পার্বত্য শান্তি চুক্তি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার

আগের সংবাদ

‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান

পরের সংবাদ

অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদিকে জমির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৩ , ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার সৌদি আরবের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) জমির প্রস্তাব দিয়েছেন এবং তেলসমৃদ্ধ দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আরো সৌদি বিনিয়োগ চাই।’
সফররত সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবির নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল সন্ধ্যায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই অনুরোধ জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবকে বাংলাদেশে তেল শোধনাগার স্থাপনেরও প্রস্তাব দেন যেখানে অপরিশোধিত তেলসহ সব ধরনের তেল পরিশোধন করা যায়। বৈঠকে উভয়ে পারস্পরিক স্বার্থে উভয় দেশের ব্যবসা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। সৌদি আরবের মন্ত্রী বলেন, তার দেশের শীর্ষ বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশে আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব সমাধানের মাধ্যমে বিনিয়োগ পদ্ধতি সহজীকরণের আহ্বান জানান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বিনিয়োগ পদ্ধতি সহজ ও দ্রুত করার জন্য বলেছেন।
প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিশাল বাজার থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেসব দেশের সঙ্গে জলপথসহ সব পথে কানেকটিভিটি জোরদার করার মাধ্যমে তার সরকার পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ ও মসৃণ করতে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নদী খনন করে জলপথের নাব্য বাড়ানোর মাধ্যমে জলপথকে সচল করে তুলছে।
তিনি বলেন, তার সরকার সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বাংলাদেশি শ্রমিকদের আরবি ভাষা ভালোভাবে জানার সুবিধার্থে একটি আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট তৈরি করতে চায়, যাতে তারা আরবি ভাষার লোকদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
সৌদি মন্ত্রী বলেন, তাদের ক্রাউন প্রিন্স বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ সৌদি ক্রাউন প্রিন্সকে গ্রহণ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ওমরাহ পালনের আমন্ত্রণ জানান।
সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের দ্রুত উন্নয়নেরও প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সৌদি মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউম্যানিটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি। তিনি বলেন, গত ১০ মাসে ৬ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি চাকরিপ্রার্থী সে দেশে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকায় সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ ময়মনসিংহ যাচ্ছেন : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : প্রায় পাঁচ বছর পর আজ শনিবার চতুর্থবার ময়মনসিংহে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৩টায় নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
এর আগে ময়মনসিংহের উন্নয়নে তিনি উদ্বোধন করবেন ৭৩টি নতুন প্রকল্প এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ৩০টি প্রকল্পের। গতকাল শুক্রবার বিকালে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনকে ঘিরে ময়মনসিংহ বিভাগের সর্বত্রই এখন উৎসবের আমেজ বইছে। ব্যানার-ফেস্টুন, বিলবোর্ড আর দৃষ্টিনন্দন তোরণে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রতিটি সড়ক, সড়কদ্বীপসহ অলিগলি থেকে রাজপথ। তাই ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে এবার স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা হবে বলে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের।
সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন ৭৩টি প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসংলগ্ন স্থানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ। ত্রিশাল উপজেলায় এক হাজার আসনবিশিষ্ট অডিটোরিয়াম কাম কম্পিউটার সেন্টার নির্মাণ। ৩২ পৌরসভার পানি সরবরাহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্প। ২১টি বিদ্যালয় ও কলেজের ৪ তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ। এছাড়া ৫টি ব্রিজ, দুটি স্মৃতিসৌধ, তিনটি বাজার ও ৬টি ভবন নির্মাণ।
সেই সঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ৩০ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল কাম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ, ছত্রপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ১০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ, আনন্দ মোহন সরকারি কলেজে নির্মাণাধীন ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট ৫ তলা হোস্টেল ভবন নির্মাণ, ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ৩টি ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
এছাড়া চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক অপারেশন প্লানের আওতায় ১০তলা ভিত বিশিষ্ট ৬তলা বার্ণ ইউনিট নির্মাণ, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের ৭টি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৪তলা ভিত বিশিষ্ট ৩তলা ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয় ও মাল্টিপারপাস হল ইত্যাদি।
সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর সার্কিট হাউজের জনসভায় ১০৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৯৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ নগরীকে। স্তরে স্তরে নিরাপত্তায় চলছে র‌্যাব, পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কঠোর নজরদারি।
এবিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভূঁঞা বলেন, জনসভাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এতে নিয়োজিত রয়েছেন তিন হাজারের অধিক পুলিশ। ফলে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠের আশপাশের এলাকায় সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে নগরীতে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়