এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

জয় বাংলা কনসার্ট : বাংলা গানে উত্তাল আর্মি স্টেডিয়াম

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:১২ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জনতার ঢেউ থেকে বারবার ভেসে আসছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। সেই স্লোগানে প্রকম্পিত স্টেডিয়ামের প্রতিটি কোনা। প্রকম্পিত স্লোগানের মাঝেই মঞ্চে বাজছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতিকে মুক্তির পথে আহ্বান জানানো সেই সেøাগানে বার বার কেঁপে উঠছে স্টেডিয়াম। বাক্যে বাক্যে, শব্দে শব্দে তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ¡াস আর উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ছে পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে। যেন ’৭১-এর ৭ মার্চের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তথা রেসকোর্স ময়দানই মূর্ত হয়ে উঠেছে। ইউনেস্কো স্বীকৃত ইতিহাসের অংশ দখল করে রাখা সেই ভাষণের সঙ্গে সুরের মুর্চ্ছনায় নান্দনিকতার সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে সবাই।
গতকাল বুধবার এমন দৃশ্যই ছিল রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জয় বাংলা কনসার্টে। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবারো অনুষ্ঠিত হলো ‘মুক্তির প্রেরণাদায়ী’ স্লোগানের এই কনসার্ট। ৭ মার্চ পবিত্র শবেবরাত হওয়ায় গতকাল ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় এবারের কনসার্ট।
ব্যান্ডের সুরের উন্মাদনায় তারুণ্যের উন্মাদনা ছিল পুরো আসরে। নিজেদের গানের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ছিল দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন। একাত্তরের রণাঙ্গণের অনুপ্রেরণাদায়ী গানে গানে লাল সবুজের পতাকা ও ৫৬ হাজার বর্গমাইলের স্বদেশপ্রেম চিত্রিত হয় অনুষ্ঠানজুড়ে।
ইয়াং বাংলার সেক্রেটারিয়েট সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এই কনসার্টের শুরুতে রাজাধানীতে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণগুলোয় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সন্ধ্যায় কাতার থেকে দেশে ফিরেই কনসার্টে উপস্থিত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ রেহানার ছেলে ও সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক শুরু থেকেই কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর ‘জয় বাংলা’ কনসার্টে অংশ নেয় অ্যাভয়েড রাফা, ক্রিপটিক ফেইট, আর্টসেল, চিরকুট, নেমেসিস, লালন, আরেকটা রক ব্যান্ড, মেঘদল ও কার্নিভাল। বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই রক ব্যান্ড পরিবেশন করে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের গান ‘আমারই দেশ সব মানুষের’। পরে তারা আরো শোনায় নিজস্ব গান ‘তাসের প্রাসাদ’ ও ‘ঘুম পাড়ানোর গান’। নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুর করা ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ গানটি দিয়ে নিজেদের পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডদল কার্নিভাল। এরপর তারা আরো শোনায় ‘ভ্রম’, ‘আমার সত্য’ ও ‘সেইসব দিনরাত্রি’ গানগুলো।
মেঘদল পরিবেশন করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’, ‘এসো আমার শহরে’, ‘চার চার চৌকো জানালায়’, ‘নির্বাণ’ এবং ‘এ হাওয়া আমি এখানে’। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ দিয়ে শুরু করে ক্রিপটিক ফেইট একে একে শোনায় ‘ভোরের অপেক্ষা’, ‘রাতের শেষ’, ‘রং’, ‘প্রতিবাদ’. ‘ভবঘুরে’ এবং ‘আক্রমণ’ গানগুলো।
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘মাগো ভাবনা কেন’ গানটি নিয়ে মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল নেমেসিস। এরপর এই গানের দলটি আরো পরিবেশন করে ‘জানালা’, ‘কোনোদিন’, ‘বীর’, ‘অবচেতন’, ‘গণজোয়ার’ ও ‘কবে’ ইত্যাদি।
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের গান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে দিয়ে শুরু করে ব্যান্ডদল লালন একে একে শোনায় ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, ‘এক চোখেতে হাসন কান্দে’, ‘রুহানি’, ‘ভবের পাগল’ গানগুলো। আর্টসেল গেয়ে শোনায় এই বিদায়ে, অন্যসময়, অনিকেত প্রান্তর, দুঃখ বিলাশ, কান্ডারি হুঁশিয়ার গানগুলো। ব্যান্ডের সুরের মূর্চ্ছনার পাশাপাশি আর্মি স্টেডিয়ামের চারপাশে বড় পর্দায় দেখানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়