সিপিডির সংবাদ সম্মেলন : নবায়নযোগ্য জ¦ালানি নীতি বাস্তবায়নে বড় বাধা দুর্নীতি

আগের সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ : মতিয়া চৌধুরী, সংসদ উপনেতা

পরের সংবাদ

রমজানের প্রাসঙ্গিকতা : অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। আজ রমজানের দ্বিতীয় দিন। এ মাসের মর্যাদার মূলে রয়েছে সিয়াম সাধনা এবং মানব ইতিহাসের
একমাত্র নির্ভুল মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। ইরশাদ হচ্ছে- ‘শাহরু রামাদানাল্লাযি উনযিলা ফিহিল কুরআন হুদাল্লিন্নাস ওয়া বাইয়িনাতিম মিনাল হুদা ওয়াল ফোরকান’ অর্থাৎ ইহা সেই রমজান মাস, যাতে অবতীর্ণ হয়েছে আল-কুরআন; যা মানবতার জন্য সৎপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী (২ : ১৮৫)। মাহে রমজানের মাহাত্ম্য এই ঐশী মহাগ্রন্থকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। মহান আল্লাহর পক্ষ হতে যে দুটি বিশেষ নেয়ামত প্রদত্ত হয়েছে, আল কুরআন তার একটি। আল্লাহপাক বলেন- ‘কাদ জাআকুম মিনাল্লাহি নূরুন ওয়া কিতাবুম মুবিন’ অর্থাৎ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য এসেছে নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব। উল্লেখ্য, এ কিতাব হচ্ছে- ‘তিবয়ানাল লিকুল্লি শাইয়িন’ অর্থাৎ সব কিছুর এক নির্ভুল বয়ান। আর এই বয়ান তথা বর্ণনার প্রারম্ভকাল হচ্ছে মাহে রমজানের কোনো এক বরকতময় মুহূর্ত; সে কারণেই রমজান ও তার তাৎপর্য এক স্বতন্ত্র মহিমা সংরক্ষণ করে।
মাহে রমজানের খাতিরে শয়তানকে শিকলাবদ্ধ করা হয়, রোজাদারের জন্য ইবাদতের নির্বিঘœ পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া হয়, জান্নাতের দ্বারসমূহকে উন্মুক্ত আর জাহান্নামের দ্বারসমূহকে বন্ধ করে দেয়া হয়, একটি নফলকে ফরজের সমান মর্যাদায় উন্নীত করা হয় এবং একটি ফরজকে অন্য সময়ের সত্তরটি ফরজ পালনের সমান গুরুত্ব ও সওয়াব প্রদান করা হয়। রোজাদারের মুখের গন্ধ মহান আল্লাহর নিকট মৃগনাভির সুগন্ধির চাইতেও প্রিয়তর। রোজা পালনের বিনিময়ে স্বয়ং আল্লাহই এর প্রতিদান হয়ে যান, সেহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত আল্লাহর বিশেষ ফেরেশতাগণ রোজাদারের প্রতি রহমত, বরকত, নাজাত ও সর্বপ্রকার কল্যাণের নিমিত্তে প্রার্থনায় লিপ্ত থাকেন এবং সর্বোপরি রোজাদারের কোনো দোয়া মহান আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। আল্লাহ ও ফেরেশতাগণ সেহরি খাওয়া বান্দাদের ওপর রহমতের বারিধারা বর্ষণ করতে থাকেন, রোজাদারের জন্য পরম রব গর্ববোধ করতে থাকেন এবং ইফতারের পুণ্যলগ্নে রোজার কবুলিয়তের এক অনুপম আবহ তৈরি হয়ে থাকে। মহানবী (সা.)-এর ঘোষণা- ‘লিস্সায়েমে ফারহাতান ফারহাতু ইন্দা ফিতরিহি ওয়া ফারহাতু ইন্দা লিকায়ে রাব্বিহি’ অর্থাৎ রোজাদারের খুশির সময় দুটি, একটি হলো ইফতারের সময় আর অন্যটি দিদারে রব তথা পরম ¯্রষ্টার সঙ্গে মোলাকাতের সময়। রোজাদারের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়, রাইয়ান নামক সুনির্দিষ্ট গেট রোজাদারের জন্য বরাদ্দ; যে দ্বার দিয়ে শুধু রোজাদার বান্দাহই পরম শান্তির বেহেশতে প্রবিষ্ট হতে পারবে। রমজানে আসে প্রভুর অপরিসীম করুণা, সীমাহীন ক্ষমা আর সর্বাঙ্গীন মুক্তি। পাশাপাশি আসে শারীরিক সুস্থতা। কেননা রোজা হচ্ছে শরীরের জন্য জাকাত। পরিমিত ভোজনে কমে যায় মেদ-ভুঁড়ি আর সেরে যায় অনেক জটিল-কঠিন রোগ এবং অর্জিত হয় বঞ্চিত-দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। স্বল্পভাষী হওয়ার এক অমোঘ সুযোগ এনে দেয় মাহে রমজান; কেননা বেহুদা বাক্যব্যয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণা ভোগ ব্যতীত রোজাদারের আর কোনো প্রাপ্তি থাকে না। সেহরি, দিবসের যাবতীয় ইবাদত, ইফতার আর তারাবির নামাজ- সবকিছুতেই অর্জিত হয় বেশুমার নেকি। রমজান প্রাপ্তির মাস; সংযম, সহিষ্ণুতা, উদারতা আর মানবিকতাকে নতুন করে ধারণ করার তালিম দেয় রমজান। তাই রমজানের প্রাসঙ্গিকতা আমাদের জীবনে ব্যাপক তাৎপর্য বহন করে।

ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন : চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়