শহীদ মিনারে লাখো মানুষের ঢল : একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

আগের সংবাদ

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জোর : হালনাগাদ তথ্য নেই দেড় লাখ বৈধ অস্ত্রের, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা জরুরি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আসছে সামনে পবিত্র রমজান মাস। মাসটিতে সাধারণত রমজান সম্পর্কিত বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা বাজারে বেশি থাকে। আর এই সুযোগে রমজানকে কেন্দ্র করেই অসাধু ব্যবসায়ী আর সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। ফলে বাজারও অস্থির হতে থাকে। এমনিতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আমাদের দেশসহ বেশকিছু দেশে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বেশ আগে। দফায় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য ওঠানামা করার ফলে আমাদের দেশে কিছু কিছু দ্রব্যের মূল্য দ্বিগুণ হয়েছে। মাঝেমাঝে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমলেও আমাদের দেশে ওই সেক্টরে ভর্তুকি দেয়ার কারণে তা প্রভাব পড়ে না। বর্তমান সময়ে কিছু কিছু দ্রব্যের মূল্য অসাধু ব্যবসায়ীরা যুদ্ধের উছিলা দিয়ে বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরো জোরদার করা জরুরি।
এমনিতেই মানুষ যে রুজিরোজগার হচ্ছে তা দিয়ে ভালো করে জীবনযাপন করতে সক্ষম হচ্ছে না। তারপর আবার দফায় দফায় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি তাদের জীবনকে কষ্টকর করে তুলেছে। আমরা অতীতেও লক্ষ্য করেছি পবিত্র রমজান এলেই পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, মসলা, আদা, কাঁচামরিচ, মাছ, মাংস, আটা, ময়দা, সুজি ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্য কীভাবে জানি আপনাআপনি বেড়ে যায়। অথচ রমজান আসার আগ পর্যন্ত এসব দ্রব্যের দাম ঠিক থাকে। এবারো এর ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ ইতোমধ্যেই মাছ, মাংস এবং ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এমনিতেই অনেক আগেই বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্য বেড়ে আছে, যা আর কমেনি। ফলে দেশের গরিব মানুষ খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। এরপরও যদি এ রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে দাম বাড়ে তাহলে দেশের দারিদ্র্য মানুষদের না খেয়ে থাকা কিংবা আধপেটা খেয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এমতাবস্থায় সরকারের নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রমজান মাস আসার আগেই সিন্ডিকেট এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। এখন বাজার মনিটরিং জোরদার করা জরুরি কারণ। ইতোমধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী গুদামজাত করতে শুরু করেছে। এসব দ্রব্যসামগ্রী যাতে তারা কোনো অবস্থাতেই রমজানে বেশি দামে বিক্রি করতে না পারে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নজর রাখতে হবে। এ সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম কমাতে হলে সরকারকে কিছু কিছু দ্রব্যের ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে। তা করতে না পারলে প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক একেবারে কমিয়ে দ্রব্যগুলোর মূল্য ক্রেতাসাধারণের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশেষ করে দেশের গরিব মানুষদের কথা চিন্তা করে সরকারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর দাম যে কোনো মূল্যে কমাতে হবে। এক্ষেত্রে টিসিবির পণ্যবাহী গাড়িগুলোর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ানো উচিত। কারণ এত কম টিসিবির গাড়ি দিয়ে গরিবদের কমমূল্যের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার উদ্যোগটি যথোপযুক্ত নয়। এ গাড়ি থেকে পণ্য কিনতে লম্বা লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে করে এসব দ্রব্যসামগ্রী কেউ পায় আবার কেউ পায় না। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে পণ্যগুলোর মূল্যবৃদ্ধির কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গরিব মানুষেরাই এর জাঁতাকলে পিষ্ট হয়। কারণ এসব মানুষের আয় কম বলে এদের দৈনিক খাদ্যসূচিতে সব খাবারেরই টান পড়তে শুরু করে, যার ফলে এদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে সঙ্গে নিম্ন-মধ্যবিত্ত আর মধ্যবিত্তরা এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ঋণের জালে আটকা পড়ে। আমরা রমজান আসার আগেই বাজার মনিটরিং সেলকে বারবার বাজার তদারকির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি। আর ইতোমধ্যে যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে সেসব দ্রব্যসামগ্রীর দাম কীভাবে কমানো যায় তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি। মূলত বারবার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি সরকারকে অবশ্যই লাগাম টানতে হবে, না হয় দ্রব্যগুলোর এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের গরিব মানুষ না খেয়ে কিংবা আধপেটা খেয়ে জীবনযাপন করে দিন কাটাবে। আমরা প্রত্যাশা করব সরকার অচিরেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টানবে এবং বাজার মনিটরিং জোরদার করার মাধ্যমে জনগণের পাশে দাঁড়াবে।

রতন কুমার তুরী : শিক্ষক ও লেখক, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়