করমণ্ডল এক্সপ্রেস : চেন্নাইগামী ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শতাধিক, বাংলাদেশি যাত্রী থাকার আশঙ্কা

আগের সংবাদ

দেয়াল

পরের সংবাদ

ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা : শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভারতের ওড়িশা রাজ্যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জন নিহত হয়েছেন। বিকালে এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত এ তথ্য জানা যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। আহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি। রাতভর উদ্ধারকাজ চলেছে, এখনো চলছে। একের পর এক মরদেহ বের করে আনা হচ্ছে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বগিগুলো থেকে। ভারতের রেল বিভাগ জানায়, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী ট্রেন; যা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়ার নিকটবর্তী শালিমার থেকে তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই যাচ্ছিল- সেটির কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং পাশের লাইনে থাকা আরেকটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী ট্রেন সেগুলোকে আঘাত করে। দ্বিতীয় ট্রেনটি বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। এরপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গেও যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোর ধাক্কা লাগে। যার কারণে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা এটি। ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮১ সালে। সে সময় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা একটি ট্রেন বিহার রাজ্যে সাইক্লোনের সময় লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৮০০ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। প্রতিদিন ভারতজুড়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) পথ ভ্রমণ করে। রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতে প্রতি বছর কয়েকশ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বেশির ভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রæটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে। আধুনিকতার এ যুগে পিছিয়ে আছে ভারতের মতো বৃহৎ দেশে সেকেলে রেল ব্যবস্থাপনা। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিতে যান অনেক বাংলাদেশি। ওড়িশার বালেশ্বরে কলকাতা থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসে বাংলাদেশি যাত্রী থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত তামিলনাড়ুতে কাজের জন্য ও উন্নত চিকিৎসার জন্য যারা গিয়ে থাকেন, তারা এই ট্রেনটি ব্যবহার করে থাকেন। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বহু রোগীরও আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি পড়াশোনার উদ্দেশ্যেও কলকাতা হয়ে চেন্নাইয়ে যান অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনার পর শুক্রবার রাতে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সাধারণত বাংলাদেশিরা চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যাওয়া-আসা করতে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্যবহার করে থাকেন। বাংলাদেশি কোনো নাগরিক দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে ছিল কিনা, সে বিষয়ে খোঁজ রাখতে কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশন রেল কর্তৃপক্ষ ও ওড়িশার রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আহত দুই বাংলাদেশিকে কটকের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর কোনো বাংলাদেশি আহত বা নিহত আছে কিনা এ বিষয়ে হাইকমিশনকে বাড়তি নজরদারি করতে হবে। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় নিহত সব পরিবারের প্রতি আমরা শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়