গ্রামীণ কল্যাণ : চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের লভ্যাংশ দেয়ার রায়ে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা

আগের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাবুল আকতার, খুলনা থেকে : সুন্দরবনে প্রবেশের দুয়ার আজ থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী এবং নদী-খালে মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রম সুরক্ষায় বন বিভাগ সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে গহিন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরতে শুরু করেছে উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবী- জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা। দীর্ঘ ৯২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল খেটে খাওয়া মানুষ। সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ থাকার কারণে সরকারি যে সহায়তা দেয়া হয়, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। যে কারণে সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বনজীবীরা।
বন বিভাগ বলছে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে সুন্দরবনের প্রাণী ও বনজসম্পদ আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে সুন্দরবনের সৌন্দর্যও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়। সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ। এ সময় পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এই অংশে ২১০ প্রজাতির হোয়াইট ফিশ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা এবং গলদা চিংড়ি রয়েছে। সুন্দরবনের নদী-খালগুলোতে মূলত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩ মাস মাছের প্রজনন মৌসুম। তিনি আরো বলেন, আইআরএমপি সুপারিশ অনুযাযী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ বছর মৎস্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞা আরো এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে সুন্দরবনের প্রাণী ও বনজসম্পদ আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে সুন্দরবনের সৌন্দর্যও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। ডিএফও বলেন, একদিকে যেমন সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা বন্ধ রাখলে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদসহ সব জীবের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বন বিভাগ সূত্রে আরো জানা যায়, খুলনা রেঞ্জের আওতায় কয়রা উপজেলার কাশিয়াবাদ, বানিয়াখালী, কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনে ২ হাজার ৯০০টি নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট রয়েছে। এর মধ্যে কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১৩ হাজার ৫২৬ জন। নিষেধাজ্ঞার সময় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এসব জেলেকে ৩ মাসে ৮৬ কেজি চাল দেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়