ঝালনাথ খানাল : পশ্চিমারা নিজেদের স্বার্থে হুকুমজারি করছে

আগের সংবাদ

কে পাচ্ছেন ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার

পরের সংবাদ

মশা নিধনে পদক্ষেপ জরুরি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইদানীং নগরীতে এত বেশি মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে যে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন পর্যন্ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা বাসায় বসে পড়তে পারছে না, গৃহিণীরা রান্না ঘরে বসে রান্না করতে পারছে না। মোটকথা বলতে গেলে রাতদিন সমানভাবে মশার কামড়ে অস্তির নগরবাসী। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে নালা-নর্দমা, ডোবা, লাইট পোস্টের নিচে অসংখ্য মশা উড়ে বেড়াচ্ছে। মশার কয়েল, স্প্রে কিছুই কাজ করছে না এসব মশার বিরুদ্ধে। এরা দলে দলে শিশু, যুবক, বৃদ্ধদের কামড়িয়েই যাচ্ছে। হঠাৎ করে এত বেশি মশার উৎপত্তি কী করে হলো তা বোঝা মুশকিল। তবে শীত মৌসুম প্রায় শেষের দিকে এবং এখন একটু একটু গরম পড়তে শুরু করায় মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে মশাদের বংশ বিস্তার করতে সুবিধা হয়, ফলে এ সময় মশার বিচরণ বেশি থাকে। তাছাড়া শহরাঞ্চলের নালা নর্দমাগুলো যেভাবে ময়লা, আবর্জনা, প্লাস্টিকের বোতলে জ্যাম হয়ে আছে তাতে মশারা অতি সহজেই বংশ বিস্তার করতে পারছে। এখনই এসব নালা-নর্দমা পরিষ্কার করে তাতে মশার ওষুধ ছিটানো দরকার তা না হলে মশার পুরোপুরি বংশরোধ করা সম্ভব হবে না।
শহরে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অনেক সময় মশক নিধন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন এলাকায় মশার ওষুধ ছিটানো হয়। এটি অনেক সময় কোনো কোনো এলাকায় এক দুই মাসেও একবার ছিটায় না, এতে উক্ত এলাকাগুলোতে মশার বংশবৃদ্ধি খুব বেশি করে ঘটে, তখন ওসব জায়গার মানুষ খুব বেশি মশার অত্যাচারের শিকার হয়। বর্তমানে শহরজুড়ে মশার বিরামহীন অত্যাচার চলছে। সকাল-সন্ধ্যা, দিন-রাত প্রতিটি সময়েই মশার জ্বালায় অস্থির হচ্ছে নগরবাসী। অনেকে মশার স্প্রে ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না। কেউ কেউ মশার অত্যাচারে দিনরাত তাদের শিশুসন্তানদের মশারির নিচে রাখতে বাধ্য হচ্ছে তবুও অনেক সময় বেখেয়ালে মশারির ভেতর মশা ঢুকে তাদের কামড় দিচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শহরে কয়েক দিনের মধ্যে মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ না করলে অনেক মানুষই ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হবে। বিশেষ করে শিশুদের শিশুদের মশার কামড় থেকে বাঁচাতে অভিভাবকদের বিশেষ সতর্কতা জরুরি, কারণ শিশুরা হাত-পা নড়াতে পারে না বিধায় সহজেই মশার কামড়ের শিকার হয়। ফলে এদের মশাবাহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অভিভাবকদের উচিত তাদের ছোট ছোট শিশুদের এ সময় মশার হাত থেকে রক্ষার জন্য সবসময় মশারির মধ্যে সুরক্ষিত রাখা। অন্যদিকে বাসার চারদিকে সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে এবং কোনো জায়গায় পানি দীর্ঘদিন জমে আছে কিনা তা ভালো করে দেখতে হবে। যদি পানি জমে থাকে তাহলে তা অবশ্যই ফেলে দিতে হবে। এর বাইরে সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিদের মশার উৎপত্তিস্থলগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং দুয়েক দিন পরপরই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় কিছু জায়গা মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে আবার কিছু জায়গায় ছিটানো হচ্ছে না। এতে ওষুধ না ছিটানো জায়গাগুলোতে মশা খুব বেশি বেপরোয়া হয়ে যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন জায়গা যে হারে মশার উপদ্রব বেড়েছে তাতে করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নিলে মশা থেকে রক্ষা পাওয়া বেশ দুষ্কর হবে কারণ শহরের নালা, ডোবাগুলোতে এত বেশি মশা যে তা নিধন না করলে কোনো কাজ হবে না। আমরা প্রত্যাশা করব নগরপিতা খুব দ্রুত মশা নিধনের বিষয়টি দেখভাল করবেন এবং নগরবাসীকে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাবেন।

রতন কুমার তুরী : শিক্ষক ও লেখক, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়