টিসিবির জন্য চিনি ও ভোজ্য তেল কিনবে সরকার

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কোন পথে : মূল্যস্ফীতি > ডলার সংকট > বৈদেশিক ঋণের সুদ ও ভর্তুকি ব্যয় > কর ও ব্যক্তি করদাতা বাড়ানো

পরের সংবাদ

ইমরানকে ছেড়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালী নেতারা

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) শীর্ষ নেতারা হঠাৎ করে দলত্যাগ শুরু করেছেন। এরই মধ্যে ইমরানের সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নেতাও সরে গেছেন। কেউ কেউ বলছেন তারা আর রাজনীতি করবেন না। ইমরান খান দাবি করেছেন, সেনাবাহিনীর ধরপাকড় ও চাপে পড়ে নেতারা তার পাশ থেকে সরে যাচ্ছেন।
গত বুধবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন পিটিআইয়ের মুখপাত্র এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী। তবে এদিন সাবেক অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর জানান, তিনি পিটিআইয়ের সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু দলের মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন। এর আগে গত মঙ্গলবার দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিরিন মাজারিও পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গত সপ্তাহে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইমরানের দলের আরেক নেতা আব্দুর রাজ্জাক খান নিয়াজি। তিনি পিটিআই থেকে নির্বাচিত পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। এছাড়া পিটিআই ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পরিষদের সদস্য আফতাব হোসাইন সিদ্দিকী ও পিটিআই পশ্চিম পাঞ্জাবের সভাপতি ফায়জুল্লাহ কামোকা।
জিও নিউজ জানায়, বুধবার এক টুইটে রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন জানিয়ে ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, আগেই আমি ৯ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সেনানিবাসে হামলার নিন্দা জানিয়েছিলাম। আমি রাজনীতি থেকে আপাতত সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই দলের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। আমি ইমরান খান থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।
গত ৯ মে কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে পাক রেঞ্জার্স বাহিনী ইমরানকে গ্রেপ্তার করার পর দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় যে কয়েকজন পিটিআই নেতাকে বাছাই করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে ফাওয়াদ চৌধুরী একজন। একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ফাওয়াদকে স¤প্রতি আদালত থেকে জামিন নিতে হয়েছে। ইমরান খানের আমলে তিনি তথ্য ও আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিরোধী দলে যাওয়ার পর ইমরান খানের ‘ডান হাত’ ছিলেন।

ফাওয়াদ চৌধুরীর পিটিআই ত্যাগ ইমরান খানের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কেননা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত সহচর হিসেবেই তিনি পরিচিত ছিলেন। ইসলামাবাদসহ একাধিক আদালতে ইমরান খানের হয়ে মামলা করার পাশাপাশি দলের মুখপাত্র হিসেবেও পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাহবাজ শরিফ প্রশাসনের নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তিনি। ইমরান-ঘনিষ্ঠরা মনে করছেন, পাক সেনা এবং শাসক দলের হুমকির কারণেই ফাওয়াদের এ সিদ্ধান্ত।
এদিকে বুধবার ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে আসাদ উমর বলেন যে, তিনি আর পিটিআইয়ের কোর কমিটিতে থাকছেন না। তবে তিনি দল ত্যাগ করছেন না। ৯ মের ঘটনার পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তার পক্ষে দলের নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব নয়।
এর আগে মঙ্গলবার দলের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট শিরিন মাজারি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ১২ মে থেকে শিরিনকে ৪ বার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবারই তিনি জামিনে বের হয়ে আসেন। সংবাদ সম্মেলনে শিরিন বলেন, আজ থেকে আমি আমার পরিবার, মা ও সন্তানদের কারণে পিটিআই কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকব। মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলো বলছে, চলতি মাসের শুরুতে ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে সড়কে বিক্ষোভ-সহিংসতার ঘটনায় পিটিআইয়ের হাজারো কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ।
নেতাদের পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ ইমরানের : ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, ধরপাকড় চালিয়ে তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দল থেকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। বুধবার লাহোরের নিজ বাসভবন থেকে দেয়া ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, এমন দমন-পীড়নের ঘটনা পাকিস্তানের ইতিহাসে আমি আর দেখিনি। যদি বলেন আপনারা পিটিআইয়ের সদস্য, তাহলে আপনাদের দমন-পীড়ন এবং সহিংসতার কবলে পড়তে হবে। বন্দি করা হবে। আর যদি সে জাদুকরী শব্দগুলো বলেন যে আমরা আর পিটিআইয়ের সঙ্গে নেই, তাহলে ছাড়া পাবেন। ইমরানের দাবি, দলের পদস্থ নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থকদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। তারা সবাইকে জেলে পাঠিয়েছে। এখন কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে সেটাও আমি জানি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়