গ্রামীণ কল্যাণ : চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের লভ্যাংশ দেয়ার রায়ে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা

আগের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

যুগপৎভাবে মাঠে থাকবে জোটের শরিকরা : কদর বাড়ছে ১৪ দলের

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রাজপথে শক্তি প্রদর্শন এবং ভোটের মাঠে জোটের রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলগুলোতে শরিকদের কদর বাড়ছে। নানা কারণে ১৪ দলীয় জোটে শরিক দলগুলোর সঙ্গে টানাপড়েন চলছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। গত কয়েক বছর ধরে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে রাজপথে অনেকটা একাই লড়েছে আওয়ামী লীগ। এখন শরিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা শুরু করেছে দলটি। সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ রাজপথে আন্দোলনকারীদের শক্তভাবে মোকাবিলা করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এর অংশ হিসেবে শরিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাঠে সক্রিয় রয়েছে ১৪ দল। নির্বাচনে জয়ী হতে যুগপৎভাবে রাজপথে ও ভোটের লড়াইয়ে থাকবে ১৪ দলীয় জোট।
একাদশ নির্বাচনের পর থেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের এককভাবে মাঠে থাকা, শরিক দলগুলোর পাশে না থাকা নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে নানা ধরনের আলাপ-আলোচনা ছিল। ১৪ দলের কার্যক্রমও ছিল স্তিমিত। গত বছরের ১৫ মার্চ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ১৪ দলের শরিকরা। সেখানে পাওয়া না পাওয়ার কথাগুলো তুলে ধরেন তারা। জোটকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে বলা হয়। এরপর থেকেই শরিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে ঐক্য সংহত করার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। সবশেষ সংসদ থেকে বিএনপিদলীয় এমপিদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের দুই শরিক দলকে দুটি আসন ছেড়ে দেয়। এর মধ্যে একটি আসন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে, আরেকটি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে দেয়া হয়। এ নির্বাচনে জাসদের প্রার্থী জয়ী হলেও হেরে যান বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী।
বর্তমানে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কর্মসূচি। এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছে ১৪ দল রাজশাহী। এছাড়া যদি আন্দোলন বা কোনো কর্মসূচি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে দেয়া হয় তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামা হবে বলে জানান ১৪ দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলের নেতা। জোটশরিকরা জানিয়েছেন,

আমরা রাজনৈতিক জোট হিসেবে কাজ করছি।
এ ব্যাপারে ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ভোরের কাগজকে বলেন, ১৪ দলীয় জোট একটি আদর্শিক জোট। আমরা বসে নেই। নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করছি, বিএনপি-জামায়াতসহ যে কোনো অপশক্তিকে মোকাবিলায় শিগগিরই একসঙ্গে কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে মাঠে থাকব।
জোট নেতারা বলছেন, জোটের ২১ দফায় গুরুত্বপূর্ণ দফা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সময় যে ১ কোটি ২০ লাখ ভুয়া ভোটার করা হয়েছিল তাদের বাদ দিয়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়েছে। তবে জোটের চাওয়া অনুযায়ী, এখনো জনগণের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হয়নি, রাষ্ট্রক্ষমতা ক্রমাগত একটা ক্ষুদ্র ধনিক গোষ্ঠী, সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে চলে গেছে। এই পরিস্থিতির উত্তরণ প্রয়োজন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ভোরের কাগজকে বলেন, আদর্শিক লড়াইয়ে ১৪ দলীয় জোটের অর্জন কম নয়। জোটগতভাবে নির্বাচনে যাবার জন্য জোটনেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া বলেন, জোটের প্রতিটি দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। মুক্তিযুদ্ধের এই চেতনা এবং দেশের সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ১৪ দলীয় জোট খুবই প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান, উন্নয়নমূলক কাজের ভিশন এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে ১৪ দলের অবস্থান দৃঢ়।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে রয়েছে- ওয়ার্কার্স পার্টি (রাশেদ খান মেনন), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-হাসানুল হক ইনু), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টি (নুরুর রহমান সেলিম), গণআজাদী লীগ (হাজী আবদুস সামাদ), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বিএসডি-রেজাউল রশিদ খান), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি ও কমিউনিস্ট কেন্দ্র (জাকির হোসেন), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ- মোজাফফর আহমেদ)। এছাড়া জাতীয় পার্টি-জেপি ও তরিকত ফেডারেশন ও ১৪ দলের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়