সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র : পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনা

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজকের ঢাকার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। সেই ১৬১০ সালে যখন প্রথম রাজধানী হয়েছিল তখন থেকেই রাজধানী ঢাকার যাত্রা শুরু। যুগে যুগে অনেক মানুষের পদার্পণ ঘটে এই ঢাকার মাটিতে। মোঘল আমলের মাধ্যমেই মূলত ঢাকার গোড়াপত্তন হয়। কালের পরিক্রমায় অসংখ্য সম্প্রদায় এই ঢাকাতে এসে বসবাস শুরু করে। স্থাপন করে নানা ধরনের ঐতিহাসিক স্থাপনা। আজকের আধুনিক ঢাকা বলতে গুলশান, বারিধারা, ধানমন্ডির মতো আভিজাত্যপূর্ণ এলাকাকেই বোঝায়, কিন্তু একসময় এই ঢাকার গোড়াপত্তন শুরু হয় আজকের পুরান ঢাকাকে কেন্দ্র করে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা লোকালয়গুলো আজকে ঢাকার পর্যটন আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। প্রতিদিন অসংখ্য ভিনদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের জায়গা হয়ে উঠছে এই পুরান ঢাকা। ঢাকায় এলে একনজরের জন্য তারা ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখতে চায়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, তারা মসজিদ, আর্মেনীয় চার্চ, ঢাকেশ্বরী মন্দির, কার্জন হল, শাঁখারীবাজারসহ আরও কিছু দর্শনীয় স্থান। বিদেশি পর্যটকরা যখন ঢাকার আভিজাত্যপূর্ণ এলাকায় এসে থাকে, তখন পুরান ঢাকায় ঘুরতে গেলে স্বভাবতই তারা ঢাকার মধ্যে দুটি ভাগের কথা বলে ওঠে, আধুনিক ঢাকা এবং পুরান ঢাকা। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা, ছোট সংকীর্ণ রাস্তায় তারা পায়ে হেঁটে উপভোগ করে সেখানকার জনজীবন। বিশেষ করে শাঁখারীবাজার দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এই পরিবেশটা বিরাজ করে। পুরনো জীর্ণশীর্ণ ভবনগুলো তাদের নজর কাড়ে।
প্রাচীনকালে এদেশে হাট-বাজারগুলো জমে উঠত মূলত নদীকে কেন্দ্র করেই। চলত পুরোদমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে ওঠা আজকের সদরঘাট তারই পরিচয় বহন করে। বুড়িগঙ্গা নদী পার হলেই চোখে পড়বে কেরানীগঞ্জের পুরনো মার্কেট, বিভিন্ন ফ্যাক্টরিসহ জাহাজ মেরামত কারখানা। বিদেশি পর্যটকরা বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে কেরানীগঞ্জের অর্থাৎ নদীর অপর প্রান্তের সৌন্দর্য অবলোকন করতে যায়। পুরান ঢাকার অলিগলিতে গড়ে ওঠা নানা ধরনের স্থাপনা একেকটা ইতিহাস বহন করে। পুরান ঢাকার রাস্তাগুলো সরু হওয়ায় রাস্তায় জ্যাম-জট যেন নিত্যসঙ্গী। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের নদীপথের যাতায়াত ব্যবস্থা মূলত এই সদরঘাট কেন্দ্রিক। যেই কারণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে সদরঘাট এলাকা। যেই কারণে চুরি, ছিনতাই যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। মানুষের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব সেখানে। বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ঘাটতি সেখানে পরিলক্ষিত।
শুধু যে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ভিনদেশিদের আকর্ষণ করছে তা না, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়েও রয়েছে অনেক আগ্রহ। মিষ্টি, দই আর কাচ্চি বিরিয়ানি ইত্যাদি যেন ভিনদেশিসহ দেশের সবাইকে আকর্ষণ করছে। সবকিছু মিলিয়ে পুরান ঢাকার কদর দেশি-বিদেশি সবার কাছেই বাড়ছে। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি অবহেলিত বললেই চলে। যদি এই পুরান ঢাকাকে পর্যটন আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতে বিদেশি পর্যটকদের সার্বিক সুবিধা দেয় তাহলে একদিক দিয়ে যেমন সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আসবে, অন্যদিকে বিদেশি পর্যটকদের পুরান ঢাকায় ভ্রমণের আগ্রহ বাড়বে। বিশ্বের মধ্যে বহিঃপ্রকাশ ঘটবে পুরান ঢাকার স্থাপনাগুলোর।

মো. কাউসার আহমেদ : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়