গ্রামীণ কল্যাণ : চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের লভ্যাংশ দেয়ার রায়ে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা

আগের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

লতার দুর্দান্ত ইনিংসে খেলাঘরের জয়

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন নারী ক্রিকেট লিগে গতকাল আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ৮ রানের জয় পায় খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলাঘরের হয়ে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন লতা মন্ডল। তার দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও খেলাঘরের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ১৭০ রান। তবে ফাহিমা ও সুলতানার দারুণ স্পিনে ১৬২ রানে আটকে যায় আবাহনী লিমিটেডের ইনিংস। তাই ৮ রানের কষ্টার্জিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খেলাঘর। সর্বোচ্চ রান করে ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হন লতা মন্ডল।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামলেও শুরুটা ভালো করতে পারেনি খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘ। দলটির হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন দিলারা আক্তার এবং মুসাম্মৎ সানজিদা আক্তার। পঞ্চম ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন ১২ বলে মাত্র ৫ রান করা সানজিদা। এরপর দিলারাকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন তিনে নামা লতা মন্ডল। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার প্রথম থেকেই একের পর এক বল ডিফেন্স করে অবস্থান শক্ত করে নেন। ফাঁকে ফাঁকে তিনি এক-দুই রান করে স্কোরবোর্ড ভারি করছিলেন। মাঝে মাঝে হাঁকাচ্ছিলেন বাউন্ডারিও। অষ্টম ওভারে ইশমা তানজিমের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন আরেক ওপেনার দিলারা। ২৬ বলে তিনি ছয়টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর চারে নামা তাজ ফিরে যান গোল্ডেন ডাক মেরে। পাঁচে নামা স্বর্ণা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস বড় করতে থাকেন লতা। ২৭তম ওভারে সাবিকুন্নাহারের বলে তার হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন স্বর্ণা। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি ৪৭ বলে ৩২ রানের ইনিংস গড়েন, যেখানে ছিল একটি বাউন্ডারি ও ২ ছক্কা। এর পরের ওভারেই ডাক মেরে ফির যান ফাহিমা খাতুন। এক প্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়লেও ফিফটি করে মারমুখী খেলা শুরু করেন লতা মন্ডল। ৪৪তম ওভারে সাজঘরে ফিরে যান তিনিও। তার খেলা ১১৪ বলে ৭২ রানের ইনিংসের সঙ্গে বাকিদের ছোট ছোট ইনিংসে ১৭০ রানের সংগ্রহে পৌঁছায় খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘ ক্রিকেটার্স।
রান তাড়ায় শামিমা সুলতানা ও মুর্শিদা খাতুনের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পায় আবাহনী। রান তাড়ায় ৬১ রানের জুটি গড়েন আবাহনীর দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ফাহিমা খাতুনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ৪৩ বলে ৩২ রানের ইনিংস গড়া মুর্শিদা বিদায় নিলে। সাজঘরের পথ ধরার আগে আবাহনীর এই ব্যাটার পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকান। এরপর তিনে নেমে হতাশ করেন তিন উইকেট তোলা ইশমা তানজিম। তিনি ১৩ বলে মাত্র ২ রান করে তাজের বলে লতার হাতে ধরা পড়ে আউট হন। চারে নামা সম্পাও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। তিনি ২৪ বলে ১২ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে যান। তার উইকেট তোলেন স্বর্ণা আক্তার। এরপর উইকেট তুলতে ৩৪তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় খেলাঘরের বোলারদের। ফাহিমা খাতুনের করা ৩৪তম ওভারের প্রথম বলেই তার হাতে ধরা পড়ে আউট হন আবাহনীর হয়ে সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলা ওপেনার শামিমা সুলতানা। তিনি ৯৩ বলে ৫ চারের সমন্বয়ে ৬২ রান করেন। তার বিদায়ের পর ৭ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই বিদায় নেন আকা মল্লিক, তারপর ৬ বলে ১ রান করে আউট হন আফিয়া আনাম। এরপর সাজঘরে ফেরেন দলের হাল ধরার চেষ্টায় ৫১ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলা সিভানি সিং। তার বিদায়ের পর আবাহনী অধিনায়ক জাহানারা আলমকে সঙ্গ দেন সন্দিহা ইসলাম আশা। তিনিও আউট হন ৯ বলে ৩ রান করে। একের পর এক ব্যাটারের বিদায়ে খেলাঘরের দিকে জয়ের পাল্লা ভারী হতে থাকে। তারপরও একপ্রান্তে অবস্থান শক্ত করে চেষ্টা চালিয়ে যান জাহানারা। তার ১৯ রানের পর অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করেন সুলতানা খাতুন। সহজ বল পেয়েই সুইপ করেন জাহানারা। তবে তার ব্যাটের উপরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে দাঁড়ানো বৃষ্টি দাসের হাতে। অধিনায়কের আউটে উল্লাসে মেতে ওঠে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘের ক্রিকেটাররা। কেননা প্রতিপক্ষ দলকে জয় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য আর কোনো নিয়মিত ব্যাটার তখন ছিল না। তাছাড়া আবাহনী লিমিটেডের হাতে ছিল মাত্র একটি উইকেট। শেষ উইকেট তুলে জয় নিশ্চিত করতে খেলাঘরকে আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। পরের ওভারে বল করতে আসেন অভিজ্ঞ স্পিনার ফাহিমা খাতুন। তার দুর্দান্ত বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ফাতেমা জাহান সোনিয়া। ৬ বল খেলে তিনি স্কোরবোর্ডে মাত্র ২ রান যোগ করেন। তাকে সাজঘরে ফিরিয়েই জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘের খেলোয়াড়রা। এই উইকেট তোলার মধ্য দিয়ে ৮ রানের নাটকীয় জয় পায় খেলাঘর। দলটির হয়ে তিনটি করে উইকেট তোলেন সুলতানা খাতুন ও ফাহিমা খাতুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়