ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শোকজ

আগের সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব : বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

পরের সংবাদ

বাজেট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** সরকার বলছে, ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট ** ঋণ করে ঘি খাওয়া বলছে বিএনপি **
কাগজ প্রতিবেদক : প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। প্রস্তবিত বাজেট ‘জনবান্ধব ও উন্নয়নমুখী’ অভিহিত করে এটি সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট বলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সরকার লুটপাটের জন্য ঋণ করে ঘি খাওয়ার বড় বাজেট দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আর অন্য দলগুলোর বক্তব্য- জনবান্ধবহীন ঢিলেঢালা এ বাজেটে অনেক অস্পষ্টতা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ : প্রস্তাাবিত বাজেটকে ‘সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় গণমাধ্যমে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘এটি সংকটে ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট’।
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ভাঙতে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দ্রব্যমূল্য এখন বেশ কিছু ক্ষেত্রে কমতে শুরু করেছে। বাজেটটা এমনভাবে করা হয়েছে যে, মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব বলার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে এই বাজেট প্রণিত হয়েছে।
বিএনপি : সরকার লুটপাটের জন্য বড় বাজেট দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ভাড়া, চাঁদা আর কমিশনভিত্তিক অর্থনীতি করছে সরকার। এর দায়ভার জনগণকে নিতে হচ্ছে। আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে সরকার। বড় আকারের বাজেট দিয়ে মূলত ঋণ নিয়ে ঘি খাচ্ছে সরকার, এর বোঝা জনগণকে বহন করতে হবে। ৫২ শতাংশ ঋণ বেড়েছে গত ৭ বছরে, যার দায় বইতে হবে আগামী প্রজন্মকে।
বাজেটে সাধারণ মানুষের ওপর করের চাপ বাড়বে উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে আছে। নতুন করে আরো দরিদ্র হচ্ছে। ঢাকায় নতুন দরিদ্র ৫২ শতাংশ। আওয়ামী অর্থনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের লোকরা লাভবান হবে, জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আওয়ামী লীগের লুটপাটের এ বাজেটে অর্থনীতির সঙ্গে দেশের জনগণ চরমভাবে বিপদে পড়বে।
জাতীয় পার্টি : প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধবহীন উল্লেখ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনমুখী বাজেট করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবারের বাজেটে ১ লাখ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে।

এই বাজেট বাস্তবসম্মত মনে করছি না। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে আছে এমন বাস্তবতায় যে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট করা হয়েছে তা হয়তো আদায় হবে না। বাজেটে প্রাপ্তি দেখানো হয়েছে অভ্যন্তরীণ ঋণ ও বিদেশি ঋণ।
তিনি বলেন, এই বাজেটে জনবান্ধব বা কল্যাণমুখী কিছু দেখছি না। নি¤œবিত্ত, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ যেন বেঁচে থাকতে পারে তা এই বাজেটে নেই। এই বাজেট জনবান্ধব বলা যাচ্ছে না, এটা জনবান্ধবহীন বাজেট।
ওয়ার্কার্স পার্টি : বাজেট প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, অর্থমন্ত্রী উন্নয়নের কথামালা দিয়ে বাস্তবতাকে অস্পষ্ট করে দিয়েছেন। জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমার যেটা মনে হয়েছে- যে চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের সামনে রয়েছে, বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ঘটনাগুলো ঘটছে, সেটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে এটা খুব একটা স্পষ্ট আকারে এসেছে বলে মনে হয়নি। ফলে চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা হবে এটা বেশ দুষ্কর ব্যাপার হয়ে গেল বলে মন হচ্ছে।
জাসদ : জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এ বাজেটে এনবিআর থেকে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা পূরণে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
বাসদ : বড় বাজেটের বড় বোঝা জনগণের উপর চাপানো হয়েছে বলে দাবি করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেছেন, বড় বাজেটের নামে ভ্যাট ট্যাক্সের বোঝা জনগণের উপর চাপানো হয়েছে, এ বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে, যার জাঁতাকলে পিষ্ট হবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ।
সিপিবি : প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্তির নির্দেশনা নেই বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, নি¤œ প্রবৃদ্ধি, সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, সর্বনি¤œ বৈদেশিক মুদ্রার কর্তৃত্বপরায়ণতা, বৈদেশিক চাপের মুখে প্রদত্ত বাজেটে সাধারণ মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণ হয়নি। বাজেটে দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্তির নির্দেশনা নেই, বরং জনগণের কাঁধে নানাভাবে করের বোঝা চাপবে- যা সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো বিপর্যস্ত করে তুলবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়