নন্দীগ্রামে বজ্রপাতে বৃদ্ধের মৃত্যু

আগের সংবাদ

রাজস্ব আদায়ে তিন বাধা : ভঙ্গুর অর্থনীতি, কর আদায়ে বৈষম্য, কর অব্যাহতি

পরের সংবাদ

পাঁচ সিটিতে নির্ভার আ.লীগ : মেয়র পদে কোথাও শক্তিশালী প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় জয়ের সুবাস পাচ্ছেন নৌকার প্রার্থীরা

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ সিটিতেই ভোটের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দ্বাদশ নির্বাচনে দলকে আরো আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে চায় ক্ষমতাসীনরা। অবশ্য বিএনপির বর্জনের কারণে পাঁচ সিটিতেই মেয়র পদে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় ফুরফুরে নৌকার মাঝিরা।
গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট- এই ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট ২৫ মে, ১২ জুন এবং ২১ জুন। তফসিল ঘোষিত হয়েছে গত ৩ এপ্রিল। তবে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি এসব সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছে দলটি। বিএনপি অংশ না নেয়ায় ভোটের ফলাফল নিয়ে অনেকটাই নির্ভার আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এক্ষেত্রে গাজীপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর ভোটে থাকলে নির্বাচনী মাঠের পরিবেশ ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ঋণখেলাপির কারণে জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে গতকাল রবিবার। যদিও জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেছেন, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে, পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে এবং তিনি ঋণখেলাপি নন। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। অবশ্য জাহাঙ্গীর নিজে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে না পারলেও মাকে নিয়ে তিনি মাঠে থাকতে পারবেন। তবে রাজনীতির মাঠে অপরিচিত এই নারী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল, সাধারণ মানুষ ও শান্তিকামী মানুষ যেহেতু আমার সঙ্গে রয়েছে- সেজন্য অবশ্যই আমি স্বস্তি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না, প্রতিদ্ব›দ্বী মনে করি না। আমি সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই ম্যাসেজটা দিতে চাই, কেউ আমাদের শত্রæ নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এদিকে বিএনপিহীন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অনেকটা নির্ভার আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং স্বতন্ত্রসহ ৫ প্রার্থীর নাম ঘুরছে এবং দলের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়ালকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান ও আগুয়ান ৭১ নামে সামাজিক সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরীর নাম রয়েছে আলোচনায়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে। ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের জন্য পথ অনেকটা সুগম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ কেসিসির বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক দুবারের মেয়র ও চারবারের এমপি। একবার দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষে ছোট কোনো দলের প্রার্থী ধোপে টিকবে না বলেই মনে করছেন ভোটাররা। ফলে এবারের সিটি নির্বাচন অনেকটাই একপেশে হবে বলে মনে করছেন তারা।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে অনেকটাই নির্ভার রাজশাহীর বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জমান লিটন। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় চাপমুক্ত তিনিও।
অন্যদিকে ফুরফুরে রয়েছেন বরিশালের রাজনীতিতে নতুন মুখ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বরিশাল মহানগরীর সদস্যসচিব ইকবাল হোসেন তাপস। প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অংশ নিচ্ছেন না বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সরোয়ার।
অন্যদিকে সিলেটেও নতুন মুখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী, লন্ডনপ্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্বাচনে জয়ের পথ অনেকটাই নিষ্কন্টক। বিএনপি প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নেবেন না, এটি প্রায় নিশ্চিত। ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে, নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত না থাকায় এই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না মেয়র আরিফ।
এদিকে অন্য সময়ের তুলনায় ফুরফুরে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ পাঁচ সিটিতেই যোগ্য প্রার্থী দিয়েছে। যোগ্য লোকের প্রতি জনগণের আস্থা আছে। নির্বাচনে না আসা বিএনপির দেউলিয়াত্বের পরিচয়। আন্দোলন-নির্বাচন একটি রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য। বিএনপি সেই লক্ষ্য থেকে সরে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, বিএনপি ঘোমটাপরা প্রার্থী দেয়। এই নির্বাচনেও দিয়েছে। তবে জনগণ যোগ্য, দক্ষ এবং উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থীকেই জয়ী করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়