উপাচার্য ড. মশিউর রহমান : সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখতে হবে

আগের সংবাদ

সংস্কারের বিরূপ প্রভাব বাজারে : আইএমএফের শর্ত মেনে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি প্রত্যাহার করায় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে

পরের সংবাদ

চিকিৎসা গবেষণায় মনোযোগের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর : চাকরি-প্র্যাকটিস একসঙ্গে করলে গবেষণাকর্ম হয় না

প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের অগ্রযাত্রা এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কোনো অংশে কারো থেকে পিছিয়ে থাকব না। কারো কাছে হাত পেতে চলব না। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন স্মার্ট জনগোষ্ঠী। আমাদের অর্থনীতি হবে স্মার্ট অর্থনীতি। কৃষি, স্বাস্থ্য সবক্ষেত্রে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ জনকে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ২১ জনকে ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ১৬ জনকে ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ এর চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ৬৮২ জনকে প্রায় ২৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে। এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর পর্যায়ে ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ এর আওতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৯-১০ থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭০১ জন গবেষককে প্রায় ১৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার বৃত্তি বা অনুদান দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকেও দেয়া হচ্ছে ফেলোশিপ-বৃত্তি-উপবৃত্তি।
দেশের স্বাস্থ্য খাতে প্রত্যাশিত গবেষণা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণা হলেও স্বাস্থ্য খাতে গবেষণাটা খুবই সীমিত। আমাদের যারা ডাক্তার হন, ডাক্তার হয়ে পুলিশের চাকরিতে চলে যান বা রাজনীতিবিদ হয়ে যান। কেউ ডাক্তারিও করেন না। গবেষণাও করেন না। আরেক শ্রেণি আছেন, তারা শুধু টাকা কামাই করতেই ব্যস্ত। সরকারি চাকরিও করবে, আবার প্রাইভেটে প্র্যাকটিসও করবে। এভাবে চাকরি আর প্র্যাকটিস করলে সেখানে আর গবেষণা হয় না। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ মনোযোগ দেয়ার তাগিদ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে গবেষণা খুবই সীমিত কয়েকজন করেন। আরো বেশি যেন গবেষণা হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সরকারি দলের এমপি ডাক্তার রুহুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি চিকিৎসক। উনি যেন স্বাস্থ্যের গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আণবিক শক্তি কমিশন, ইউজিসি, ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন, স্থলসীমানা চুক্তি, সমুদ্রসীমা আইন করেন। পঁচাত্তরের পরবর্তী সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তবে আমরা এসে সম্পন্ন করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতির পিতা ভিত্তিটা তৈরি করে গেছেন।
প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা ভোকেশনাল শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কর্মসংস্থান হাইটেক পার্ট, হাইটেক সিটি, ইনকিউভেশন সেন্টার করে দিচ্ছি। শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি সবকিছুতেই আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে পারছি। তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশনে আমাদের আমদানি পণ্যে ব্যাপক বাধা পেতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। তারপরও এসব মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, কৃষি গবেষণায় সব থেকে বেশি সফলতা আমরা পেয়েছি। লবণাক্তসহিষ্ণু ধান আমরা দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদন করছি। আমাদের আরো দক্ষ বিজ্ঞানী দরকার। আমরা সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। যারা ফেলোশিপ পেয়েছেন, আন্তরিকতার সঙ্গে গবেষণা করবেন। জানতেও চাই কী

কী উদ্ভাবন করলেন, এটা কতটুকু দেশের জন্য কাজে লাগবে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জে আমাদের লোকবল কম লাগবে কিন্তু টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। তার জন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার। তবে আমরা সম্পূর্ণ সেদিকে যেতে চাই না। আমরা শ্রমনির্ভর শিল্পও করতে চাই। কারণ, আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। দুটো মিলিয়ে কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, সেই চিন্তাটা সবার মাথায় থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়