উপাচার্য ড. মশিউর রহমান : সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখতে হবে

আগের সংবাদ

সংস্কারের বিরূপ প্রভাব বাজারে : আইএমএফের শর্ত মেনে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রত্যাহার করায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

পরের সংবাদ

চুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি চালু রেখে ই-টিকেটিং টেকসই হবে না : ড. এম শামসুল হক, অধ্যাপক, বুয়েট

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেছেন, গণপরিবহনে চুক্তিভিত্তিক পদ্ধতি চালু রেখে কোন ভালো উদ্যোগই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। আগে পরিবহন শ্রমিকদের মাসিক বেতনের আওতায় আনতে হবে। ই-টিকেটিং পদ্ধতির মতো এই ভালো উদ্যোগটাকে টেকসইভাবে বাস্তবায়ন করতে গেলে পরিবহন শ্রমিকদের এই বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে হবে। ই-টিকেটিং পদ্ধতি নিয়ে ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. এম শামসুল হক বলেন, সব ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে যেতে হবে। অনেক আগে বিআরটিসি র‌্যাপিড পাশ দিয়ে একটি সিস্টেম চালু করেছিলো। কিন্তু চালক ও কন্ট্রাকটররা দেখলো দিন শেষে সব টাকা কোম্পানি নিয়ে যাচ্ছে। তারা আর অসৎ উপায়ে নিজেদের পকেট ভরতে পারছে না। তখন শ্রমিকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। সব যাত্রীকে ই-টিকেট দেয়া হলে শ্রমিকদের পকেটে টাকা যাবে না। সব টাকা মালিককে তুলে দেয়ার মতো মানসিকতায় এখনো তারা আসতে পারেনি। কারণ তারা এখনো মাসিক বেতনে কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। বড় বড় কোম্পানি নিজেরাই এ ধরনের সিস্টেম চালু করতে পারে, তাতে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। হাতিরঝিল ও গুলশান এ ধরনের সার্ভিসের চমৎকার উদাহরণ হয়ে আছে। সেখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না, কারণ ওইসব পরিবহনের শ্রমিকদের মাসিক ভিত্তিতে বেতন দেয়া হয়।
এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল লোকজন কাজটি করতে গিয়ে জট পাকিয়ে ফেলেছে। বিআরটিএতে বসে যারা রুট পারমিট দেন, তাদের কারোই রুট পারমিট সম্পর্কে কোনো বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা নাই। তারা পদাধিকার বলে পুলিশের নেতৃত্বে বৈঠক করে বিভিন্ন কায়দায় রুট পারমিট দিয়ে দেয়, এটাই প্রধান সমস্যা। যখন একই করিডোরে অনেকগুলো কোম্পানিকে বাস চালানোর সুযোগ দেয়া হয়, তখনই অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। মালিক তখন টাকা উঠানোর জন্য চুক্তিভিত্তিকভাবে চালক ও কন্ট্রাকটরের কাছে বাস দিয়ে দেয়, কারণ দিনশেষে তার টাকা প্রয়োজন। বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে থাকলে এটা সম্ভব হতো না। এখন ই-টিকেটিং সিস্টেম কার্যকরভাবে চালু করতে গেলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ধারাবাহিক সরকার আকাশ জয়, পাতাল জয় করেছে, কিন্তু পরিবহন সেক্টর জয় করতে পারেনি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এই সরকারের সেই সক্ষমতা আছে এবং তাদের কার্যকর করে দেখানো উচিত।
তিনি বলেন, সিস্টেমটাকে এনালগ রেখে আমি যদি ডিজিটাল করতে চাই তাহলে উদ্যোগটা ভালো হলেও টেকসই হবে না। পুরো প্রক্রিয়াটাকে স্বচ্ছ করতে হবে। তাহলে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে। যাত্রীর কাছ থেকে বেশি ভাড়াও আদায় হবে না এবং সড়কে বিশৃঙ্খলার অবসান হবে। সমস্যা জিইয়ে রেখে পদ্ধতি কার্যকর হবে না, সেবার মানও বাড়বে না। এখন যে পদ্ধতিতে করা হচ্ছে তাতে ককটেল বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এখন তারা সিস্টেমে আনার উদ্যোগ নিয়েও কোনো পরিবহন মালিককেই আর সরে যেতে বলতে পারছেন না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়