৫৫ জনের নাম আমরা গণমাধ্যমকে দিয়েছি। আমাদের ধারণা এখন পর্যন্ত তাদের সদস্য সংখ্যা শতাধিক হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা বলা কঠিন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের কারণে তারা আত্মগোপনে আছে, তাই সদস্য সংখ্যা সঠিকভাবে বলা যায় না।
নির্বাচন ঘিরে শারক্বীয়াকে রাজনৈতিক দল কাজে লাগাতে পারে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের ফায়দা নেয়ার জন্য জঙ্গিদের কাজে লাগায় এটা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত। দেশের জনগণ তাদের মেনে নেবে না। নির্বাচন ঘিরে জঙ্গি ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। তথ্য পেলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত তথ্য নেই যে, কোনো রাজনৈতিক দল তাদের ব্যবহার করবে।
জঙ্গিদের অর্থায়নের বিষয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, প্রতি মাসে এই সহায়তার জন্য ৩-৫ লাখ টাকা জঙ্গিরা পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) প্রধানের হাতে দেয়। তবে, গত কয়েক মাসে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে, দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব প্রশিক্ষিতরা ছড়িয়ে পড়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনের কাছে দেশ-বিদেশ থেকে টাকা আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব অর্থ পাঠানো হয় তা-ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বিভিন্ন সময় যোগাযোগের মাধ্যমে মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানাসহ নানা খাতের কথা বলে এই অর্থ সংগ্রহ করে শারক্বীয়া। নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটির তিন শ্রেণির ডোনাররাও অর্থ দিতো। ক-শ্রেণির ডোনাররা দেয় লাখ টাকা, খ-শ্রেণি ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং গ-শ্রেণি ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়।
র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, স¤প্রতি বান্দরবান পার্বত্য এলাকায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ফলে শত শত প্রশিক্ষিত জঙ্গি দেশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে পড়ে। তাই এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়