অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদিকে জমির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

আগের সংবাদ

চিকিৎসা গবেষণায় আগ্রহ কম : বরাদ্দ, অবকাঠামো সীমিত > প্রণোদনা স্বল্পতা > প্রাইভেট প্র্যাকটিসে মনোযোগ বেশি

পরের সংবাদ

থাকবে বিদেশিরাও : ভোট পর্যবেক্ষণে ২১০টি সংস্থার আবেদন

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এবার বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সুযোগ দেবার চিন্তা-ভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেজন্য দেশি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে ২১০টি দেশীয় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার আবেদন ইসিতে জমা পড়েছে। নির্বাচনের আগে বিদেশি মিশন, হাইকমিশন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার কাছ থেকে আবেদন আশা করছে ইসি।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করার নিয়ম আছে। আমরা এবার দেশি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার পাশাপাশি বিদেশি মিশন, পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ও দূতাবাসগুলোকে জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর আহ্বান জানাব। ইইউ ছাড়াও কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির বিষয় জানতে চান। তখন আমরা তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা জাতিকে এটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
সিইসি জানান, কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বিদেশি দূতাবাসকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বিদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন। আশা করব, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অধিক সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক অংশ নেবেন।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। এর আগেও এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনগুলো বিদেশি মিশন, সংস্থাগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সুতরাং এবারো তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ বিষয়ে গতকাল শনিবার ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) ও যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান আরজু জানান, প্রতি ৫ বছর অন্তর নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আমরা আবেদন আহ্বান করে থাকি। যেহেতু বিদ্যমান নিবন্ধিত সংস্থাগুলোর মেয়াদ শেষ হবে ১১ জুলাই, তাই তাদের আবারো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে প্রজ্ঞাপণ জারি করা হয়। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে, প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। ইসির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জুনের মধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম চূড়ান্ত করা হবে।
ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) আশাদুল হক জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৯৯টি এবং নির্ধারিত সময়ের পরে আরো ১১টি সংস্থার আবেদন জমা পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এসব আবেদন প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই হবে। এরপর প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। প্রাথমিক বাছাইয়ে যাদের আবেদন যোগ্য বলে মনে হবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের দাবি-আপত্তি আছে কিনা জানতে ১৫ দিনের সময় দিয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। যদি কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তাহলে কমিশন উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, অনেকগুলো বিদেশি মিশন, ইইউ, এনডিআই, আইআরইউ, এএনএফআরইএল, পিএকেএফআরইএল, স্যাপ, ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েল্থ থেকে আমন্ত্রিত বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি পর্যবেক্ষকরাও ভোট পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।
দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে আসা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আমি যতদূর জানি এবার ১৯৯টি দেশীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইসিতে আবেদন জানিয়েছে। পর্যবেক্ষণ করার সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, জানিপপ ১৯৯৫ সাল থেকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রায় ৬ হাজার প্রতিনিধি পর্যবেক্ষণ কাজে লিপ্ত থাকে। পর্যবেক্ষকরা মাঠে থাকলে ভোট কারচুপি বা কোনো ধরনের দুষ্টু বুদ্ধি নিয়ে ভোটের মাঠে নামা ব্যক্তি বা গোষ্ঠী একটু সচেতন হয়। তারা মনে করে, পর্যবেক্ষকরা দেখে ফেলবে বা কারচুপি ধরে ফেলবে। সেজন্য তারা অনিয়ম করতে পারে না। আবার দেশীয় বা স্থানীয় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা না থাকলে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ঢালাওভাবে একটা রিপোর্ট দিয়ে দিতে পারে, যা রাষ্ট্রের পক্ষে হিতকর নাও হতে পারে। সেজন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণের একটা বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে ১১৯টি সংস্থাকে পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দিয়েছিল তৎকালীন কে এম নূরুল হুদা কমিশন। এছাড়া ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি ছাড়াও ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েল্থ থেকে আমন্ত্রিত ৩৮ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন বাংলাদেশি ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়