উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

মাদারগঞ্জে ফসলি জমির মাটি সাবাড় করছে ইটভাটা : পুড়ছে বনের কাঠ, ট্রাক্টরে নষ্ট হচ্ছে সড়ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : মাদারগঞ্জে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটের ভাটায়। ভাটার মালিকদের সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ী কিছু দালালের যোগসাজশ রয়েছে। ওই দালালরা জমির মালিকদের লোভ লালসা দেখিয়ে রাতের আঁধারে ভ্যাকু মেশিনের মাধ্যমে শতাধিক ট্রাক্টর দিয়ে রাতদিন ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছাড়াই শ্রেণি পরিবর্তন করে ফসলি জমি পুকুর ও জলাশয়ে পরিণত হওয়ায় দিন দিন আবাদি জমি কমে যাচ্ছে।
অপরদিকে মাটি বহনের কাজে নিয়োজিত বৈধ ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলের কারণে উপজেলার পাকা সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভাটাগুলোতে পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ।
জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলায় নিয়ম না মেনে ফসলি জমির মাঝখানে নিবন্ধনবিহীন ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এসব ভাটায় আবার বনের গাছ কেটে ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন বনের কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশের চরম ক্ষতি করছে অন্যদিকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ। জানা যায়, ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করার কথা কয়লা। কিন্তু লোক দেখানো কিছু কয়লা ভাটার পাশে রাখা হলেও এর আড়ালে ইট পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ দিয়ে। উপজেলার বেশ কয়েকটি ভাটায় চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি হিসেবে বিপুল পরিমাণ বনের কাঠ জোগার করা হয়েছে যা আইনত নিষিদ্ধ। ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনায় সরকারের নির্দেশনা মানছেন না বেশির ভাগ ইটভাটার মালিকরা। এই উপজেলার অধিকাংশ ভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ১৯৮৯ সালের ইটপোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন(সংশোধিত-২০১৩) অনুযায়ী সংরক্ষিত আবাদি জমি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও কোনো কোনো এলাকায় আবাদি জমিনের মাঝখানে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। আইনের কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি, এমন কি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো ছাড়পত্র নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। ইটভাটার আশপাশে ফসলি জমিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফসলের আবাদ। ইটভাটার কালো ধুঁয়ায় বাতাসে বেড়েই চলছে বিষাক্ত কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্যাস। সেই সঙ্গে ধুলাবালির কারণে এসব ক্ষেতের ফসল উৎপাদনে ব্যাপক আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। দিনে রাতে ফসলি জমির মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় আনা-নেয়া করায় গ্রামের পাকা রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ফসলি জমির মাটি কেটে শুধু জমি নষ্ট করা হচ্ছে তা নয়, গ্রামের ভেতর দিয়ে বেপরোয়াভাবে মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলাচলের ফলে ধুলায় বসত বাড়িতেও থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এতে গ্রামের পাকা সড়কগুলো দিন দিন ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
চরপাকেরদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, বেপরোয়াভাবে নিষিদ্ধ ট্রাক্টর চলাচলের কারণে নতুন নির্মিত পাকা রাস্তাগুলো বেশি নষ্ট হচ্ছে। এর বিষয়ে উপজেলা মাসিক সভায় কয়েক বার আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ট্রাক্টর চলাচল আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইলিশায় রিছিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইটের ভাটায় কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়