মাদ্রাসা কর্মচারীর কাণ্ড : জাতীয় পরিচয়পত্র ও এমপিওতে ভিন্ন তারিখ!

আগের সংবাদ

যে কারণে দলে নেই মাহমুদউল্লাহ

পরের সংবাদ

আ.লীগের উপকমিটি রোজার আগেই : পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য ¤øান করার অপচেষ্টা করেছে বিতর্কিত কিছু নেতা নামধারী ব্যক্তির অনৈতিক কর্মকাণ্ড। করোনার জালিয়াতিকাণ্ডে গ্রেপ্তার রিজেন্ট শাহেদের মতো এদের মধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে। কারো বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কাউকে শাস্তিস্বরূপ দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পোড়খাওয়া নেতাকর্মীরা বলছেন, এরা প্রায় সবাই হাইব্রিড। দুধের মাছি। এছাড়া বড় পদেও নেই। এদের বড় একটা অংশ ছিল দলের উপকমিটিতে। এ কারণে গত ২৪ ডিসেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত কমিটির পর আসন্ন উপকমিটি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। সূত্রমতে, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ছাড়া ১৮টি সম্পাদকীয় বিভাগের উপকমিটি আগামী রমজানের আগেই গঠন করা হবে। কমিটিতে হাইব্রিডদের সংখ্যা কমিয়ে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ২৫ এর ‘ক’ উপধারায় দলের সভাপতির কার্যাবলিতে বলা হয়েছে, সভাপতি বিভাগীয় (সম্পাদকীয় বিভাগ) উপকমিটিসমূহ গঠন করবেন। তিনি প্রত্যেক উপকমিটির জন্য অনূর্ধ্ব পাঁচজন সহসম্পাদক মনোনীত করবেন। এদিকে বর্তমানে আওয়ামী লীগের ১৯টি সম্পাদক পদ রয়েছে। তার মধ্যে শ্রমবিষয়ক সম্পাদক পদটি এখনো শূন্য। এ পদে এখনো কাউকে চূড়ান্ত করেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি।
গত ২২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিভাগীয় উপকমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেন দলীয় সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান করা হয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকে। এ কমিটির কো-চেয়ারম্যান করা হয় ইনাম আহমেদ চৌধুরীকে। আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরকে। আইনবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান করা হয় এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. মির্জা জলিল, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইদুর রহমান খান এবং কো-চেয়ারম্যান করা হয় অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে। দপ্তর উপকমিটির চেয়ারম্যান করা হয় প্রফেসর ড. অনুপম সেনকে। ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন এ কে এম রহমত উল্লাহ ও কো-চেয়ারম্যান হন চৌধুরী খালেকুজ্জামান, ধর্মবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন খন্দকার গোলাম মওলা নকশবন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান হন মো. সাহাবুদ্দিন; কো-চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক ড. মো. হোসেন মনসুর, মহিলাবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক ড. সুলতানা শফি; কো-চেয়ারম্যান হন মাজেদা রফিকুন্নেছা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলম, যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন মোজাফফর হোসেন পল্টু; কো-চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক; কো-চেয়ারম্যান হন নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন আব্দুল হাফিজ মল্লিক; কো-চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সিরাজ,

সংস্কৃতিবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন আতাউর রহমান এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান হন অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক।
এদিকে উপকমিটিতে ঠাঁই পেতে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যানদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। কেউ কেউ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের বাসায়, কেউ অফিসে, কেউ দলীয় কর্মসূচিতে সাক্ষাৎ করে পদ প্রত্যাশার কথা বলছেন। অনেকে আবার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢুঁ মারছেন। তবে এবার হাইব্রিড নয়, প্রতিশ্রæতিশীল রাজনীতি যারা করেন তাদের নিয়ে কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, দলের বিভিন্ন দুঃসময়ে যারা নির্যাতিত হয়েছেন, অবদান রেখেছেন, রাজপথে ছিলেন কিংবা সহযোগী ও সমমনা সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাননি বা কেন্দ্রীয় কমিটির সংখ্যা স্বল্পতায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি, তারা উপকমিটিতে ঠাঁই পাবেন।
উপকমিটিগুলো পুনর্গঠন করতে বেশ কয়েকবার সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও তাগিদ দিয়েছেন। তিনি আসন্ন রমজান মাসের আগে উপকমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘উপকমিটির চেয়ারম্যান-সদস্যসচিবের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কাজেই উপকমিটিগুলো পুনর্গঠন করতে হবে। সে প্রক্রিয়ায় যার যার সীমানা থেকে উদ্যোগ নেবেন। এ বিষয়ে আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
এদিকে উপকমিটিগুলো কত সদস্যবিশিষ্ট হবে তা গঠনতন্ত্রে উল্লেখ না থাকলেও দলের সাধারণ সম্পাদক বিগত সময়ে এগুলো ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই সেই পরামর্শ মানেননি। কেউ ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করলেও অনেকে ১০১ থেকে ১৫০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। এবারের উপকমিটিতে শাহেদ, হেলেনা জাহাঙ্গীরের মতো বিতর্কিতরা যেন ঠাঁই না পায় সেজন্য সতর্ক রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা ভোরের কাগজকে বলেন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। কমিটির চেয়াম্যান, কো-চেয়ারম্যান রয়েছেন- তারা বিষয়টি দেখছেন। এছাড়া সিনিয়র নেতারা রয়েছেন। তারাও দায়িত্ব পালন করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়