বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের : গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপির কারণেই বারবার হোঁচট খায়

আগের সংবাদ

আত্রাই উপজেলা মিলনায়তনের পাশে জলাবদ্ধতা

পরের সংবাদ

৩০০ আসনেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের চিন্তা : সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে ২-৭ বছরের জেল

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির এমন প্রস্তাবসহ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনীর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনীর নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের একেবারে শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে। তার আগেই আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ নিল সরকার। গতকাল দুপুরের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মন্ত্রিসভার বৈঠকের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
বর্তমানে প্রতি জেলার সব কটি নির্বাচনী আসনের জন্য একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকেন। সাধারণত জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) তাদের জেলার নির্বাচনী আসনগুলোর জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা হয়ে থাকেন। ওই আইনেই নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের তাদের পেশাগত কাজে বাধা দিলে দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধানেরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের সংশোধনীগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনীর নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও হয়েছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার বিষয়ে জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা আসনভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এখন কোনটি থাকবে, তা সরকার ঠিক করবে। এছাড়া আরপিওতে নির্বাচন কমিশনের

কার্ডধারী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কেউ এই অপরাধ করলে সর্বনি¤œ দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
তিনি জানান, বিদ্যমান আরপিওতে কিছু ক্ষেত্রে সংশোধনী আনার প্রস্তাব তৈরি করে গত বছরের অক্টোবরে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল ইসি। যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-ফলাফল প্রকাশের পরও অনিয়ম প্রমাণিত হলে নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান, দলের সর্বস্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেয়া, দায়িত্বে অবহেলায় কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা, ভোট গণনার বিবরণী প্রার্থী ও তার এজেন্টদের দেয়া বাধ্যতামূলক করা, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত খেলাপি বিল (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি) পরিশোধের সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র ৩০ দিনের মধ্যে ইসিতে জমা দেয়া ইত্যাদি। আইন মন্ত্রণালয় এসব প্রস্তাব ভেটিং (পরীক্ষা) করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়, যা নিয়ে আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আইনের সংশোধনীর বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কী কী সংশোধনী থাকবে, তা পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত করা হবে।
সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা দিলে ২-৭ বছরের জেল : নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত কাজে বাধা দিলে দুই থেকে সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রেখে ‘প্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত এ আইনটির চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার সময় আরো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
সংশোধনী প্রস্তাবে ইভিএমে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার আঙুলের ছাপে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেয়ার জন্য ব্যালট ইস্যুর বিধান আরপিওতে যুক্তের প্রস্তাব করেছিল ইসি। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে তা সংশোধনী প্রস্তাবে থাকছে না। বিষয়টি সার্কুলার জারি করার বিদ্যমান যে প্রথা রয়েছে, তাই বহাল থাকছে। এছাড়া মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিলখেলাপিরা তাদের খেলাপি টাকা পরিশোধ করলেই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। বিদ্যমান আইনে সাত দিন আগে এসব পরিশোধের বিধান রয়েছে।
ভোটকেন্দ্রে পেশিশক্তির প্রভাব বিস্তার করলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তা কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন বন্ধ করবেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে সংশোধনীতে। পাশাপাশি ব্যালট পেপারের পেছনে অফিসিয়াল সিল ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর না থাকলে তা গণনায় আনা যাবে না এমন বিধান স্পষ্ট করা হয়েছে। ভোটগণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাব প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী বা তার এজেন্টকে দেয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ শুরুর আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টায় কেউ বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ, অস্ত্র ও পেশিশক্তি প্রদর্শন এবং ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের ভয় দেখালে সর্বোচ্চ সাত বছর ও সর্বনি¤œ দুই বছর জেল-জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়