প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

কর্মশালায় বক্তারা : তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে হবে

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সুধীজনরা। তারা বলছেন, দেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। এগুলো দূর করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির আলোকে আইনটিকে সংশোধন প্রয়োজন। আর এই কাজটি ত্বরান্বিত করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন : গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি এন্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
কর্মশালা শেষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ১৭ জন সাংবাদিককে এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) মিডিয়া ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। বক্তব্য রাখেন হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউনুছুর রহমান, ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফজিলাতুন নেসা মালিক, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি প্রমুখ।
শ্যামল দত্ত বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যে দ্বিচারিতা রয়েছে। সরকার একদিকে তামাক নিয়ন্ত্রণের পক্ষে যেমন কাজ করছে, তেমনি তামাকের পক্ষে শক্ত লবিংও করছে। দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু পকেট পকেট কিছু ফাঁকফোকর এখনো রয়ে গেছে। যেগুলোকে আমরা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারছি না।
হৃদরোগসহ স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা করা প্রয়োজন উল্লেখ করে শ্যামল দত্ত বলেন, হৃদরোগে আক্রান্তের অনেক কারণ আছে। কিন্তু এই কারণগুলোর আরো গভীরে যাওয়া দরকার। করোনাকালে গণমাধ্যমের চোখ কতটা প্রখর ছিল তা বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন আছে। আমরা তখন বিশেষ সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। ভবিষ্যতে যে এমনটা হবে না তা নয়। তাই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ৬টি দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটের মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
অন্যান্য বক্তা বলেন, বিশ্বে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সঙ্গেই তামাক জড়িত। দেশে প্রতি বছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। যত দ্রুত আইনটি সংশোধন করা হবে, তত বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়